রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

পল্লি উন্নয়নে স্বপ্ন যার আকাশচুম্বী

১৯১৪ সালের ১৪ জুলাই ভারতের উত্তর প্রদেশের বেরিলিতে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিল এক শিশু। বেড়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গে তার মস্তিষ্কে আবর্তিত হলো মা, মাটি ও পল্লির ভাবনা। পল্লির ভাবনায় তাকে ইতিহাসের এক অনন্য মর্যাদার মুকুট পরিয়ে দিল- তিনি হলেন ড. আখতার হামিদ খান।

তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের এক পুলিশ কর্মকর্তার সন্তান হয়েও ভাবনায় এঁকেছিলেন পল্লিকে নিয়ে সবুজ স্বপ্ন। একজন ধার্মিক মায়ের অনন্য সন্তান হিসেবে মা তাকে শিক্ষা দিয়েছিলেন উচ্চমানের চিন্তা-চেতনা ও সাধারণ জীবনযাপনের। সমন্বয়বাদী চিন্তাধারার ধারক হিসেবে নিজে অবিচল থেকে খেটে খাওয়া দিনমজুর ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে পিষ্ট মানুষের দুঃখ-কষ্টকে উপলব্ধি করেছিলেন; যে কারণেই তিনি হতে পেরেছিলেন বিশ্ববরেণ্য সমাজবিজ্ঞানী, বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদ ও পথিকৃৎ। দর্শনের প্রতি তার ছিল গভীর অনুরাগ। সেই থেকে তিনি জার্মান দার্শনিক নীটশের একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে পড়েন। আইসিএস অফিসার হয়েও ড. আখতার হামিদ খান নিজেকে আবিষ্কার করলেন পল্লিবাসীর পল্লির মায়া জাগানো আনন্দ-দুঃখ-কষ্টের এক ভিন্ন কোলাহলে।

বাংলাদেশ পল্লিউন্নয়ন একাডেমি, কোটবাড়ী, কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত আখতার হোসেন খানের লেখা ‘আখতার হামিদ খান একটি স্মৃতিচারণ’ গ্রন্থের ১৪ নম্বর পৃষ্ঠায় লিখেছেন “একটি অতি চিন্তাশীল মেজাজ নিয়ে আমি পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছি এবং আমার জীবনের একটি আধ্যাত্মিক গোপনীয়তা আছে। দেখা যায়, নাটকের অনুপ্রেরণায় তিনি যে সুপারম্যান হয়েছিলেন বা ইকবালের অনুপ্রেরণায় যে পর্বত চূড়াবাসী জাকাল বাজপাখি হয়েছিলেন তা তাকে ধরে রাখতে পারেনি। দূরে থেকেও তিনি হলেন সুদূরের পিয়াসী।”

এভাবেই পল্লি উন্নয়নের পথিকৃৎ আখতার হামিদ খানের নেতৃত্বে চলল গবেষণা। প্রথমে সরকারি অফিসাররা গ্রামের মানুষের জন্য কী কী কাজ করতে পারছেন না সেগুলো পর্যবেক্ষণ করলেন তিনি ও তার সহকর্মীরা। এ স্তরের গবেষণা হলো অবজারভেশনাল রিসার্চ। দ্বিতীয় স্তরে চলল সার্ভে রিসার্চ। তৃতীয় স্তরের গবেষণার নাম দেন অ্যাকশন রিসার্চ। চতুর্থ পর্যায়ে তিনি আসেন পরীক্ষামূলক প্রজেক্টে। এই প্রকারের গবেষণার নাম দেন তিনি পাইলট প্রজেক্ট। পল্লি উন্নয়নে আখতার হামিদ খানের সৃজনশীল গবেষণা আজ সর্বত্র অনুসৃত।

ড. আখতার হামিদ খানের অক্লান্ত চেষ্টায় সফল হয়েছিল পল্লি উন্নয়নে কুমিল্লা পদ্ধতি। তিনি এক আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গ্রামে গ্রামে ঘুরলেন এবং দারিদ্র্যপীড়িত মানুষকে কর্মক্ষম করে তোলার মানসে গড়ে তুললেন কো-অপারেটিভের প্রাথমিক স্তর। থানা পর্যায়ে গড়লেন দ্বিতীয় স্তরের কো-অপারেটিভ থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি। ফলে দরিদ্র কৃষকেরা সঞ্চয় শেয়ার ক্রয় ও সর্বোপরি পেল ঋণ সুবিধা। ঋণের টাকায় কৃষিযন্ত্র কিনে যান্ত্রিক চাষাবাদ, উন্নত সার ও বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে আধুনিক ও উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি শুরু করলেন।

