শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বিজেএস পরীক্ষায় ৫ম

চা দোকানির ছেলে হলেন বিচারক

বিজেএস পরীক্ষায় ৫ম হওয়া রাবি ছাত্র মিলন। ছবি: সংগৃহীত

একটি ছোট্ট চায়ের দোকান। সারাদিন দাঁড়িয়ে থেকে চা বিক্রি করেন রবিউল ইসলাম। ভোরের আলো ফোটার আগেই বের হন, ফেরেন রাতের অন্ধকারে। মুখে ক্লান্তি, তবু চোখে একরাশ স্বপ্ন ছেলের পড়াশোনা যেন বাধাগ্রস্ত না হয়।

সেই স্বপ্নের প্রতিফলন ঘটালেন রবিউলের বড় ছেলে শাহাজাহান আলী মিলন। ১৭তম বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ৫ম স্থান অর্জন করেছেন তিনি।

যশোর সদরের শেখহাটি গ্রামের এক সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা মিলনের সাফল্যের গল্প যেন সংগ্রামেরই আরেক নাম। বাবার চায়ের দোকানই ছিল সংসারের একমাত্র উপার্জনের উৎস। সেই আয়ে চলে সংসার, মায়ের চিকিৎসা, মিলন ও তার ছোট ভাইয়ের উচ্চশিক্ষার খরচ। অভাবের সঙ্গে লড়াই করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পার করে অবশেষে দেশের বিচার বিভাগের সদস্য হতে যাচ্ছেন তিনি।

স্বপ্নের পথে প্রথম ধাপ

মিলনের শিক্ষাজীবনের শুরু যশোরের সুলতানপুর নুরুল ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে হামিদপুর আলহেরা ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন। স্কুল-কলেজ জীবনে পড়াশোনায় বরাবরই ছিলেন মেধাবী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ১৬তম স্থান অর্জন করে আইন বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল পরিসর, নতুন পরিবেশ, শুরুর দিকে একটু বিভ্রান্ত ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার পূর্বে মিলন জানতেন না বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিন্ন ভিন্ন বিভাগ থাকে। ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে মানিয়ে নেন এবং পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

বিচারক হওয়ার গল্প

বাবা রবিউল ইসলাম দিনের ১৬-১৭ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে চা বিক্রি করেন। প্রতিদিন ভোরে বাসা থেকে বের হয়ে রাত ৯টার পর ফেরেন। নিজের কষ্টের কথা না ভেবে শুধু ভাবতেন ছেলেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। মা শাহানাজ বেগমও ছিলেন অনুপ্রেরণার আরেক নাম। সাত বছর আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন মা শাহানাজ। ডাক্তার তাকে পুরোপুরি বেড রেস্টে যেতে বলেন। অর্থের টানাটানিতে কখনো কোনো গৃহকর্মী রাখার সামর্থ্য হয়নি, তাই নিজের শরীরের কথা না ভেবেই সংসারের সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।

মিলন বলেন, ‘আমার বাবা সবসময় বলতেন, আমার রক্ত বিক্রি করে হলেও তোমার পড়াশোনার খরচ চালাবো। তুমি কখনো পড়াশোনা বাদ দিও না। সেই কথাগুলোই আমার শক্তি ছিল। তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি কোনো কষ্টকে কষ্ট মনে করিনি।’

বিজেএসের প্রস্তুতির লড়াই

আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষে ওঠার পর বুঝতে পারেন, তার কোর্সের সঙ্গে বিজেএস পরীক্ষার সিলেবাসের অনেক মিল রয়েছে। তখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। কিন্তু ১৬তম বিজেএস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি, যা তার জন্য বড় ধাক্কা ছিল। তবে হাল ছাড়েননি। ১৭তম বিজেএসকে লক্ষ্য করে পড়াশোনা চালিয়ে যান।

তবে তার প্রস্তুতির পুরো সময়টা ছিল চ্যালেঞ্জে ভরা। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর একপর্যায়ে পড়াশোনার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু আগের পড়া জ্ঞান কাজে লাগিয়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দেন।

ভাইভা বোর্ডে নার্ভ পরীক্ষা

মৌখিক পরীক্ষা ভালো হয়নি বলে মনে করছিলেন মিলন। মিলন বলেন, ‘তারা আমাকে প্রশ্ন করেছে বাইরে থেকে। আমার সাথে সবাইকে যেখানে গড়ে ২৫ মিনিট করে ভাইবা নিয়েছে। সেখানে আমার নিয়েছিল মাত্র ১০ মিনিট। তখন আমার খুবই চিন্তা হয়। আমি ফিরে আসার সময় মনে হচ্ছিল তারা আমাকে নিতে চায় না। তবে, ফল প্রকাশের পর যখন জানলাম ৫ম হয়েছি। তখন নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। পরে মনে হয়েছে হয়তো ভাইভা বোর্ডে আমার নার্ভ পরীক্ষা করা হয়েছিল।’

বিচারকের চেয়ারে বসার প্রতিশ্রুতি

নবনিযুক্ত বিচারক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই সমাজের প্রতি নিজের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করেছেন মিলন। তিনি বলেন, ‘সব সরকারই বিচারকদের স্বাধীনতা দিতে ভয় পায়। তবে আমি আশাবাদী, আমরা আরও স্বাধীনভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করতে পারবো। পাশাপাশি সচেতন থাকবো, যেন আমার দ্বারা কোনো অন্যায় না হয়। সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই।’

অনুজদের জন্য পরামর্শ

বিজেএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে মিলন বলেন, ‘প্রতিদিন ১০-১২ ঘণ্টা পড়তে হবে, বিষয়টা এমন নয়। বরং পড়াশোনা করতে হবে স্মার্টলি। কেউ যদি তৃতীয় বর্ষের শেষের দিক থেকে সিরিয়াসলি প্রস্তুতি নেয়, তাহলে সফল হওয়া সম্ভব।’

তবে বিজেএস বা বিসিএস-ই কি সফলতার মাপকাঠি? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘সাফল্য একেকজনের কাছে একেক রকম। কেউ যদি স্বপ্ন দেখে বিচারক হবে, তার কাছে এটি সবকিছু। আবার কেউ যদি ঝুঁকি নিতে চায়, নতুন কিছু এক্সপ্লোর করতে চায়, তার কাছে বিজেএস-বিসিএসই সব নয়।’

বাবার চোখে ছেলের সাফল্য

বাবা রবিউল ইসলামের চোখে আনন্দাশ্রু। এক বুক তৃপ্তি নিয়ে বলেন, ‘আমি কষ্ট করেছি, আর আমার ছেলে অর্জন করেছে। ছোটবেলা থেকেই সে পড়াশোনার প্রতি খুব আগ্রহী ছিল। আমি কখনো তাকে কোনো কিছুতে বাধা দেইনি। শুধু চেয়েছি, সে যেন ভালোভাবে পড়াশোনা করে। আজ সে বিচারক হচ্ছে এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে!

Header Ad
Header Ad

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

বিভিন্ন স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্টেশন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার মেট্রোরেল চালু করা হবে বলে তারা আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।

Header Ad
Header Ad

গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পাথর বোঝাই ট্রাকে অভিযান চালিয়ে ২৬ কেজি গাঁজাসহ ট্রাকটি জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ সময় ওই ট্রাকের চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলার বিলকলমী সরকারপাড়া গ্রামের মৃত শহীদুল্লা সরকারের ছেলে ট্রাক চালক বিপুল সরকার (৩৫) ও হেলপার পাবনার সাথিয়া উপজেলার চিনানাড়ী গ্রামের আবু দাউদ আকাশ (২৫)।

শনিবার সকালে গাইবান্ধা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহ্-নেওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বুজরুক বোয়ালিয়া এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসময় কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা পাবনাগামী একটি পাথরবোঝাই ট্রাক থামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে ২৬ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়। পরে ট্রাকটিসহ গাঁজাগুলো জব্দ করা হয়। সেইসঙ্গে ট্রাকের চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করে হয়েছে বলেও জানান জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

Header Ad
Header Ad

আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার

আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার আদমদীঘিতে বিএনপি অফিসে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতা তোহাবিন আলম তোহা (২৫) গ্রেপ্তার হয়েছেন। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার কোমারপুর চারমাথা এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। পরদিন শনিবার (২৬ এপ্রিল) তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

তোহা আদমদীঘি উপজেলার কোমারপুর গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। তিনি ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ৪ আগস্ট আদমদীঘিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ককটেল, পেট্রোল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে বিএনপি অফিসের সামনে হামলা চালান। ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর পর তারা অফিসে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় একই বছরের ২৫ আগস্ট রাতে ১২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও প্রায় ২৫০ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দায়ের হয়।

আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তোহাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং মামলার আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি