রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: শেষ পর্ব

বিষাদ বসুধা

শুক্রবার মোহিনী দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন। ছুটির দিন। অফিসে যাওয়ার তাড়া নেই। এই দিনটিতে অন্য কোনো কাজও তিনি রাখেন না। টানা ছয়দিন অফিস করার পর শুক্রবার দিনই বিশ্রামের মুডে থাকে। সকাল নটা দশটা পর্যন্ত ঘুমান। ঘুম ভাঙলে তিনি বিছানায় শুয়ে শুয়েই পত্রিকা পড়েন।

এতে তার আরো এক ঘণ্টা সময় চলে যায়। তারপর তিনি বিছানা ছেড়ে গোসলে যান। মন চাইলে নাশতা করেন। তা না হলে এককাপ র চা। কিংবা একটি ফল খান। এতেই তার দুপুর পর্যন্ত কেটে যায়।

মোহিনীর এই রুটিন রহিমাবিবি ভালো করেই জানে। দশটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সে পত্রিকা নিয়ে মোহিনীর কক্ষে ঢোকে। মোহিনীর বিছানার পাশে রাখে। যাতে হাত বাড়ালেই পত্রিকাটা পায়। মোহিনী বিছানা না ছাড়া পর্যন্ত তার কক্ষের সামনে এসে ঘুরঘুর করে। বিছানা থেকে ওঠা মাত্র সে তার অনুমতি নিয়ে নাশতা তৈরি করে। খাবার নষ্ট করা মোহিনী একদম পছন্দ করেন না। তার কারণে তো নয়ই, অন্য কেউ নষ্ট করলেও তিনি মন খারাপ করেন। এ কারণে বাসার সবাই খুব সতর্ক থাকে।

ঠিক দশটার দিকে মোহিনীর ঘুম ভাঙে। চোখ মেলে দেখে তার মাথার পাশেই ডেইলি স্টার পত্রিকা। তিনি চিৎ হয়ে শুয়ে দুই হাত দিয়ে পত্রিকাটা চোখের সামনে ধরেন। হঠাৎ একটি হেডলাইনের ওপর তার চোখ আটকে যায়। করোনায় নারী নির্যাতন ও দাম্পত্য কলহ বেড়েছে।

মোহিনী খবরটি পড়তে শুরু করেন। তাতে লেখা আছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দাম্পত্য কলহে ছাড়াছাড়ির ঘটনা দুই তিন গুণ বেশি। এর কারণ হিসেবে সমাজ বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন, পুরুষরা ঘরে থাকতে অভ্যস্ত নয়। করোনার কারণে তারা বাধ্য হয়ে ঘরে থাকছে। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়াঝাটির ঘটনা বেশি ঘটছে।

খবরটি পড়তে পড়তে মোহিনী ভাবেন, তার মানে পারিবারিক সংকট সৃষ্টির কারণও করোনা! প্রতিটি ঘরে ঘরে তার নেতিবাচক প্রভাব রেখে যাচ্ছে! একদিকে মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। আরেকদিকে পারিবারিক কলহ বাড়ছে। বাড়ছে দুঃখ কষ্ট। এ কারণেই পত্রিকা পড়তে ইচ্ছা করে না। নেতিবাচক খবরগুলো আমাকে সারাক্ষণ পীড়া দিতে থাকে। মাথার চারদিক থেকে চাপ তৈরি করে। সারাদিন এই ভাবনা থেকে বের হতে পারি না।

মোহিনী পত্রিকাটা হাতে নিয়ে মা মা করে ডাকেন। তিনি নিজের কক্ষ থেকে আনোয়ারা বেগমের কক্ষে যান। তাকে পত্রিকার খবর দেখিয়ে বলেন, দেখেছ মা! এই দেখ। কী ভয়াবহ খবর।

