রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব- ৩১

বিষাদ বসুধা

করোনার কারণে এবার ঈদ কাটল নিরানন্দে। এ রকম ঈদ মুসলমানদের জীবনে বিগত একশ’ বছরেও আসেনি। মক্কার পবিত্র কাবা শরিফ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সৌদি সরকার সাতাশ ফেব্রুয়ারি (দুই হাজার বিশ খ্রিষ্টাব্দ) থেকে হজ ও ওমরাহ ভিসা স্থগিত করে দিয়েছে। এমনকি পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে তাওয়াফও স্থগিত করা হয়।

ইতিহাসে আছে, নবম হিজরিতে হজ ফরজ হওয়ার পর থেকে যুদ্ধ-বিগ্রহ, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থবিরতা, মহামারির প্রাদুর্ভাব ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেকবার হজ ও ওমরাহ বন্ধ ছিল। সেটা হাজার বছর আগের কথা। সাধারণত কাবা শরিফ কখনো বন্ধ থাকে না। দিবারাত্র চব্বিশ ঘণ্টা খোলা থাকে। সারাবিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সেখানে যান। সারাক্ষণই তারা জিকির আসকার করেন। নামাজ আদায় করেন। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পানাহ চান। এবারই তার ব্যত্যয় ঘটল। করোনায় কাবা শরিফের দরজাও বন্ধ করে দিতে হল।

বাংলাদেশে অবশ্য বিধিনিষেধ মেনে সীমিত আকারে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। খুব কম সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে খুব সতর্কতা ঢাকা শহরের মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত হয়েছে। আসিফ আহমেদের বাসা মসজিদ লাগোয়া। বাসা থেকে মাইকে ইমামের বক্তৃতা, নামাজের একামত সবই শোনা যায়। তাই তিনি মসজিদে যাওয়ার ঝুঁকি নিলেন না। তিনি ঘরে বসেই ঈদের নামাজ আদায় করলেন। বাসাতেই ঈদের ছুটি কাটালেন। প্রতিবার কোরবানির ঈদে তার বাসায় ভাইবোনরা ও তাদের ছেলেমেয়েরা আসে। ভীষণ আনন্দ হয়। এবার কেউ আসেনি। তিনিও কারো বাসায় যাননি। টানা চারদিন বাসায় শুয়ে-বসে কাটিয়েছেন।

ঈদের একদিন পরই অফিস খুলে যায়। আসিফ আহমেদ সকাল সকাল অফিসে যান। তার মতে, অফিসের শীর্ষ ব্যক্তি সময়মতো অফিসে না গেলে অন্যরা গাফিলতি করে। তাই তিনি কোনো অবস্থাতেই অফিসে দেরি করেন না। করোনায় ঝুঁকি মাথায় নিয়ে প্রতিদিন অফিস করেন। যদিও অফিসের অনেকের জন্য ‘হোম অফিস’ চালু করেছেন। যাতে পুরো টিম আক্রান্ত হয়ে না যায় সেজন্যই এই ব্যবস্থা।

আসিফ আহমেদ গাড়ি থেকে অফিসের গেটে নামার পর দেখে সেনিটাইজার কিংবা নিরাপত্তাকর্মীরা কেউ নেই। দুএকজন পিওন দাঁড়িয়ে আছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা অফিস ঝাড়াপোছা করছে ঠিকই। কিন্তু তাদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তারা হেলেদুলে চলছে। কাজে ভালোভাবে হাত লাগাতে পারছে না।

চারদিন ছুটি কাটানোর পর সবার মধ্যেই এক ধরনের আলসেমি ভাব থাকে। যাই যাচ্ছি করে অফিসে যেতে দেরি করে। কিন্তু পত্রিকা অফিসে যাই যাচ্ছি করলে চলে না। বলতে হয় এখনই যাচ্ছি। পত্রিকার অনলাইন খোলা ছিল। এই শাখার সংবাদকর্মীরা ঈদের দিনও অফিসে এসে কাজ করেছে। ওরা নিজেদের বাসা থেকে খাবার এনে খেয়েছে।

আসিফ আহমেদ অফিসে এসেই অনলাইন শাখার কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাদের খোঁজখবর নেন। তারপর নিজের দপ্তরে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মোবাইলে ফোন আসে। মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখেন, এমডি সাহেব ফোন দিয়েছেন। ফোন ধরে সালাম জানিয়ে আসিফ আহমেদ তাকে ঈদ মোবারক জানান। শাহবাজ খান ঈদ মোবারক জানিয়েই বললেন, আগামী রবিবার আপনার সঙ্গে মিটিং। সকাল এগারোটার মধ্যে চলে আসবেন। দেরি করবেন না। তালিকাটা নিয়ে আসবেন।

শাহবাজ খান আর কোনো কথা বললেন না। তিনি হঠাৎ করেই ফোন রেখে দিলেন। আসিফ আহমেদ ভাবনায় পড়ে যান। আবার সেই তালিকা! ছাঁটাই না করে তিনি শান্তি পাচ্ছেন না! কে তার মাথায় এটা ঢোকাল? হিসাব বিভাগ? ওদের তো কাজ একটাই। আয় কমেছে কাজেই লোক কমাও। এটাকে যে অন্যভাবে ম্যানেজ করা যায় সেটা ভাবে না। মিডিয়াবান্ধব হিসাবরক্ষক না হলে যা হয়! শুধু কস্ট-কাটিংয়ের কথা মাথায় রাখে। আর কিছু চিন্তা করে না। একটা বড় পত্রিকা। পত্রিকা ভালো না হলে পাঠকরা ছুড়ে ফেলবে। আর একবার ছুড়ে ফেললে সেটা আর হাতে তুলবে না। ডাসবিনে যেমন মানুষ কাগজ ছুড়ে ফেলে তেমনি পত্রিকাটাও ছুড়ে ফেলবে। এটা মালিক কর্তৃপক্ষও ভালো করেই জানে। জানে না হিসাব বিভাগ। ওরা চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্য সারাক্ষণ কস্ট-কাটিংয়ের হিসাব কষে।

হিসাবরক্ষকদের হিসাবের গ্যাড়াকলে পড়েছি আমরা। এর আগে কস্ট-কাটিং করতে গিয়ে পত্রিকার সার্কুলেশনই কমিয়ে দিয়েছে। প্রায় এক লক্ষ কাগজ কমিয়ে দিয়েছে। এখন চেষ্টা করেও আর সার্কুলেশন বাড়ানো যাচ্ছে না। পত্রিকা হচ্ছে স্ত্রীলোকের মতো। একবার ঘর থেকে বের হয়ে গেলে মানুষ তাকে আর ঘরে তুলতে চায় না। সবাই চায় সার্কুলেশন বাড়াতে। আর এরা হিসাবরক্ষকদের কথায় সার্কুলেশন কমিয়ে এখন হায় হায় করছে। তারপরও সার্কুলেশনের লোকরাই এদের কাছে প্রিয়।

এ এক অদ্ভুত ধরনের অফিস। হিসাবরক্ষকদের কথা ছাড়া এরা এক চুলও নড়ে না। এরা এত বড় কীভাবে হলো তা আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন। সবাই দেখল, হিসাবরক্ষকের কথায় পত্রিকার সার্কুলেশন কমিয়ে কতবড় ক্ষতি হয়েছে! অথচ সেই লোকটি বহাল তবিয়তে আছে! তার সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। পদোন্নতি হয়েছে। অথচ দশ বছরেও অনেক সাংবাদিকের কোনো পদোন্নতি হয়নি। পদোন্নতির কথা বলতে গেলেই সোরগোল ওঠে, খরচ বেড়ে যাবে। কিছুতেই এটা করা যাবে না। পদোন্নতিই যদি না হয় তাহলে কিসের আশায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একটা ছেলে এখানে বছরের পর বছর পড়ে থাকবে! কেন পড়ে থাকবে। সে তো তার ক্যারিয়ারের জন্য অন্যত্র ছুটবেই।

বিষয়গুলো নিয়ে আসিফ আহমেদ বড্ড বেশি ভাবছেন। তিনি কিছুতেই মানতে পারেন না। তার মধ্যে ভয়ানক রকম অস্বস্তি হয়। অফিসের স্বার্থে অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়। কখনো কখনো ধৈর্যও ধরতে হয়। সেটা সে ধরেও। কিন্তু যখন ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়! লেবু অতিরিক্ত কচলালে তিতা হয়ে যায়। এটা সবাই জানে। তারপরও কচলাতেই থাকে। এই অফিসটাকেও লেবুর মতো কচলানো হচ্ছে। তাই অফিসটি দিনে দিনে তেতো হয়ে যাচ্ছে।

বিষয়গুলো নিয়ে আসিফ আহমেদ অনেকক্ষণ ধরে ভাবেন। তারপর মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে তিনি চাকরি করবেন না। তিনি নিজের সঙ্গে অনেক বোঝাপড়া করেছেন। অতঃপর তিনি একটি পদত্যাগপত্র লিখলেন।

শাহবাজ খান সকালে অফিসে এসেই আসিফ আহমেদকে ডেকে পাঠালেন। মিডিয়া অফিসের খুব কাছাকাছি করপোরেট অফিস। তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই এমডি সাহেবের অফিসে গিয়ে পৌঁছলেন। এমপি সাহেবের পিওন আসিফ আহমেদকে দেখেই বলল, স্যার আপনি এসেছেন? স্যার আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন। আসেন স্যার, আসেন।
আসিফ আহমেদ এমডি সাহেবের অফিসে ঢোকামাত্র তিনি তাকে উদ্দেশ করে বললেন, তালিকা এনেছেন?
আসিফ আহমেদ অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বললেন, সরি, কিসের তালিকা?
শাহবাজ খান বিরক্তির সঙ্গে বললেন, আপনাকে না বললাম ছাঁটাইয়ের তালিকা করতে!
আসিফ আহমেদ নরম গলায় বললেন, ছাঁটাইয়ের তালিকা আমি করিনি। আর এ মুহূর্তে আমার পক্ষে ছাঁটাই করা সম্ভব নয়। ছাঁটাই করলে আমি চলে যাওয়ার পর করেন।
শাহবাজ খান বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, মানে!
আমি পদত্যাগ করছি। এ ছাড়া আমি কোনো বিকল্প পথ দেখছি না।
শাহবাজ খান বললেন, ঠিক আছে। আপনি যখন কিছুতেই আমার প্রস্তাবে রাজি হচ্ছেন না; তখন আর কী করা! আমার তো অফিসটাকে টিকিয়ে রাখতে হবে!
আমি কিন্তু আপনাকে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিলাম। ওই প্রস্তাবটি বিবেচনা করলে ছাঁটাইয়ের মতো মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হতো না। আসিফ আহমেদ বললেন।
শাহবাজ খান বললেন, আমরা ছাঁটাইয়ের বিকল্প কিছু ভাবছি না।
আসিফ আহমেদ আর কোনো কথা না বাড়িয়ে নিজের হাতে ফাইলের ভেতরে রাখা পদত্যাগপত্রটি শাহবাজ খানের দিকে এগিয়ে দিলেন। তিনি পদত্যাগপত্রের দিকে একবার তাকালেন। মুহূর্তের মধ্যে তার মুখাবয়বে যেন কালো ছায়া পড়ল। কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর আসিফ আহমেদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ঠিক আছে। ভালো থাকবেন।
আসিফ আহমেদ বের হয়ে অফিসের দিকে গেলেন। তিনি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভাগীয় প্রধানরা ছুটে এল তার কক্ষে। অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে জানতে চাইল, এমডি সাহেবের সঙ্গে মিটিং কেমন হলো? ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত কি স্থগিত করা গেছে?
আসিফ আহমেদ মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ বসে রইলেন। দীর্ঘদিন ধরে অনেক যত্নে যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন সেটি তাঁকে আজ ছেড়ে যেতে হবে। এই মর্মবেদনা তিনি কিছুতেই সহ্য করতে পারছেন না। তারা ভীষণ কান্না পাচ্ছে। কিন্তু কাঁদতেও পারছেন না। তিনি চলে গেলে যদি সবার চাকরি থাকত তাহলেও তিনি নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারতেন। তিনি চলে যাওয়ামাত্রই ছাঁটাই শুরু হয়ে যাবে। কতজন যে চাকরি হারায় কে জানে! বেতন হয়তো সবারই কমে যাবে।

আসিফ আহমেদকে বিমর্ষ দেখে কারো আর বুঝতে বাকি রইল না। তারপরও জানার কৌতুহল। সম্পাদকের মুখ থেকে শোনার কৌতুহল। কিন্তু সম্পাদক যে ভেতরে ভেতরে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে! নিজের আবেগ সংবরণের চেষ্টা চালাচ্ছেন তা কি কেউ বুঝতে পারছেন? তা বুঝতে পারলে হয়তো কেউ আর প্রশ্ন করত না।
অবশেষে আসিফ আহমেদ ধরা গলায় বললেন, আমি চলে যাচ্ছি। তোমরা ভালো থেক। পত্রিকাটাকে ভালো রেখ।
সবাই বিস্ময়ের দৃষ্টিতে আসিফ আহমেদের দিকে তাকিয়ে রইল।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩০

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

এসএন 

Header Ad
Header Ad

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিন্ধুর উপনদী ঝিলামে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এর ফলেই হঠাৎ করেই মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো মানুষ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে নদীর পানি হু হু করে বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দুনিয়া নিউজ’ জানায়, ভারত কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়েই শনিবার সকাল থেকে বাড়িয়ে দেয় পানির প্রবাহ। এতে করে অনন্তনাগ অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পানি চাকোঠি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। মসজিদের মাইকে সতর্কতা প্রচার করা হয়, স্থানীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ভারত এ হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রতিক্রিয়ায় একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি।

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদী থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা একে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে বিবেচনা করবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতারাও। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।”

এদিকে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী জানালেন, পানির প্রবাহ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ড্রেজিং করে পানির গতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

নিশ্বাস বন্ধ করে দেওয়া এক ফাইনাল, যেখানে নাটক, উত্তেজনা, এবং আবেগ সবই একসঙ্গে ঠাঁই পেয়েছে। কোপা দেল রে’র এবারের ফাইনালে বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ উপহার দিয়েছে পাঁচ গোলের রোমাঞ্চ। আর শেষ হাসি হেসেছে কাতালানরা—১১৬তম মিনিটে জুলস কুন্দের দুর্দান্ত গোলে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালকে শিরোপা জিতে নেয় বার্সেলোনা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) ভোরে সেভিয়ার এস্তাদিও দে লা কার্তুইয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এই ঐতিহাসিক ম্যাচ। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ম্যাচের ১২ মিনিটে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে বার্সাকে এগিয়ে দেন পেদ্রি। প্রথমার্ধে রিয়াল খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি খেলোয়াড়দের নিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় আনচেলত্তির দল।

৭০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান। এরপর কর্নার থেকে চুয়ামেনির হেডে রিয়াল নেয় লিড। কিন্তু সেই আনন্দ টিকল না বেশি সময়। ৮৪ মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে ফেরান তোরেস গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। গোলরক্ষক কর্তোয়া ও রুডিগারের ভুলের সুযোগ কাজে লাগান তরেস।

৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে বার্সা আবার ফিরে পায় নিয়ন্ত্রণ। একাধিক সুযোগ তৈরি করে তারা। শেষ পর্যন্ত ১১৬ মিনিটে লুকা মদ্রিচের পাস কেটে নিয়ে দূর থেকে নিচু শটে গোল করে নায়ক হয়ে ওঠেন ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে। বার্সার জার্সিতে এটাই ছিল তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোল।

রিয়াল যদিও শেষ দিকে আবার পেনাল্টির দাবি তোলে, কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়। উত্তেজনায় ফেটে পড়ে রিয়ালের বেঞ্চ, যার ফল হিসেবে দুই বদলি খেলোয়াড় রুডিগার ও লুকাস ভাজকেজ দেখেন লাল কার্ড।

এই জয়ে চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার দ্বিতীয় শিরোপা এল ঘরে। এর আগে স্প্যানিশ সুপার কাপেও তারা হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে। কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এটি বার্সার ৩২তম শিরোপা—যা সর্বোচ্চ।

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি