শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

পল্লিতে রবির কিরণ

রবীন্দ্রনাথকে আমরা সাহিত্যপ্রেমীরা ভেবে থাকি তিনি একজন কবি, সাহিত্যিক, লেখক, একজন দার্শনিক। কিন্তু পল্লি উন্নয়ন গবেষক হিসেবে আমি মনে করি রবীন্দ্রনাথ শুধু এক জায়গায় স্থির নন, তিনি পল্লি উন্নয়নের এক আলোকবর্তিকার নাম। তিনি জমিদারের সন্তান হয়েও জমিদারির খোলস ভেঙে গড়ে তুলেছিলেন আরেক প্রজাদরদী গল্পের স্ক্রিপ্ট। চিরায়ত প্রথার খোলস ভেঙে মানবিক প্রজাহিতৈষী জমিদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন সমাজের কাছে। রাশিয়ার চিঠিতে দেখা যায় রবীন্দ্রনাথ এক পল্লি নায়ক। তিনি লিখেছেন, ‘জমির স্বত্ব ন্যায়ত জমিদারের নয়, চাষির’।

নবীন জমিদার রবীন্দ্রনাথ সব শ্রেণির লোককেই আপন করে নিতে পেরেছেন খুব অল্প সময়ে। তাই তো তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তোমাদেরই লোক।’ তিনি অনুভব করেছিলেন, ‘ভিক্ষা দিয়ে মনুষ্যত্ব জাগানো যায় না, তোমাদের ভালো একমাত্র তোমরা নিজেরাই করতে পার। যে কাজ পাঁচজনের উপকারে লাগবে, সে কাজ তোমরা একত্রে মিলেমিশে কর, ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ।’

দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করার জন্য পল্লি উন্নয়নের নানাবিধ কর্মসূচি হাতে নেন তিনি। তিনি জানতেন এজন্য দরকার কৃষি ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন ও বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ। শিলাইদহ কুঠিবাড়ির ৮০ বিঘা জমি দেশের প্রথম কৃষি গবেষণাগার হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। ১৯০৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিদেশ থেকে ফিরে শুরু করলেন বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ, সার, পাম্প ইত্যাদির ব্যবস্থা। রবীন্দ্রনাথ ক্যানিং এ ডেনিয়াল হ্যামিলটনের কৃষিক্ষেত্র ও গবেষণাগার দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে প্রথম ১৯১০ সালে সেচ কাজে পাম্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করেন। জমি উর্বরের জন্য জেলেদের কাছ থেকে নৌকা বোঝাই ইলিশ মাছ সস্তায় কিনে নিতেন। চুন দিয়ে মাটিতে চাপা দিয়ে জৈব সার তৈরি করতেন। ট্রাক্টর এর মাধ্যমে শিলাইদহে চাষাবাদ শুরু করেন- যা এনেছিলেন রাশিয়া থেকে।

রবীন্দ্রনাথ অনেকটা সময় পল্লি অঞ্চলে থেকেছেন, অবলোকন করেছেন গরিব প্রজা কৃষকের উপর ঋণের বোঝা। জমিদারি করতে গিয়ে স্পষ্ট দেখেছেন মহাজনের উচ্চ সুদের ঋণ গরিব কৃষককে কীভাবে আরও দরিদ্র করছে সর্বস্বান্ত করছে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ঋণ ব্যবস্থায় এখনই পরিবর্তন করতে না পারলে পল্লি উন্নয়নে তার সব উদ্যোগই পরাস্ত হবে।

গ্রামের দরিদ্র প্রজাদের কষ্ট লাঘব করতে ১৮৯৪ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে প্রথম কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেন। এই ব্যাংক সম্পর্কে সুধীর সেন তার Rabindranath Tagore on Rural Reconstruction গ্রন্থে লিখেছেন-‘Shilaidaha in the district of Nadia was selected as the center of his experience. A part of nucleus for rural work was already available there. An Agriculture Bank had been founded (in 1893-94) to advance loans particularly seasonal to the cultivators on reasonable rates of interest.’

স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ দরিদ্র কৃষকদের মহাজনদের হাত থেকে মুক্ত করার প্রয়াস চালিয়েছেন। ১৯১৩ সালে নোবেল বিজয়ের কিছু অর্থ তিনি অসহায় মানুষদের কল্যাণে ব্যাংকে বিনিয়োগ করেন। পিতার আদেশে ১৯৮৩ সাল থেকে প্রায়ই পূর্ববঙ্গে আসতেন জমিদারি রক্ষার কাজে। ঘুরতেন পদ্মায় এক বোট থেকে আরেক বোটে চড়ে। বিভিন্ন স্থানের জমিদারি স্বপরিবারে দেখার সুযোগ তিনি পেতেন। শিলাইদহের কুঠিবাড়ির আশেপাশে অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কষ্ট দেখে তার বিবেক নাড়া দিত।

শিলাইদহ ছিল রবীন্দ্রনাথের এক অনুভবের জায়গা। তিনি কৃষকপ্রজা কফিলুদ্দীন-জামালুদ্দীন শেখের সঙ্গে ধানক্ষেতের পোকা মারার পদ্ধতি নিয়ে বহুসময় কথা বলেছেন। উন্নতমানের বীজ ও সার সময়মতো কৃষকেরা যাতে পায়, সে বিষয়েও খোঁজ রাখতেন। গ্রাম উন্নয়ন, সমবায়, দারিদ্র্য বিমোচন, প্রান্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সবকিছুই ছিল কুষ্টিয়ার কুঠিবাড়ি, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, নওগাঁর পতিসর ও খুলনার দক্ষিণ ডিহি অঞ্চলকে কেন্দ্র করে।

রবীন্দ্রনাথের উন্নয়ন দর্শন পল্লি সমাজের জন্য এক উন্নত মডেল। তার উন্নয়ন দর্শন ছড়িয়ে দিতে হবে নিভৃত পল্লিতে। এগুলো নিয়ে আমাদের লেখক গবেষকদের আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারের ঊধ্‌র্বতন নীতিনির্ধারকদের পর্যায়ে এ বিষয়ে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশে পল্লি উন্নয়নে একের পর এক প্রকল্প গ্রহণ করা হয় কিন্তু অনেকটাই যুগোপযোগী বলে মনে হয় না। আজ থেকে শতবর্ষ আগে রবীন্দ্রনাথ উন্নয়নের এক আশ্চর্য রকমের যাদুমন্ত্র শিখিয়েছেন সে বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া দরকার। আজ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে বিস্তর সমস্যা সামনে এসে ঘুরপাক খাচ্ছে। এর মূলে রয়েছে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অপরিপক্কতা ও সমন্বয়ের অভাব।

পূর্ববাংলার নদী, প্রকৃতি, গ্রামবাংলার মানুষের মর্মচেতনা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রমত্তা পদ্মা চষে বেড়িয়েছেন একসময়। বোটের জানালা দিয়ে নদীতীরের মানুষের জীবনযাত্রা দুর্ভোগ স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছেন। মহাজনদের কাছে হাঁটুগেড়ে বসে থাকা অসহায় দরিদ্র কৃষককে দেখেছেন। উঁচু নিচু ভেদাভেদ খণ্ডাতে চেয়েছেন । সমস্যা উত্তরণের জন্য নানান রকম সম্ভাবনাও আগলে ধরেছেন। সেই সময়ের ঘুণে ধরা সমাজকে জাগিয়েছেন শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে। পল্লির মানুষের অজ্ঞতা, কুসংস্কার দূর করে আলোর মশাল তুলে ধরেছেন। দরিদ্র মানুষের মুক্তির বার্তা পল্লিউন্নয়নের আলোকবর্তিকা সামনে এনেছেন তিনি। পল্লিতে রবীর কিরণ আজও স্পষ্ট প্রতীয়মান।

ড. সারিয়া সুলতানা
পল্লি উন্নয়ন গবেষক ও সহকারী সম্পাদক, ঢাকাপ্রকাশ২৪ডটকম

এসএন

 

 

 

 

 

 

Header Ad
Header Ad

গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা

মৃত বাবুল আকতার। ছবি : সংগৃহীত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে মৃত্যুর চার দিন পর একজন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা নিয়ে জেলায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল অসুস্থতার কারণে মারা যান পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাবুল আকতার (পিতা: আব্দুল জলিল মিয়া, গ্রাম: ডাকুনী)। মৃত্যুর পর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

কিন্তু ১৯ এপ্রিল গোবিন্দগঞ্জ থানায় জামায়াত নেতা আজাদুল ইসলাম বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে বাবুল আকতারকে ১৫৫ নম্বর আসামি করা হয়। মামলায় মোট ২২১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "শুনেছি তিনি মারা গেছেন, তবে বিষয়টি যাচাই চলছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।"

 

Header Ad
Header Ad

গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের গুজরাট রাজ্যে অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানে এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতভর আহমেদাবাদ ও সুরাট শহরে যৌথ বাহিনীর এই অভিযান চালানো হয়। শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভারতের বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে ইন্ডিয়া টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভির নির্দেশে পরিচালিত এই অভিযানে আহমেদাবাদ থেকে প্রায় ৮৯০ জন এবং সুরাট থেকে ১৩৪ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে পুরুষ, নারী ও শিশুরাও রয়েছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি সতর্ক করে বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে এবং তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সুরাট পুলিশের যুগ্ম কমিশনার রঘবেন্দ্র ভাটস জানান, আটককৃতদের পরিচয় যাচাইয়ের কাজ চলছে এবং যাচাই শেষে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

গুজরাট সরকারের এই অভিযান দেশজুড়ে অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলাবাসীর গলার কাঁটা মালঞ্চি-নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধটি। গোনা ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় আশির দশকে নির্মিত বেড়িবাঁধটি বছরের পর বছর স্থায়ী ভাবে সংস্কার কিংবা মেরামত না করার কারণে বাঁধটির প্রায় ৬ কিলোমিটার অংশই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় ছিলো।

গত ২০২২সালে প্রথমবারের মতো বাঁধের অত্যন্ত ঝূঁকিপূর্ণ কিছু অংশ মেরামত করা হলেও বর্তমানে পুরো অংশটিই খুবই নাজুক। অবশেষে সেই নাজুক অংশ মেরামতের কাজ শুরু করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ।

সুত্রে জানা, পূর্বে বর্ষা মৌসুমে ছোট যমুনা নদীতে যখনই পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঝূঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হতো তখনই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা ছোটাছুটি শুরু করতো আর যখন নদীতে পানি থাকে না তখন বাঁধটি মেরামত কিংবা সংস্কার করার কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করা হতো না। একাধিকবার ঝূঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং হাজার হাজার হেক্টর জমির ধানসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে। এমন অবস্থা থেকে মুক্ত হতে জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথ উদ্দ্যোগে বর্ষার আগেই সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রশাসনের এমন জনবান্ধব কর্মকান্ডে স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। অন্তত এবার নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেও বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বন্যা হওয়ার শঙ্কা নিয়ে রাত কাটাতে হবে না বলে জানিয়েছে বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসরত বাসিন্দারা।

রাণীনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ( পিআইও) মো. নজরুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় ওই বেড়িবাঁধের কৃষ্ণপুর আলাউদ্দিনের জমি থেকে বেলালের জমি পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ ফিট আর বেলালের জমি থেকে রফিকুলের জমি অভিমুখে ৪২৬ ফিট মোট ৮২৬ ফিট বাঁধের বিপরীত অংশে মাটি দিয়ে প্রশস্তকরণ কাজ শুরু করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে এই সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। পূর্বে ওই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের উপরের বিভিন্ন অংশের প্রস্থ ছিলো গড়ে ৬ থেকে ১০ ফিটের মধ্যে যা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙ্গে যাওয়ার ভয় ছিলো। কিন্তু বর্তমানে সংস্কারের মাধ্যমে মাটি দিয়ে বাঁধের উপরের অংশের প্রস্থ ২৪ ফিট আর নিচের অংশের প্রস্থ করা হচ্ছে ৫০ ফিট যা নদীতে বিপদসীমার উপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হলে ভেঙ্গে যাওয়ার কোন ভয় থাকবে না। সার্বক্ষণিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে সংস্কার কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন। বেড়িবাঁধের এমন সম্প্রসারণ কাজের কারণে দুই উপজেলার মানুষরা বাঁধ ভেঙ্গে হঠাৎ সৃষ্টি হওয়া বন্যার কবল থেকে রেহাই পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানান ইতিমধ্যেই কৃষ্ণপুর নামক স্থানে ছোট যমুনা নদীর বাম তীরে ভাঙ্গন কবলিত স্থানে ২৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ব্যয় জিও বস্তা ডাম্পিং ও প্লেসিং এর মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে অস্থায়ী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্মিলিত ভাবে বেড়িবাঁধের প্রশস্তকরণ কাজ চলমান রেখেছে। আশা রাখি এমন কাজে দুই উপজেলার লাখ লাখ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী ভাবে সুফল পাবেন।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান জানান প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষনের কারণে ছোট যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই বাঁধের ঝ’কিপূর্ণ স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতো। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের যে কোন স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে রাণীনগর ও আত্রাই এই দুই উপজেলার শতাধিক গ্রামসহ হাজার হাজার হেক্টর ফসলের জমি তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে থাকতো। বিভিন্ন সময় ছোট ছোট বরাদ্দ দিয়ে অস্থায়ী ভাবে বাঁধের মেরামত করা হলেও সেটি দীর্ঘস্থায়ী ছিলো না। ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই প্রতিবছরই বাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ অংশ মেরামতের প্রয়োজন দেখা দিতো। এমন সমস্যার স্থায়ী সমাধাণের লক্ষ্যে সম্প্রতি ঝ’কিপূর্ণ বাঁধটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক বর্ষা মৌসুমের আগেই বেড়িবাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ অংশ স্থায়ী ভাবে মেরামত ও সংস্কার করার নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক চলতি মাসের শুরু থেকে বেড়িবাঁধের নদীর বিপরীত পাশে মাটি দিয়ে প্রশস্তকরণ কাজ শুরু করা হয়েছে।

এই কাজের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধের নদীর ভিতরের অংশে জিও বস্তা ডাম্পিং ও প্লেসিং এর মাধ্যমে সংস্কার করছে যাতে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেও বাঁধের ঝূঁকিপূর্ণ কোন অংশ ভেঙ্গে যাওয়ার শঙ্কা থাকবে না।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান, যে কোন উন্নয়ন মূলক কাজে স্বচ্ছ ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা থাকা জরুরী। ছোট যমুনা নদীর মালঞ্চি-নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধটি শুধু দুই উপজেলার নয় পুরো জেলার জন্যও গলার কাটা ছিলো। সেই বাঁধে বার বার অর্থ খরচ না করে এবার জরুরী অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার আগেই স্থায়ী ভাবে মেরামতের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চলমান সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলে এবার আর বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলের মানুষদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে না। ধারাবাহিক ভাবে এই বাঁধসহ জেলার অন্যান্য উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা নিয়ে স্থায়ী ভাবে সংস্কার/মেরামত করা হবে বলেও তিনি জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প