থানা সমিতি থেকে ঋণ দিয়ে কৃষকেরা রাইচমিলের মতো কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তুললেন। ড. আখতার হামিদ খান এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘কুমিল্লায় যে সার্বিক গ্রাম উন্নয়নের ধারণা তিনি পেয়েছিলেন, তা তিনি ডেনমার্ক ও তাইওয়ান থেকে মনে প্রাণে গেঁথেছিলেন।’ নারী মুক্তি সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন, ‘ইতিহাস নারীকে পুরুষের সমান অধিকার দেয়নি। কিন্তু ইতিহাসের কোনো পর্যায়ে নারী ছিল মাতৃদেবতা।’ নারী মুক্তি, নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায়, নারী শিক্ষার প্রবক্তারূপে তিনি কুমিল্লাতে বেশ কিছু কাজ করেছেন।

ড. আখতার হামিদ খান

থানা টেইনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি পল্লি উন্নয়ন ভাবনার আরও এক রক্তিম পালক যুক্ত করেছিলেন। সেন্টার অন ইনটেগ্রেটেড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক এবং কুমিল্লা পল্লি উন্নয়ন একাডেমির পরিচালক মো. আজিজুল হক, ড. আখতার হামিদ খান সম্পর্কে চমকপ্রদ ঘটনার বর্ণনা দেন। মো. আখতার হোসেন খানের বইয়ের ৩৬ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়, একবার গ্রামের এক সভায় এককৃষক উঠে দাঁড়িয়ে ড. আখতার হামিদ খানকে বলল, ‘আমাকে কিছু ঋণ দিন’। শুনে ড. আখতার হামিদ খান বললেন, আমি কোথা থেকে আপনাকে ঋণ দেব? আপনাদের নিজেদের আমানতের যে পয়সা সঞ্চিত আছে সে পয়সা থেকেই ঋণ নিন, কবে নেবেন তা আপনারা বসে ঠিক করে নেন। আর এক সভায় কয়েক জন কৃষক উঠে দাঁড়িয়ে বলল,‘আমরা গরিব আমাদের ঋণ দেন।’ ড. আখতার হামিদ খান বললেন, আপনারা গরিব বলেই তো আপনাদের দরকার সঞ্চয় করে সঞ্চয়ের অর্থ আপনাদের গ্রুপের ফান্ডে রাখার। আর একজন দাঁড়িয়ে বলল, আপনাদের ঋণ আপনি মাফ করে দেন। তিনি বললেন, ‘এটা তো আমার পয়সা না, আপনাদেরই জমানো পয়সা থেকে আপনারাই ঋণ নিয়েছেন, সে পয়সা আমি কী করে মাফ করে দেব?’ ১৯৫৯ সালে কৃষকদের নিজেদের সঞ্চয় আমানতের পথ ধরে যে গ্রামভিত্তিক কো-অপারেটিভ তৈরি হলো এবং যেদিন কোনো ক্ষুদ্র কৃষক কো-অপারেটিভের সে ফান্ড থেকে প্রথম ঋণ নিল সেদিন থেকেই শুরু হলো মাইক্রোক্রেডিটের শুভযাত্রা।

বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন একাডেমি, কুমিল্লার প্রধান নির্বাহী পরিচালক আজিজুল হক ড. আখতার হামিদ খানের সঙ্গে একত্রে দীর্ঘ দিন কাজ করার সুযোগ লাভ করেন। তিনি স্মৃতিচারণে বলেন, ‘ক্লাসে পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে প্রায়ই দেখতাম কলেজের সামনে দিয়ে একজন মানুষ হেঁটে যাচ্ছে, ইয়া উঁচু শরীর, হলুদের মতো গায়ের রঙ, সারস পাখির মতো উঁচু নাক। শিক্ষকদের কেউ কেউ বলতেন, তিনি আইসিএস পাস ব্রিটিশ ভারতের সবচেয়ে বড় চাকুরে। কেউ বলতেন, তিনি ম্যাজিস্ট্রেট, কুমিল্লা কোর্টে বসে বিচার করেন।’ কিন্তু আমরা জানতাম তিনি আখতার হামিদ খান, একজন মুসলমান বড় অফিসার, বুকটা গর্বে ফুলে উঠত।

আমাদের দেশের মতো দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য তার গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রতিফলিত হয়েছে। অবহেলিত মানুষের জন্য ভাবনা তার দেহ ও মনকে অসহায় করে তুলেছে। তাই তিনি পল্লি উন্নয়নের জন্য ছিলেন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একজন দেশপ্রেমিক। পল্লি উন্নয়নের এই অকুতোভয় সৈনিকের জীবনাবসান ঘটে ১৯৯৯ সালের ৯ অক্টোবর। কীর্তিমানের কখনো মৃত্যু ঘটে না, তিনি এখনো জীবন্ত হয়ে রয়েছেন তার প্রতিটি কর্মের মধ্যে দিয়ে। পল্লির মানুষের জন্য তার ভাবনার প্রথম ধাপটিই তিনি রেখেছেন কুমিল্লা পল্লি উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। এটিই তাকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দিয়েছিল। আজ বিস্ময়ে অবিভূত হতে হয় কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠিত পল্লি উন্নয়ন একাডেমি নিয়ে।