আনোয়ারা বেগম একবার পত্রিকার দিকে তাকান; আরেকবার মোহিনীর দিকে। তারপর বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বলেন, কী হয়েছে মোহিনী?
করোনা তো প্রতিটি ঘরে ঘরে সংকট তৈরি করছে!
কী রকম?
এই দেখ না! এখানে একটি জরিপ রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, স্বাভাবিকের তুলনায় করোনাকালীন দাম্পত্য কলহ দুই তিন গুণ বেড়েছে।
বলিস কী! খুব বাজে ব্যাপার তো!
হুম। সত্যিই বলেছ। আসলে আমরা কোথায় যাচ্ছি! আমাদের দেশ কোথায় যাচ্ছে? একটা ভাইরাস সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে! অর্থনীতির চাকা উল্টো দিকে ঘোরাচ্ছে। এরমধ্যেই চাকরি হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। পারিবারিক কলহের এটাও কিন্তু একটা বড় কারণ!
তা তো অবশ্যই। আনোয়ারা বেগম বললেন।

মোহিনী আবার বললেন, কত মানুষ যে দরিদ্র হয় তা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। সবাই ভাবছিল ঈদেও পর আর থাকবে না। অথচ এখনো প্রতিদিন গড়ে চল্লিশ পঞ্চাশ জন করে মারা যাচ্ছে। বেশি বিপদে আছে বয়স্ক লোকরা। আর যাদের ঠাণ্ডা সমস্যা, শ্বাসকষ্ট তারা বেশি ভয়ের মধ্যে আছে। তারা করোনায় আক্রান্ত হলে আর রক্ষা নেই। নাহ; খবরটা দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেল!

মন খারাপ করে আর কী করবি বল! সারাবিশ্বের পরিস্থিতিই এক! এমন এক সংকট যার ওপর মানুষের কোনো হাত নেই। কেবল বিধাতা যদি মানুষকে রক্ষা করেন।
আনোয়ারা বেগমের কথায় সায় দিলেন মোহিনী। কিন্তু তিনি কোনো কথা বললেন না। আনোয়ারা বেগম পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য প্রসঙ্গ পাল্টালেন। তিনি মোহিনীকে উদ্দেশ করে বললেন, আচ্ছা শোন, তুই নাশতা করেছিস?
না মা। সবে তো উঠলাম।
নাশতা কর। তারপর তোর সঙ্গে কিছু কথা আছে।
কি কথা মা?
আগে নাশতা করে আয়; তারপর বলছি। তোর বাবাও কথা বলবে।
তাই নাকি! বাবা কোথায়?
ড্রয়িং রুমে। কে যেন এসেছে। কথা বলছে।
তোমরা নাশতা করেছ তো?
হুম। অনেক আগে।
আমি তো এখনো মুখও ধুইনি।
আচ্ছা যা। হাতমুখ ধুইয়ে নাশতা করে আয়।
ঠিক আছে। আগে যখন বলবে না, তখন নাশতা করেই আসছি।
আনোয়ারা বেগম মুসকি হাসলেন। মোহিনী নিজের কক্ষে যান। পত্রিকাটা রেখে বাথরুমে ঢোকেন। দাঁত ব্রাশ করেন। হাতমুখ ধুয়ে নাশতার টেবিলে বসে রহিমাবিবিকে ডাকেন। রহিমা, রহিমা...

রহিমা ছুটে আসে মোহিনীর কাছে। এসেই বিব্রত ভঙ্গিতে বলে, ও আপা মনি! আপনে উইঠ্যা গেছেন! আপনের জন্য তো নাশতা বানাই নায়। আপনে কন নায় বইলা..
মোহিনী স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে বললেন, কি আছে বল তো?
পরোটা মাংস খাইবেন? সবজিও আছে। পুডিং ফিন্নিও আছে। যেইডা ইচ্ছা হেইডাই খাইতে পারেন।
পরোটা মাংস অল্প করে দে। আর একটু পুডিং দে। কে বানাইছে পুডিং?
রহিমাবিবি মুসকি হেসে বলে, আমি।
আচ্ছা। তোর পুডিং তো ভালোই হয়। দে দে।

রহিমা বিবি আর দেরি করে না। সে ত্বরিত গতিতে গরম পরোটা, মাংস, সবজি আর পুডিং টেবিলে দেয়। মোহিনী খাওয়া শুরু করেন। অনেকদিন পর তিনি সকাল বেলা ভারি খাবার খাচ্ছেন। বেশ মজা পাচ্ছেন তিনি। অনেকদিন পর খাওয়ার মজা অনুভব করছেন। একটিমাত্র পরোটা খেয়েই তার পেট ভরে যায়। পুডিং খাবেন কী খাবেন না তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। তারপর তিনি এক চামচ পুডিং মুখে দেন। পুডিংটুকু তার খাওয়াটাকে যেন পূর্ণতা দিয়েছে।
এরমধ্যেই কফি নিয়ে হাজির হয় রহিমাবিবি। মোহিনী তাকে বললেন, কফি মা’র রুমে দাও। মা কি খাবে জিজ্ঞাসা কর। চা না কফি?
রহিমাবিবি আনোয়ারা বেগমের রুমে মোহিনীর কফির মগ রেখে বলল, খালাম্মা আপনে কী খাইবেন? চা না কফি?
তোর আপা কফি খাচ্ছে?
জে।
আমাকে চা-ই দে।
জে আইচ্ছা।
রহিমা শোন, তোর খালু কই?
সামনের ঘরে। একটা লোক আইছে না! তার লগে কতা কইতেছে।
আচ্ছা। যা আমার চা নিয়ে আয়।
রহিমা বিবি চলে যায়। মোহিনী আনোয়ারা বেগমের কক্ষে এসেই বললেন, মা তুমি কি পরোটা মাংস খেয়েছ?
না রে! আমি একটু সবজি আর একটা রুটি খেয়েছি। তুই খেয়েছিস বুঝি!
হ্যাঁ মা। অনেক দিন পর খুব মজা করে খেলাম। তুমি পুডিং খাওনি?
না।
খুব মজা হয়েছে। খেতে পারো। আনতে বলব?
আচ্ছা।
মোহিনী দরাজ গলায় রহিমাবিবিকে ডাকে। রহিমা রহিমা.. মা’র জন্য পুডিং নিয়ে এসো!
রহিমাবিবি চা নিয়ে মাঝপথেই ছিল। সে মোহিনীর কথা ভালোভাবেই শুনতে পেয়েছে। চায়ের কাপ দিতে দিতে সে বলল, আমি পুডিং নিয়া আইতেছি।
মোহিনী কফিতে চুমুক দিয়ে মগটা টি-টেবিলের ওপর রাখলেন। তারপর বললেন, কী বলবে বলো না মা!

আনোয়ারা বেগম ইশারায় রহিমাবিবিকে দেখিয়ে নীরব রইলেন। মোহিনী ভালো করেই জানে, রহিমাবিবির সামনে কোনো কথা বললে তা দুই মিনিটে রাষ্ট্র হয়ে যাবে। সে খুবই পেট-পাতলা মানুষ। কোনো কথা পেটে রাখতে পারে না। ভালোমন্দ বোঝে না। কারও কাছে কোনো কথা শুনলে তা অন্যকে না বলা পর্যন্ত তার পেটের ভাত হজম হয় না। তাই মোহিনীও নীরব রইলেন।
এরমধ্যেই মোহসীন আহমেদ রুমে আসে হাজির হলেন। তিনি সোফায় বসতে বসতে বললেন, রফিকুজ্জামান সাহেব এসেছিলেন।
মোহিনী বললেন, কোন রফিকুজ্জামান বাবা?
প্রীতম গ্রুপের চেয়ারম্যান।
ও আচ্ছা। কি ব্যাপার বাবা?
উনি একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন।

এ সময় রহিমাবিবি চা নিয়ে ঢুকলে মোহসীন আহমেদ আর কিছু বললেন না। তিনি রহিমাবিবিকে চা দিতে বললেন। রহিমাবিবি চলে যাওয়ার পর তিনি আবার শুর করলেন। তিনি বললেন, উনি ওনার ছেলের জন্য তোকে বউ করে নিতে চান। তুই চিনিস নাকি ছেলেটাকে? ছেলেটা নাকি অসম্ভব ভালো!
মোহিনী মাথা নেড়ে না সূচক জবাব দেন। তারপর বলেন, আমার কখনো পরিচয় হয়নি। আর আমি তো তেমন কোথাও যাইও না। পরিচয় হবে কি করে?
হুম। তাও ঠিক।
আবার রহিমাবিবি চা নিয়ে ঢুকল। মোহসীন আহমেদ চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বললেন, তুই যাওয়ার সময় দরজাটা চাপিয়ে দিস কেমন?
রহিমাবিবি ঘাড় নেড়ে বলল, জে।

রহিমাবিবি চলে যাওয়ার পর আনোয়ারা বেগম বললেন, রফিকুজ্জামান সাহেবের ছেলে আগে বিয়ে করেনি?
না। কেন করেনি তাও ঠিক পরিষ্কার না।
মোহিনী ধীরস্থির ভঙ্গিতে বললেন, বাবা আবার কেন বিয়ে! থাক না। আমি তো ভালোই আছি। বিয়েটিয়ে আর ভালো লাগে না।
কেন মা? জীবনে একজন সঙ্গীও তো লাগে! আমরা আর কতদিনই বা বাঁচব?
মা, যে কেউ যে কোনো সময় চলে যেতে পারে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ব্যবসা আর সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকব। নতুন করে আর সংসার হবে না আমাকে দিয়ে!
মোহসীন আহমেদ বললেন, তারপরও তুই চিন্তা করে দেখ। সময় নে। আমি এখনই তোকে সিদ্ধান্ত দিতে বলব না। আরও ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নে।
আনোয়ারা বেগমও তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বললেন, হ্যাঁ সেটাই। তাড়াহুড়ার কিছু নেই।
মোহিনী মাথা নিচু করে বসে রইলেন। কিছুক্ষণ কেউ কোনো কথাই বললেন না।

মোহিনী অনেক চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তিনি আর বিয়ে করবেন না। কথাটা তিনি তার মা বাবাকে জানিয়ে দিলেন। এ কথা জানার পর মোহসীন আহমেদ ও আনোয়ারা বেগম ভাবনায় পড়ে গেলেন। তাদের মনে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধে। মোহিনী বিয়ে না করলে এই পরিবারে তৃতীয় প্রজন্ম বলে কিছু থাকবে না! মাই গড! এতো সম্পদ রেখে যাবো কার জন্য? কে ভোগ করবে? কে দেখাশুনা করবে?

সবকিছু কেমন এলোমেলো লাগে মোহসীন আহমেদের কাছে। তিনি আর কিছুই ভাবতে পারছেন না। মোহিনীকে বিয়ে দেওয়া যেন তার একমাত্র ধ্যানজ্ঞান হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিনই সকাল কিংবা রাতে খাওয়ার টেবিলে মোহিনীর কানে কথাটা তোলেন। একেবারে লেগে থাকা যাকে বলে। আনোয়ারা বেগমও মরিয়া হয়ে ওঠেন মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য। তাদের কর্মকাণ্ড কখনো কখনো পাগলের পর্যায়ে গিয়ে পৌছে।
মোহিনীও চতুর কম নন। তিনি নানা কৌশলে মা বাবার মনে কষ্ট না দিয়ে বিয়ের প্রসঙ্গটি দূরে রাখেন। মা বাবা যখন ওর বিয়ের প্রসঙ্গ তোলেন তখন তিনি শুনেও না শোনার ভান করেন। তিনি হাসি ঠাট্টার মধ্যদিয়ে বিষয়টি উড়িয়ে দেন। কখনো কখনো বলেন, এই বয়সে বিয়ে করে কী হবে? ছেলে পছন্দ হয় না। অনেকেই আবার অর্থের লোভে তাকে বিয়ে করতে চায়! সেটা কি ঠিক হবে? এসব বলে মোহিনী সময় পার করেন। এতে মোহসীন আহমেদ ও আনোয়ারা বেগম বিরক্তিবোধ করেন। তারপরও তারা ধৈর্য ধরেন। মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।

একদিন অবশ্য মোহসীন আহমেদ একটু শক্তভাবেই মোহিনীকে বলেছেন যে, সাত দিনের মধ্যে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। তা না হলে তারা জোর করেই তাকে বিয়ে দেবেন। কানা, লুলা, বোবা ছেলে হলেও তারা তাকে মেয়ের জামাই করবেন।
মোহিনী হাসেন। তিনি জানেন তার বাবা সেটা কখনোই করবেন না। মুখে হাজার বললেও মেয়ের স্বাধীনতায় তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না। তবে তাদের চাপাচাপিতে একটি কাজ হয়েছে। তার মনের ভেতরে একটা প্রভাব পড়েছে। তিনি এখন বিয়ের বিষয়টি নিয়ে ভাবেন। প্রায়শ তিনি চিন্তা করেন। মা বাবা যেহেতু বলছেন, বিয়ে করাই যায়! অবশেষে মোহিনী জানালেন, করোনাকাল শেষ হলেই তিনি বিয়ে করবেন। তবে করোনার মধ্যে বিয়ের প্রসঙ্গ নিয়ে যাতে তারা আলোচনা না করেন সে বিষযটিও সতর্ক করে দিয়েছেন।

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩১

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩০

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

 

Header Ad
Header Ad

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিন্ধুর উপনদী ঝিলামে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এর ফলেই হঠাৎ করেই মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো মানুষ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে নদীর পানি হু হু করে বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দুনিয়া নিউজ’ জানায়, ভারত কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়েই শনিবার সকাল থেকে বাড়িয়ে দেয় পানির প্রবাহ। এতে করে অনন্তনাগ অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পানি চাকোঠি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। মসজিদের মাইকে সতর্কতা প্রচার করা হয়, স্থানীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ভারত এ হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রতিক্রিয়ায় একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি।

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদী থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা একে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে বিবেচনা করবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতারাও। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।”

এদিকে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী জানালেন, পানির প্রবাহ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ড্রেজিং করে পানির গতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

নিশ্বাস বন্ধ করে দেওয়া এক ফাইনাল, যেখানে নাটক, উত্তেজনা, এবং আবেগ সবই একসঙ্গে ঠাঁই পেয়েছে। কোপা দেল রে’র এবারের ফাইনালে বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ উপহার দিয়েছে পাঁচ গোলের রোমাঞ্চ। আর শেষ হাসি হেসেছে কাতালানরা—১১৬তম মিনিটে জুলস কুন্দের দুর্দান্ত গোলে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালকে শিরোপা জিতে নেয় বার্সেলোনা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) ভোরে সেভিয়ার এস্তাদিও দে লা কার্তুইয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এই ঐতিহাসিক ম্যাচ। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ম্যাচের ১২ মিনিটে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে বার্সাকে এগিয়ে দেন পেদ্রি। প্রথমার্ধে রিয়াল খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি খেলোয়াড়দের নিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় আনচেলত্তির দল।

৭০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান। এরপর কর্নার থেকে চুয়ামেনির হেডে রিয়াল নেয় লিড। কিন্তু সেই আনন্দ টিকল না বেশি সময়। ৮৪ মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে ফেরান তোরেস গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। গোলরক্ষক কর্তোয়া ও রুডিগারের ভুলের সুযোগ কাজে লাগান তরেস।

৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে বার্সা আবার ফিরে পায় নিয়ন্ত্রণ। একাধিক সুযোগ তৈরি করে তারা। শেষ পর্যন্ত ১১৬ মিনিটে লুকা মদ্রিচের পাস কেটে নিয়ে দূর থেকে নিচু শটে গোল করে নায়ক হয়ে ওঠেন ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে। বার্সার জার্সিতে এটাই ছিল তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোল।

রিয়াল যদিও শেষ দিকে আবার পেনাল্টির দাবি তোলে, কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়। উত্তেজনায় ফেটে পড়ে রিয়ালের বেঞ্চ, যার ফল হিসেবে দুই বদলি খেলোয়াড় রুডিগার ও লুকাস ভাজকেজ দেখেন লাল কার্ড।

এই জয়ে চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার দ্বিতীয় শিরোপা এল ঘরে। এর আগে স্প্যানিশ সুপার কাপেও তারা হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে। কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এটি বার্সার ৩২তম শিরোপা—যা সর্বোচ্চ।

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি