শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

পারাপার

আশির দশক। অক্টোবরের এক বিষণ্ণ অপরাহ্ণ বেলায় ভিক্টোরিয়া পার্কে কংক্রিটের বেঞ্চের উপর বসে ভাবছিলাম অনেক কথা। পার্কে তখন তেমন জনসমাগম ছিল না। বিচ্ছিন্নভাবে কেউ কেউ বসে গল্প করছিল। কেউ কেউ বাদাম, চানাচুর ও এটা সেটা খাচ্ছিল। পার্কের এক গেট দিয়ে ঢুকে অন্য গেট দিয়ে কেউ কেউ হেঁটে বের হয়ে যাচ্ছিল। আমি একাকী বসে আনমনে একটার পর একটা সিগারেট খাচ্ছিলাম। ধূয়াগুলো উড়ে যাচ্ছিল সেদিনের ম্লান বাতাসে।

কুমু আজ চলে গেল। আজও ওকে খেয়া নৌকায় করে বুড়িগঙ্গার ওপারে নামিয়ে দিয়ে এলাম। ওপারের ঘাট থেকে ওর কাছে থেকে যখন বিদায় নিয়ে চলে আসছিলাম, তখন কুমু আমার একটি হাত টেনে ধরে। জল টলমল চোখে চেয়ে থেকে বলে- 'কথা দাও, বেশি সিগারেট খাবে না। সময়মত খাবে। রাত জাগবে না। আমি চলে যাচ্ছি , তার মানে এই না- তোমার সাথে আর কখনও কোনও দিন দেখা হবে না! তুমি আমার বন্ধু। বন্ধু হয়েই থাকবে চিরকাল।'
কুমু ওয়াইজঘাটে একটি ললিতকলা একাডেমিতে গীটার বাজানো শিখত। আমিও শিখতাম। ওখানেই ওর সাথে পরিচয়। ও আসত বুড়িগঙ্গার ওপারে খেজুরবাগ থেকে। গীটারের তারে আঙুল ছোঁয়ার সময় চুপিচুপি ওকে দেখতাম। মেয়েটির গায়ের রং গৌরীয়। চন্দ্রমুখ। টিকালো নাক। মাথাভর্তি কার্ল কালো চুল। নয়নতারার মতো বিনম্র চোখ। বারান্দায় দাঁড়িয়ে প্রথম একদিন ওর সাথে কথা হলো। কথা বলতে বলতে দুজন দুজনকে জানলাম। তারপর দুজন বন্ধু হয়ে উঠি।

গত একবছর প্রতি শুক্রবার শনিবার ছুটির পরে ওয়াইজ ঘাট থেকে খেয়া নৌকায় কুমুর সাথে আমিও চলে যেতাম ওপারে। ওপারের ঘাটে ওকে পৌঁছে দিয়ে আমি আবার ফিরে আসতাম এপারে। নদী পার হওয়ার সময় ওর সাথে আমার যত কথা হতো। নদী পারাপারের সময়ই ওর সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠি। নৌকায় পাটাতনের উপর দুজন পাশাপাশি বসতাম। কথা বলতাম খুব কাছে থেকে। চুপচাপ বসে বসে দেখতাম নদীতে ভেসে যাওয়া অজস্র নৌকার সারি। দেখতাম জলের উপর আকাশের ছায়া। শুনতাম জলের কলধ্বনি।

কত স্মৃতি মস্তিষ্কের শিরায় তোলপাড় করে। একবার নদী পার হওয়ার সময় হঠাৎ আকাশ মেঘে কালো হয়ে আসে। ঝমঝম করে বৃষ্টি নামতে শুরু করে। ভিজে চুপসে যাচ্ছিলাম দুজনেই। আমার ফুসফুসে প্রদাহ ছিল। প্রায়ই খুসখুস করে কাশতাম। ওর সামনে সিগারেট খেতে পারতাম না। ঠোঁট থেকে সিগারেট কেড়ে নিয়ে ফেলে দিত। কুমু সেই বৃষ্টির সময় ওর বুকের খাঁজে আমার মাথা লুকিয়ে নিয়ে ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখে। যেন আমার ঠাণ্ডা না লাগে। কুমুকে সেই মুহূর্তে অপার্থিব সুন্দর লাগছিল। কিছু স্পর্শ একটুও পাপের মনে হয় না। কোনো অলৌকিক দেবীর পুণ্যের ছোঁয়ার মতো মনে হয়।

কুমুর একজন প্রেমিক ছিল। তারপরও ও মনে হয় আমাকে ভালোবেসে ফেলেছিল। কেমন যেন জটিল মনে হতো অনেক কিছু। একবার সন্ধ্যার প্রায়ান্ধকারে বুড়িগঙ্গার কূলে দাঁড়িয়ে কুমু আমাকে বলেছিল - মানুষের দেহমন কেন যে একটা হলো। দুটো কেন হলো না? দুটো হলে একটা তোমাকে দিয়ে দিতাম আর একটা আমার ভাবি স্বামীকে দিতাম।

আমি কৌতুকছলে বলেছিলাম - 'তোমার যে একটা দেহ মন আছে সেটিই নাহয় আামাকে দিয়ে দাও।'
- তুমি এত ভালো ছেলে তোমাকে আমি ঠকাতে চাই না। কত মানুষ আছে শুধু আনন্দের জন্য মেয়েমানুষের শরীর খোঁজে। তুমি তো সেই রকম নও। শুধু আনন্দ করার জন্য যদি কখনও আমায় তোমার প্রয়োজন হয়, তবে তুমি আমাকে স্মরণ কোরো।
- না, প্রয়োজন হবে না। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি কুমু।
একবার ক্লাস ছুটির পর, আমি আর কুমু যাব নবাববাড়ির গেটে। কুমু কিছু কেনাকাটা করবে। ফুটপাতের উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিলাম ইসলামপুর রোডের দিকে। দেখি - গঙ্গাজলির কয়েকটি মেয়ে চোলি পরে সেজেগুজে আমাদের সামনে দিয়ে খিলখিল করে হাসতে হাসতে স্টার সিনেমা হলের দিকে চলে যাচ্ছে। আমি ওদেরকে দেখিয়ে কুমুকে বলি- পয়সা দিলে ওরা দেহের আনন্দ দেয়।' কুমু বলছিল, তুমি কখনও ওদের দেহের আনন্দ নেবে না। আমার মাথার দিব্বি রইল।

কুমুর সাথে আমার সম্পর্ক একসময় বন্ধু ও প্রেমিকার মাঝামাঝি পর্যায়ে এসে রূপ নেয়। কিন্তু চির আক্ষেপ- স্ত্রী আর সে হলো না।
আজ ছিল শেষ পারাপার। আমাদের গীটার শেখার কোর্স শেষ হয়ে গেছে আরও দুই দিন আগে। কুমু আর আসবে না একাডেমিতে। ওকে রেখে যখন নৌকায় উঠি, নৌকা যেন মাঝ নদীতে থেমে যাচ্ছিল। মাঝির বৈঠা যেন চলছিল না ।
নৈর্ব্যক্তিক মনে হচ্ছিল নদীর জল। কেমন যেন বিধুর লাগছিল নিজেকে। নদী পার হওয়ার সময় আর কখনও নামতে দেখব না সন্ধ্যা। দেখা হবে না অস্তবেলার লাল আবীর মাখা সূর্য। বুড়িগঙ্গার জল নীরবে ছলছল করবে। ভেঁপু বাজিয়ে লঞ্চ চলাচল করবে। ঢেউ উঠবে। ঢেউ ভাঙবে। ঢেউ মিলিয়ে যাবে।

পার্কের লোকজন আস্তে আস্তে কখন সবাই চলে গেছে জানি না। আমি তখনও সিগারেট খেয়েই যাচ্ছিলাম। লাইটপোস্টের বাতির চারপাশে উইপোকা ভিনভিন করছিল। আধো আঁধারে একটা মধ্যবয়সী লোক আমার দিকে এগিয়ে আসে। কাছে এসে বলে - ছোট ভাই তুমি কেমন আছ?
- ভালো আছি।
- মনে হয় তুমি ভালো নেই। অনেকক্ষণ ধরে তোমাকে আমি অনুসরণ করছি। তুমি একটার পর একটা সিগারেট খেয়ে যাচ্ছ। এত অল্প বয়স তোমার , তুমি নবীন। একদম তরুণ প্রাণ। শরীর খারাপ হয়ে যাবে!
- খারাপ হবে না। এমনই খাচ্ছিলাম।
- নাহ্, এমনই খাচ্ছ না। তোমাকে দেখে দেবদাসের মতো লাগছে। তা, আমার সাথে একজায়গায় তুমি যাবে?
- কোথায়?
- জিন্দাবাহার তৃতীয় লেন।
- ওখানে কে আছে?
- লখনৌর বেগমজানের বংশদ্ভূত অপূর্ব সুন্দর নাজমুন বাঈ। ভৈরবী রাগে গান ধরে সে ‘রসিয়া তোরি আখিয়ারে, জিয়া লাল চায়’ ঠুংরী ঠাটের গানের এ কলিতে জিন্দা বাহার গলির ওর জলসা কানায় কানায় ভরে উঠে।
আমি বললাম, টাকা দিতে হবে?
- হুম। টাকা দিতে হয়।
লোকটাকে বললাম, আমি ছাত্র মানুষ। আমার কাছে টাকা নেই।
লোকটি হতাশ হয়ে চলে গেল।
আমি আরও একটি সিগারেট ধরাই৷ কুমুর কথা মনে পড়ল আবার। ও আমায় বলেছিল-- 'তুমি কখনও যদি দেহের আনন্দ চাও তবে আমার দেহ থেকে নিও। ঐসব মেয়েদের থেকে নেবে না।'

সেই সন্ধ্যারাতে পার্ক থেকে বেরিয়ে আসছিলাম নীরব পদচিহ্ন ফেলে। পায়ের নিচে কংক্রিট না ঘাস, না মাটি- বুঝতে পারছিলাম না। ভাবছিলাম কেবল, আমার দিন কাটবে কুমুরও দিন কাটবে। যতদিন জীবন আছে ততদিন এই জীবন চলবেই। একটি ক্ষীণ আশা জাগিয়ে হাঁটছিলাম নিবিড় আলো আঁধারে- আর একবার কী কুমুকে সাথে নিয়ে দেখতে পাবো না নদীতে নৌকায় ভেসে সন্ধ্যার সূর্যাস্ত! ডানা ঝাপটে কুলায় ফিরে যাবে পাখি। অস্ত দিগন্তে মিলিয়ে যেত জীবনের সব অপ্রাপ্তির বেদনা চিহ্ন।

 

ডিএসএস/ 
 

Header Ad
Header Ad

গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের গুজরাট রাজ্যে অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানে এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতভর আহমেদাবাদ ও সুরাট শহরে যৌথ বাহিনীর এই অভিযান চালানো হয়। শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভারতের বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে ইন্ডিয়া টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভির নির্দেশে পরিচালিত এই অভিযানে আহমেদাবাদ থেকে প্রায় ৮৯০ জন এবং সুরাট থেকে ১৩৪ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে পুরুষ, নারী ও শিশুরাও রয়েছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি সতর্ক করে বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে এবং তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সুরাট পুলিশের যুগ্ম কমিশনার রঘবেন্দ্র ভাটস জানান, আটককৃতদের পরিচয় যাচাইয়ের কাজ চলছে এবং যাচাই শেষে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

গুজরাট সরকারের এই অভিযান দেশজুড়ে অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলাবাসীর গলার কাঁটা মালঞ্চি-নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধটি। গোনা ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় আশির দশকে নির্মিত বেড়িবাঁধটি বছরের পর বছর স্থায়ী ভাবে সংস্কার কিংবা মেরামত না করার কারণে বাঁধটির প্রায় ৬ কিলোমিটার অংশই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় ছিলো।

গত ২০২২সালে প্রথমবারের মতো বাঁধের অত্যন্ত ঝূঁকিপূর্ণ কিছু অংশ মেরামত করা হলেও বর্তমানে পুরো অংশটিই খুবই নাজুক। অবশেষে সেই নাজুক অংশ মেরামতের কাজ শুরু করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ।

সুত্রে জানা, পূর্বে বর্ষা মৌসুমে ছোট যমুনা নদীতে যখনই পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঝূঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হতো তখনই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা ছোটাছুটি শুরু করতো আর যখন নদীতে পানি থাকে না তখন বাঁধটি মেরামত কিংবা সংস্কার করার কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করা হতো না। একাধিকবার ঝূঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং হাজার হাজার হেক্টর জমির ধানসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে। এমন অবস্থা থেকে মুক্ত হতে জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথ উদ্দ্যোগে বর্ষার আগেই সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রশাসনের এমন জনবান্ধব কর্মকান্ডে স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। অন্তত এবার নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেও বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বন্যা হওয়ার শঙ্কা নিয়ে রাত কাটাতে হবে না বলে জানিয়েছে বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসরত বাসিন্দারা।

রাণীনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ( পিআইও) মো. নজরুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় ওই বেড়িবাঁধের কৃষ্ণপুর আলাউদ্দিনের জমি থেকে বেলালের জমি পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ ফিট আর বেলালের জমি থেকে রফিকুলের জমি অভিমুখে ৪২৬ ফিট মোট ৮২৬ ফিট বাঁধের বিপরীত অংশে মাটি দিয়ে প্রশস্তকরণ কাজ শুরু করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে এই সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। পূর্বে ওই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের উপরের বিভিন্ন অংশের প্রস্থ ছিলো গড়ে ৬ থেকে ১০ ফিটের মধ্যে যা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙ্গে যাওয়ার ভয় ছিলো। কিন্তু বর্তমানে সংস্কারের মাধ্যমে মাটি দিয়ে বাঁধের উপরের অংশের প্রস্থ ২৪ ফিট আর নিচের অংশের প্রস্থ করা হচ্ছে ৫০ ফিট যা নদীতে বিপদসীমার উপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হলে ভেঙ্গে যাওয়ার কোন ভয় থাকবে না। সার্বক্ষণিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে সংস্কার কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন। বেড়িবাঁধের এমন সম্প্রসারণ কাজের কারণে দুই উপজেলার মানুষরা বাঁধ ভেঙ্গে হঠাৎ সৃষ্টি হওয়া বন্যার কবল থেকে রেহাই পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানান ইতিমধ্যেই কৃষ্ণপুর নামক স্থানে ছোট যমুনা নদীর বাম তীরে ভাঙ্গন কবলিত স্থানে ২৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ব্যয় জিও বস্তা ডাম্পিং ও প্লেসিং এর মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে অস্থায়ী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্মিলিত ভাবে বেড়িবাঁধের প্রশস্তকরণ কাজ চলমান রেখেছে। আশা রাখি এমন কাজে দুই উপজেলার লাখ লাখ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী ভাবে সুফল পাবেন।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান জানান প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষনের কারণে ছোট যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই বাঁধের ঝ’কিপূর্ণ স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতো। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের যে কোন স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে রাণীনগর ও আত্রাই এই দুই উপজেলার শতাধিক গ্রামসহ হাজার হাজার হেক্টর ফসলের জমি তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে থাকতো। বিভিন্ন সময় ছোট ছোট বরাদ্দ দিয়ে অস্থায়ী ভাবে বাঁধের মেরামত করা হলেও সেটি দীর্ঘস্থায়ী ছিলো না। ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই প্রতিবছরই বাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ অংশ মেরামতের প্রয়োজন দেখা দিতো। এমন সমস্যার স্থায়ী সমাধাণের লক্ষ্যে সম্প্রতি ঝ’কিপূর্ণ বাঁধটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক বর্ষা মৌসুমের আগেই বেড়িবাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ অংশ স্থায়ী ভাবে মেরামত ও সংস্কার করার নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক চলতি মাসের শুরু থেকে বেড়িবাঁধের নদীর বিপরীত পাশে মাটি দিয়ে প্রশস্তকরণ কাজ শুরু করা হয়েছে।

এই কাজের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধের নদীর ভিতরের অংশে জিও বস্তা ডাম্পিং ও প্লেসিং এর মাধ্যমে সংস্কার করছে যাতে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেও বাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ কোন অংশ ভেঙ্গে যাওয়ার শঙ্কা থাকবে না।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান, যে কোন উন্নয়ন মূলক কাজে স্বচ্ছ ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা থাকা জরুরী। ছোট যমুনা নদীর মালঞ্চি-নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধটি শুধু দুই উপজেলার নয় পুরো জেলার জন্যও গলার কাটা ছিলো। সেই বাঁধে বার বার অর্থ খরচ না করে এবার জরুরী অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার আগেই স্থায়ী ভাবে মেরামতের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চলমান সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলে এবার আর বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলের মানুষদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে না। ধারাবাহিক ভাবে এই বাঁধসহ জেলার অন্যান্য উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা নিয়ে স্থায়ী ভাবে সংস্কার/মেরামত করা হবে বলেও তিনি জানান।

Header Ad
Header Ad

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

বিভিন্ন স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্টেশন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার মেট্রোরেল চালু করা হবে বলে তারা আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