শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের দখলে এখনো রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ

আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের দখলে এখনো রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে রাজনীতি, প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত থেকে শুরু পাড়া মহল্লা পর্যন্ত। পাল্টে যাচ্ছে চিরচেনা রূপ। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী ঘরনার সুবিধা ভোগী কর্মকর্তাগণ রাতারাতি দল পরিবর্তনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। দখলে রেখেছেন রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ।

আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের বাজেট পায় রেলওয়ে। যার ৯০ শতাংশ নতুন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই অর্থ তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী এমপিদের লুটপাটের সহযোগী হিসেবে ছিলেন রেলের আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাগণ। এদের প্রভাবে রেলের অন্য ঘরানার বাকি কর্মকর্তারা ছিলেন একপ্রকার অসহায়, বঞ্চিত ও নির্যাতিত।

রেলের আওয়ামী ঘরানার কিছু কর্মকর্তাগণের প্রভাব ও দখল কেমন ছিল তার কিছু অংশ তুলে ধরা হল-

রেলওয়েতে আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাভোগী কর্মকর্তা হলেন তাবাসসুম বিনতে ইসলাম- যুগ্ম মহাপরিচালক (মেকানিক), রেলভবন। তাবাসসুম প্রায় ১৬ জন সিনিয়র কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন। তার এই পদে আসার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এছাড়াও শামসুজ্জামান যেসময় রেলের মহাপরিচালক ছিলেন তখন তাবাসসুম ছিলেন রেলের অলিখিত রানী তথা রেল রাণী। তৎকালীন সময় রেলমন্ত্রী সুজন ও ডিজি শামসুজ্জামান তাবাসসুমকে রেলের বদলি,পদোন্নতি থেকে শুরু করে টেন্ডার বাণিজ্য পর্যন্ত সকল কাজের ব্লাংক চেক দেওয়ার মত ক্ষমতা দিয়েছিলেন।

তাবাসসুম বিনতে ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

তাবাসসুমের এই ক্ষমতার উৎস ছিল তার স্বামী প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন হায়দার- যুগ্ম সচিব হিসেবে বর্তমানে পাসপোর্ট অধিদপ্তরে আছেন। জসিম একসময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক ছিলেন এবং ২০০৯ পরবর্তী প্রতিটি অবৈধ নির্বাচনে আওয়ামী লাঠিয়াল হিসেবে কাজ করেন। জসিমের ভয়ে রেলের সিনিয়র কর্মকর্তারাও তাকে ম্যাডাম বলে সম্বোধন করেন। এছাড়াও তাবাসসুম গত ১৫ বছরে প্রায় ৪০ টির অধিক দেশে সরকারি ভ্রমণ করেন। তার দেশে বিদেশে আছে শতকোটির অধিক সম্পদ । জসিম উদ্দিনের প্রভাবে সম্প্রতি তাবাসসুম তার সিনিয়র সকল কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে ৩ নং স্কেলে পদোন্নতি নেন। সম্প্রতি তাবাসসুম ২ নং স্কেলের পদে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তার চেয়ে ৯ ব্যাচ সিনিয়র অত্যন্ত মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত অতিরিক্ত মহাপরিচালক(রোলিং স্টক) পার্থ সরকারকে স্থায়ী বরখাস্ত করার জন্য সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও কয়েকজন সদস্যকে তার স্বামী জসিম ও মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব নিশাত রসুলকে দ্বারা ম্যানেজ করেন।

আওয়ামী ঘরনার ও তাবাসসুম সিন্ডিকেটের একজন প্রভাবশালী সদস্য এবং সরঞ্জাম বিভাগের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় লুটেরা হলেন আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি ছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী নরুল ইসলাম সুজনের ভাগ্নি জামাই। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর নুরুল ইসলাম সুজন রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার দিনে আনোয়ার চট্টগ্রামে প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে ৫ মণ মিষ্টি বিতরণ করেন। শ্বশুর মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে আনোয়ার সবসময় একই সাথে ২/৩ টা পদের দায়িত্ব পালন করতেন।

আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এখনো চট্টগ্রামে তিনি পরিচালক ইনভেন্ট্রি কন্ট্রোলের পাশাপাশি সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক/পূর্ব হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। আনোয়ার প্রায় ১৫ বছর যাবত চট্টগ্রাম সরঞ্জাম বিভাগে বিভিন্ন লাভজনক পদে কর্মরত আছেন। এই দীর্ঘ সময়ে একই সময়ে ২/৩ টা পদের দায়িত্ব পালন করায় তিনি কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। সম্প্রতি সরঞ্জাম বিভাগের সবচেয়ে বড় পদ প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক, পাহাড়তলী পদে পদোন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জানা যাচ্ছে।

তাবাসসুম সিন্ডিকেটের সরকার দলীয় আরও একজন কর্মকর্তা হচ্ছেন প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা সলিমুল্লাহ বাহার। বিগত সরকার রেলওয়েতে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। এই বিশাল অঙ্কের টাকায় রেলওয়েতে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা পরিকল্পনা দপ্তরে প্রায় ১৫ বছর ধরে কর্মরত আছেন।রেলওয়েতে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের টাকা হরিলুটের জন্য অবসরপ্রাপ্ত এবং চাকুরীরত কর্মকর্তাদের একটা সিন্ডিকেট আছে। প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এই সিন্ডিকেটের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তার কাজই হল এই সিন্ডিকেটের ইন্টারেস্ট পূরণে সর্বদা নিজেকে পূর্ণভাবে নিয়োজিত করা। তার সূক্ষ্ণ পরিকল্পনায় প্রকল্পের টাকা লুটের নানা কৌশলে তিনি সদা ব্যস্ত। এই সিন্ডিকেটের মূল লক্ষ্যই থাকে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো। কারণ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো মানেই প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো, আর ব্যয় বাড়ানো মানেই হাজার কোটি টাকায় সিন্ডিকেটের পকেট ভারী।

সলিমুল্লাহ বাহার। ছবি: সংগৃহীত

তাছাড়াও প্রকল্পের টাকা লুটের আর একটা ফাঁদ হলো ভেরিয়েশন ওর্ডার এবং ইনিয়ে বিনিয়ে নতুন আইটেম অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধিত ডিপিপি প্রণয়ন। ফলে প্রকল্পের খরচ বহুগুণ বেড়ে যায়। রেলের কর্মকর্তারাই নাকি প্রকল্পের কাজ শেষ হোক এ বিষয়ে আন্তরিক না। যার কারণে রেলওয়ের কোন প্রকল্পই ১৫ বছরের আগে শেষ হয় না অর্থাৎ রেলের কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেটের প্রত্যক্ষ মদদে প্রকল্প শেষ হয়েও শেষ হয় না। সিন্ডিকেটের চাহিদার প্রধান উদ্দেশ্য থাকে দেশের কাজে লাগুক বা না লাগুক, যেকোনো কৌশলে রাষ্ট্রের টাকা লুটপাট করার নতুন নতুন ফাঁদ তৈরি করা । এই টাকার ভাগ সরকারের সব মহলে জেত। যার প্রধান দায়িত্বে ছিলেন রেলের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা সলিমুল্লাহ বাহার। এছাড়াও রেলভবনে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় গাড়িচালক নিয়োগে তিনি বড় ধরনের দুর্নীতি করেন বাহার। তাছাড়া প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা তার নিজের সেবার পরিকল্পনায় অনেক ব্যস্ত। তিনি নিজে ২/৩টা পাজেরো স্পোর্টস গাড়ি ব্যবহার করে দেশের টাকা লুট করছেন।

অত্যন্ত কঠোর আওয়ামী ঘরানার আরও একজন কর্মকর্তা হলেন আবু জাফর মিয়া। ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানায় বাড়ি হওয়ায় তিনি ক্ষমতার প্রভাব দেখাতে শুরু করেন। প্রধান প্রকৌশলী(পূর্ব) চট্টগ্রাম হিসেবে পদায়িত হওয়ার পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নেন। তিনি তার এই লুটপাট জন্য চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতার সহায়তা নেন। তিনি কোন পূর্ত কাজের টেন্ডার আহ্বান করার পরে সকল টেন্ডারের ইষ্টীমেট বা প্রাক্কলন তার পার্টনার ঐ শীর্ষ নেতার কে বলে দিতেন। এর ফলে ঐ নেতার তার মনোনীত ঠিকাদার ছাড়া অন্য কেউ এই টেন্ডারে অংশ নিত না বা নেওয়ার সাহস পেত না।

আবু জাফর মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের অত্যন্ত বিশ্বস্ত কর্মকর্তা হওয়ায় তাকে ভারতের পূর্বাঞ্চলে করিডোর হিসেবে ব্যবহারের জন্য নির্মিত আখাউড়া -আগরতলা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। জানা যায় যে,শেখ হাসিনার সাথে জাফর যতবার দেখা করতেন ততবারই তার পদধূলি মাথায় নিতেন। তার পদে কোন কর্মকর্তা আসার চিন্তা করলেই তাকে তিনি বিএনপি জামাত হিসেবে চিহ্নিত করে তার পদায়ন ঠেকিয়ে দিতেন। এই কর্মকর্তা গেট কিপার নিয়োগে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। নিজের এলাকায় শত শত বিঘা জমি ক্রয়ের পাশাপাশি তিনি অবৈধ বড় একটা অংশ বিদেশে পাচার করেছেন বলে তথ্য আছে।

আওয়ামী ঘরানার আরও একজন কর্মকর্তা হলেন তাপস কুমার দাস যিনি বর্তমানে প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী/পূর্ব, চট্টগ্রাম হিসেবে কর্মরত আছেন। এই কর্মকর্তা চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের এক নেতা বাবরের ছত্রছায়ায় ব্যাপাক লুটপাট করেছেন।

তাপস কুমার দাস। ছবি: সংগৃহীত

তাপসের বাড়ি বাগেরহাট হওয়ায় তিনি হাসিনার নিকটাত্মীয় শেখ হেলাল ও শেখ জুয়েলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ফলে রেলের বিভিন্ন প্রাইজ পোস্টিং পেতে তাকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি এবং এসব পোস্টে পদায়িত হয়ে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। তার এই লুটপাটের টাকা তিনি প্রতিবেশী ইন্ডিয়াতে পাচার করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায় যে তাপস দাস অত্যন্ত গরীব ঘরের ছেলে ছিলেন। খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরে তার পড়াশোনা চালানোর মত কোন টাকা তার ছিল না। বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক এই তাপস।

এই পাঁচ কর্মকর্তা ছাড়াও রেলওয়েতে আছে আরও অনেক আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তা। যা আমরা পরবর্তীতে প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করবো।

Header Ad
Header Ad

গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের গুজরাট রাজ্যে অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানে এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতভর আহমেদাবাদ ও সুরাট শহরে যৌথ বাহিনীর এই অভিযান চালানো হয়। শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভারতের বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে ইন্ডিয়া টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভির নির্দেশে পরিচালিত এই অভিযানে আহমেদাবাদ থেকে প্রায় ৮৯০ জন এবং সুরাট থেকে ১৩৪ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে পুরুষ, নারী ও শিশুরাও রয়েছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি সতর্ক করে বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে এবং তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সুরাট পুলিশের যুগ্ম কমিশনার রঘবেন্দ্র ভাটস জানান, আটককৃতদের পরিচয় যাচাইয়ের কাজ চলছে এবং যাচাই শেষে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

গুজরাট সরকারের এই অভিযান দেশজুড়ে অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলাবাসীর গলার কাঁটা মালঞ্চি-নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধটি। গোনা ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় আশির দশকে নির্মিত বেড়িবাঁধটি বছরের পর বছর স্থায়ী ভাবে সংস্কার কিংবা মেরামত না করার কারণে বাঁধটির প্রায় ৬ কিলোমিটার অংশই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় ছিলো।

গত ২০২২সালে প্রথমবারের মতো বাঁধের অত্যন্ত ঝূঁকিপূর্ণ কিছু অংশ মেরামত করা হলেও বর্তমানে পুরো অংশটিই খুবই নাজুক। অবশেষে সেই নাজুক অংশ মেরামতের কাজ শুরু করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ।

সুত্রে জানা, পূর্বে বর্ষা মৌসুমে ছোট যমুনা নদীতে যখনই পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঝূঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হতো তখনই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা ছোটাছুটি শুরু করতো আর যখন নদীতে পানি থাকে না তখন বাঁধটি মেরামত কিংবা সংস্কার করার কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করা হতো না। একাধিকবার ঝূঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং হাজার হাজার হেক্টর জমির ধানসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে। এমন অবস্থা থেকে মুক্ত হতে জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথ উদ্দ্যোগে বর্ষার আগেই সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রশাসনের এমন জনবান্ধব কর্মকান্ডে স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। অন্তত এবার নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেও বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বন্যা হওয়ার শঙ্কা নিয়ে রাত কাটাতে হবে না বলে জানিয়েছে বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসরত বাসিন্দারা।

রাণীনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ( পিআইও) মো. নজরুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় ওই বেড়িবাঁধের কৃষ্ণপুর আলাউদ্দিনের জমি থেকে বেলালের জমি পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ ফিট আর বেলালের জমি থেকে রফিকুলের জমি অভিমুখে ৪২৬ ফিট মোট ৮২৬ ফিট বাঁধের বিপরীত অংশে মাটি দিয়ে প্রশস্তকরণ কাজ শুরু করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে এই সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। পূর্বে ওই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের উপরের বিভিন্ন অংশের প্রস্থ ছিলো গড়ে ৬ থেকে ১০ ফিটের মধ্যে যা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙ্গে যাওয়ার ভয় ছিলো। কিন্তু বর্তমানে সংস্কারের মাধ্যমে মাটি দিয়ে বাঁধের উপরের অংশের প্রস্থ ২৪ ফিট আর নিচের অংশের প্রস্থ করা হচ্ছে ৫০ ফিট যা নদীতে বিপদসীমার উপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হলে ভেঙ্গে যাওয়ার কোন ভয় থাকবে না। সার্বক্ষণিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে সংস্কার কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন। বেড়িবাঁধের এমন সম্প্রসারণ কাজের কারণে দুই উপজেলার মানুষরা বাঁধ ভেঙ্গে হঠাৎ সৃষ্টি হওয়া বন্যার কবল থেকে রেহাই পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানান ইতিমধ্যেই কৃষ্ণপুর নামক স্থানে ছোট যমুনা নদীর বাম তীরে ভাঙ্গন কবলিত স্থানে ২৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ব্যয় জিও বস্তা ডাম্পিং ও প্লেসিং এর মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে অস্থায়ী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্মিলিত ভাবে বেড়িবাঁধের প্রশস্তকরণ কাজ চলমান রেখেছে। আশা রাখি এমন কাজে দুই উপজেলার লাখ লাখ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী ভাবে সুফল পাবেন।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান জানান প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষনের কারণে ছোট যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই বাঁধের ঝ’কিপূর্ণ স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতো। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের যে কোন স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে রাণীনগর ও আত্রাই এই দুই উপজেলার শতাধিক গ্রামসহ হাজার হাজার হেক্টর ফসলের জমি তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে থাকতো। বিভিন্ন সময় ছোট ছোট বরাদ্দ দিয়ে অস্থায়ী ভাবে বাঁধের মেরামত করা হলেও সেটি দীর্ঘস্থায়ী ছিলো না। ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই প্রতিবছরই বাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ অংশ মেরামতের প্রয়োজন দেখা দিতো। এমন সমস্যার স্থায়ী সমাধাণের লক্ষ্যে সম্প্রতি ঝ’কিপূর্ণ বাঁধটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক বর্ষা মৌসুমের আগেই বেড়িবাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ অংশ স্থায়ী ভাবে মেরামত ও সংস্কার করার নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক চলতি মাসের শুরু থেকে বেড়িবাঁধের নদীর বিপরীত পাশে মাটি দিয়ে প্রশস্তকরণ কাজ শুরু করা হয়েছে।

এই কাজের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধের নদীর ভিতরের অংশে জিও বস্তা ডাম্পিং ও প্লেসিং এর মাধ্যমে সংস্কার করছে যাতে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেও বাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ কোন অংশ ভেঙ্গে যাওয়ার শঙ্কা থাকবে না।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান, যে কোন উন্নয়ন মূলক কাজে স্বচ্ছ ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা থাকা জরুরী। ছোট যমুনা নদীর মালঞ্চি-নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধটি শুধু দুই উপজেলার নয় পুরো জেলার জন্যও গলার কাটা ছিলো। সেই বাঁধে বার বার অর্থ খরচ না করে এবার জরুরী অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার আগেই স্থায়ী ভাবে মেরামতের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চলমান সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলে এবার আর বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলের মানুষদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে না। ধারাবাহিক ভাবে এই বাঁধসহ জেলার অন্যান্য উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা নিয়ে স্থায়ী ভাবে সংস্কার/মেরামত করা হবে বলেও তিনি জানান।

Header Ad
Header Ad

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

বিভিন্ন স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্টেশন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার মেট্রোরেল চালু করা হবে বলে তারা আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