ড. আখতার হামিদ খানের সুচিন্তিত চিন্তার বিকাশ ও তার সফলতা আমরা বর্তমানে পল্লি উন্নয়ন একাডেমির সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে দেখতে পায়। ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত একাডেমি এগিয়ে চলছে একটা দর্শন বা আদর্শ নিয়ে এটা তার গতিধারা বজায় রাখছে এবং রাখবে এটাই প্রত্যাশা। গ্রামীণ জনপদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে জল, জমি, জনতা এটার সঠিক ব্যবহার এখন জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছি। ছদ্ম বেকারত্বকে ঝরিয়ে ফেলতে হবে বেশি মাত্রায়। গ্রামের মানুষের সমস্যা সমাধানে সুদূরপ্রসারী গবেষণা জরুরি যা পল্লির মানুষের দারিদ্র্য নিরসনে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সহায়ক হবে।

গ্রামের মানুষকে কাছে টানার এক আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল ড.আখতার হামিদ খানের। তার প্রখর পাণ্ডিত্য, নিম্ন আয়ের অধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশের কৃষি সমাজের প্রতি অবদান তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। দেশব্যাপী পল্লি প্রশাসনের ক্ষেত্রে জাতিগঠনমূলক বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং তৃণমূল পর্যায়ে মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে বার্ড এর ভূমিকা প্রশংসনীয়। বাংলাদেশে পল্লি উন্নয়ন বিষয়ক প্রকাশনার ক্ষেত্রে এটি একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। বার্ড অনেকগুলো সফল পল্লি উন্নয়ন মডেলের উদ্ভাবক। ড. আখতার হামিদ খানের স্বপ্নে ঘেরা পল্লি উন্নয়ন একাডেমি ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন এলাকায় সফল প্রায়োগিক গবেষণা পরিচালনা করবে সেটাই প্রত্যাশা রাখি।

লেখক: সহকারী সম্পাদক, ঢাকাপ্রকাশ ও গবেষক

এসএন

Header Ad
Header Ad

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিন্ধুর উপনদী ঝিলামে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এর ফলেই হঠাৎ করেই মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো মানুষ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে নদীর পানি হু হু করে বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দুনিয়া নিউজ’ জানায়, ভারত কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়েই শনিবার সকাল থেকে বাড়িয়ে দেয় পানির প্রবাহ। এতে করে অনন্তনাগ অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পানি চাকোঠি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। মসজিদের মাইকে সতর্কতা প্রচার করা হয়, স্থানীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ভারত এ হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রতিক্রিয়ায় একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি।

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদী থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা একে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে বিবেচনা করবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতারাও। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।”

এদিকে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী জানালেন, পানির প্রবাহ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ড্রেজিং করে পানির গতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

নিশ্বাস বন্ধ করে দেওয়া এক ফাইনাল, যেখানে নাটক, উত্তেজনা, এবং আবেগ সবই একসঙ্গে ঠাঁই পেয়েছে। কোপা দেল রে’র এবারের ফাইনালে বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ উপহার দিয়েছে পাঁচ গোলের রোমাঞ্চ। আর শেষ হাসি হেসেছে কাতালানরা—১১৬তম মিনিটে জুলস কুন্দের দুর্দান্ত গোলে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালকে শিরোপা জিতে নেয় বার্সেলোনা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) ভোরে সেভিয়ার এস্তাদিও দে লা কার্তুইয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এই ঐতিহাসিক ম্যাচ। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ম্যাচের ১২ মিনিটে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে বার্সাকে এগিয়ে দেন পেদ্রি। প্রথমার্ধে রিয়াল খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি খেলোয়াড়দের নিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় আনচেলত্তির দল।

৭০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান। এরপর কর্নার থেকে চুয়ামেনির হেডে রিয়াল নেয় লিড। কিন্তু সেই আনন্দ টিকল না বেশি সময়। ৮৪ মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে ফেরান তোরেস গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। গোলরক্ষক কর্তোয়া ও রুডিগারের ভুলের সুযোগ কাজে লাগান তরেস।

৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে বার্সা আবার ফিরে পায় নিয়ন্ত্রণ। একাধিক সুযোগ তৈরি করে তারা। শেষ পর্যন্ত ১১৬ মিনিটে লুকা মদ্রিচের পাস কেটে নিয়ে দূর থেকে নিচু শটে গোল করে নায়ক হয়ে ওঠেন ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে। বার্সার জার্সিতে এটাই ছিল তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোল।

রিয়াল যদিও শেষ দিকে আবার পেনাল্টির দাবি তোলে, কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়। উত্তেজনায় ফেটে পড়ে রিয়ালের বেঞ্চ, যার ফল হিসেবে দুই বদলি খেলোয়াড় রুডিগার ও লুকাস ভাজকেজ দেখেন লাল কার্ড।

এই জয়ে চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার দ্বিতীয় শিরোপা এল ঘরে। এর আগে স্প্যানিশ সুপার কাপেও তারা হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে। কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এটি বার্সার ৩২তম শিরোপা—যা সর্বোচ্চ।

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি