রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব- ৩০

বিষাদ বসুধা

শাহবাজ খানের ফোন পেয়ে মোহিনী বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, কী আশ্চর্য! আমি তো তোমার কথাই ভাবছিলাম!
তাই নাকি? কী সৌভাগ্য!
কেন, সৌভাগ্য কেন?
তুমি আমার কথা ভাবছ! এটা আমার সৌভাগ্য নয়!
সত্যি বলছি। তোমাকে ফোন করব করব করছিলাম। এখন করব না দুপুরের দিকে করব এ রকম চিন্তা করতেই তোমার ফোন এল।
বাহ! খুব ভালো লাগল শুনে। তা হঠাৎ আমার কথা কেন মনে পড়ল শুনি!
আগে তোমার কথা শুনি। তারপর বলছি।
তুমি তো আমাকে ভুলেই গেছ। কতদিন কোনো যোগাযোগ নেই, কথাবার্তা নেই। কী হয়েছে তোমার? একটা ফোনও তো করতে পারতে!
এই অভিযোগ তো আমিও করতে পারি।
হ্যাঁ। তা পার। তবে আমার কথা শুনলে তুমিই বরং বলবে, যোগাযোগ করা উচিত ছিল।
তাই? তাহলে আগেই আমি সরি বলছি। কী হয়েছে বল তো?
মোহিনী কিছুটা অন্য রকম হয়ে গেলেন। তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তার কোনো সাড়া না পেয়ে শাহবাজ খান বললেন, হ্যালো! আছ তুমি?
মোহিনী আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললেন, আরেফিন মারা গেছে!
শাহবাজ খান বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, কী! কী বললে তুমি! কী হয়েছিল তার!
সে তো চীনের উহানে ছিল। যেখানে করোনার উৎপত্তি।
মাই গড! কবে ঘটল এই ঘটনা!
দশ দিন হয়ে গেল।
ওহ! মন খারাপ কর না। বিধাতা যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
সে-ই। দোয়া কর।
অবশ্যই। তোমার কথা শুনে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল।
তোমার খবর বল। তোমার ব্যবসাপাতি কেমন চলছে?
আর বল না! আমি তো ছাঁটাই করতে বাধ্য হলাম।
বল কী! তুমি ছাঁটাই করলে তো কেউ আর বাদ থাকবে না। সবাই শুরু করে দেবে!
শাহবাজ খান বললেন, কিছুই করার নেই বন্ধু। তিনটা গার্মেন্টস বন্ধই করে দিতে হয়েছে। তিনটাতে প্রায় সাতাশশ’ কর্মী ছিল। এতগুলো মানুষের বেতন দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। কয়েকশ’ গার্মেন্টস এরমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। আরও কতশত বন্ধ হয় তা আল্লাহ তায়ালাই জানেন। ভয়ানক অবস্থা তো! মোহিনী বললেন, বুঝতে পারছি। তোমার পত্রিকার খবর কী?
একই অবস্থা। পত্রিকার মাসিক আয় দুই কোটি টাকা কমে গেছে। বেসরকারি বিজ্ঞাপন এক ইঞ্চিও নেই। ফলে পত্রিকার প্রকাশনা টিকিয়ে রাখাই মুশকিল হয়ে গেছে।
মোহিনী বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, এ রকম অবস্থা?
তাহলে আর বলছি কী? সম্পাদককে ডেকে বললাম, লোক ছাঁটাই করেন। তা নাহলে পত্রিকা বন্ধ করে দিতে হবে। আমার পক্ষে এত খরচ দেওয়া সম্ভব না।
সম্পাদক কী বললেন?
উনি রাজি হচ্ছেন না। বললেন, এই মুহূর্তে ছাঁটাই করতে গেলে বদনাম হবে। আচ্ছা, আমি যদি বেতনই দিতে না পারি তাহলে ওসব বদনামের চিন্তা করে লাভ আছে?
তোমার পত্রিকাটা কিন্তু খুব ভালো। মানসম্পন্ন। রুচিশীল। আমি নিয়মিত পড়ি।
সেটা ঠিক আছে। কিন্তু খরচ তো অনেক বেশি। আয়-রোজগার না থাকলে টিকিয়ে রাখাই মুশকিল। তোমার অফিসের খবর কী?
আমি এখনো ছাঁটাই করিনি। চালিয়ে যাচ্ছি। মোহিনী বললেন।
শাহবাজ খান বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বললেন, বাব্বা বল কী!
দোয়া কর যেন ছাঁটাই করতে না হয়। এই সময় লোকগুলো যাবে কোথায়! এই সময় কেউ চাকরি দেবে? সবাই টিকে থাকার লড়াই করছে।
হুম। তোমার কথা ঠিক। কিন্তু আমি এতবেশি খরচ বাড়িয়েছি! আর সামাল দিতে পারছি না।
বুঝতে পারছি। আচ্ছা শোন, ঈদের পর একদিন এস। অনেক দিন তোমাকে দেখি না।
ধন্যবাদ। আসব, অবশ্যই আসব। তুমি ভালো থেক। চিন্তা কর না। ধৈর্য ধর। সময়ই সব ঠিক করে দেবে।
ইনশাল্লাহ। তুমিও ভালো থেক।

মোহিনী ফোন রেখে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকেন। ভাবেন শাহবাজ খানকে নিয়ে। এই ছেলেটির সঙ্গে তার স্কুল জীবন থেকে পরিচয়। কোনো একটা পারিবারিক অনুষ্ঠানে পরিচয় হয়েছিল। সেই সূত্রে ওদের মধ্যে কথাবার্তা হতো। কলেজে ওঠার পর শাহবাজ খান মোহিনীকে প্রেমের প্রস্তাব দিল। সেই প্রস্তাব মোহিনী গ্রহণ না করে বলেছিলেন, তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব হতে পারে, প্রেম নয়। সবার সঙ্গে প্রেম হয় না। প্রেমটা হচ্ছে অন্তরের ব্যাপার। হৃদয়ঘটিত ব্যাপার। হৃদয়ে হৃদয়ে মিলতে হয়। দুই হৃদয় এক না হলে প্রেম হয় না। তোমার মন আমাকে চাইলেও আমার মন সায় দেয় না। অন্য কেউ হয়তো আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
তারপরও শাহবাজ খান বলেছিলেন, আমি অপেক্ষায় থাকব। সারাজীবন তোমার জন্য অপেক্ষা করব। যেদিন তোমার হৃদয় সায় দেবে সেদিন আমাকে বোলো আমি ছুটে আসব তোমার কাছে।
মোহিনী শাহবাজ খানের কথা শুনে শুধু হেসেছিলেন। সে কী হাসি! হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেয়েছিলেন। আর মনে মনে বলেছিলেন, আহারে আমার মজনু রে!
শাহবাজ খান ভীষণ অপমানবোধ করেছিলেন। তিনি মনে মনে বলেছিলেন, কেন ওভাবে হাসল সে! আমাকে কেন ওর এত অপছন্দ? আমি কি দেখতে খারাপ? আমার কি অর্থ সম্পদের কোনো অভাব আছে? নাকি আমার ব্যবহার খারাপ? সমস্যা কী? কোথায় সে বিয়ে করে আমিও তা দেখে নেব।
শাহবাজ খান হাল ছাড়েননি। তিনি মোহিনীর জন্য অপেক্ষা করেন। নিয়মিত যোগাযোগ করেন। টেলিফোনে কথা বলেন। গল্প করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর শাহবাজ খান বিদেশে পড়তে চলে যান। সেটাই সম্ভবত দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে। অনেকদিন দুজনের মধ্যে কোনো যোগাযোগই ছিল না।
কথায় আছে না, এক হাতে তালি বাজে না! একপেশে ভালোবাসাও খুব বেশি দূর আগায় না। মোহিনীর প্রতি শাহবাজ খানের ভালোবাসাও হয়তো সে কারণেই স্থায়ী হয়নি। আস্তে আস্তে মোহিনীকে তিনি ভুলে যান। মোহিনীও ভুলে যান শাহবাজ খানকে।
শাহবাজ খান দেশে ফিরে মা বাবার পছন্দে বিয়ে করেন। ব্যবসায় মনোযোগ দেন। নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মোহিনীও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে বন্ধু আরেফিনকে বিয়ে করেন। পিতার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। এক পর্যায়ে নিজেই আলাদাভাবে সু-ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলেন। তরতর করে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি।
হঠাৎ একদিন মোহিনীর অফিসে এসে হাজির হন শাহবাজ খান। তাকে দেখে অবাক হন তিনি। কথাগুলো আজ বড় মনে পড়ছে মোহিনীর। উদাস হয়ে তিনি ভাবতে থাকেন। মনে মনে বলেন, জীবন বড় বিচিত্র।

মোহিনী নিজের অফিস কক্ষে পা দিয়ে চমকে ওঠেও। তার টেবিলের ওপর নানারকম তাজা ফুলের বিশাল একটি বাস্কেট। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ বোধহয় পৃথিবীতে নেই। কিন্তু আজ মোহিনীর ভেতরে অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে। আজ তার জন্মদিন। ওই ফুলগুলোই তাকে সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। করোনার কারণে জন্মদিন পালন করবেন না বলে মোহিনী আগে থেকেই তার মা বাবাকে বলে রেখেছিলেন। তারা হয়তো সকালে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেন। কিন্তু তাদের ঘুম ভাঙার আগেই মোহিনী বাসা থেকে বের হয়ে যান।
এর আগের বছরগুলোতে মোহিনীকে ওর মা-বাবা এবং বিয়ের পর আরেফিন সর্বপ্রথম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেন। তাদের পর বন্ধুবান্ধবরা শুভেচ্ছা জানাত। কেউ টেলিফোন করে। কেউ ফোনে ম্যাসেজ পাঠিয়ে। আজই জীবনে প্রথম অফিসে এসে ফুলের বাক্সেট দেখলেন তিনি।
মোহিনী ধীরে ধীরে ফুলগুলোর কাছে এগিয়ে যান। কে ফুল পাঠিয়েছে তা দেখেন। তিনি যা ভেবেছিলেন তাই! শাহবাজ খান পাঠিয়েছেন। ভীষণ একটা ভালোলাগা তাকে আচ্ছন্ন করে। তিনি মোবাইল বের করে শাহবাজকে ফোন করার জন্য। হাতে নিয়ে দেখেন ফোনটা বন্ধ। তিনি ফোনের সুইস অন করেন। সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য শুভেচ্ছা বার্তা আসতে থাকে তার ম্যাসেঞ্জারে। ম্যাসেঞ্জার দেখতে গেলে অনেক সময় লাগবে। তাই তিনি ম্যাসেঞ্জার না দেখে শাহবাজ খানকে ফোন করেন। তাকে তিনি ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে তার জন্মদিন মনে রাখার জন্য। এরমধ্যেই টেলিফোনে মোহিনীর বাবা মোহসীন আহমেদ, মা আনোয়ারা বেগম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। আসিফ আহমেদ এবং মোহিনীর অন্য কাছের বন্ধুরাও একের পর এক টেলিফোন করতে থাকে। জন্মদিনের শুভেচ্ছায় সিক্ত হন মোহিনী।
কিছুক্ষণের মধ্যেই মোহিনীর কক্ষে ফুল নিয়ে হাজির হয় তার অফিসের কর্মকর্তারা।
মোহিনী খুব বিনয়ের সঙ্গে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বললেন, ফুল দেখলে আমি অন্য রকম হয়ে যাই। আমি আপনাদের শুভেচ্ছায় অভিভূত। তবে করোনার সময় ফুলগুলো না আনলেও পারতেন। আপনারা এমনিতে শুভেচ্ছা জানালেও আমি খুশি হতাম।
কর্মকর্তারা লজ্জিত ভঙ্গিতে বলল, সরি ম্যাম। ভুল হয়ে গেছে।
মুহূর্তের মধ্যে ফুলের বাস্কেটগুলো সরিয়ে নেওয়া হলো মোহিনীর কক্ষ থেকে। করোনার কারণে কাউকে মিষ্টি খাওয়ানো সম্ভব হলো না। মোহিনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বললেন, করোনা শেষ হোক। তারপর আমরা বেঁচে থাকলে সবাই একসঙ্গে খাব। আমরা এখন যে যার কাজে মনোযোগ দিই!
কর্মকর্তারা খুশি মনে মোহিনীর কক্ষ থেকে বের হলো। মোহিনী শাহনাজ বেগমকে ডেকে বললেন, তুমি একটা ঠিকানা লেখ তো!
শাহনাজ বেগম ডায়েরি খুলে কলম হাতে নিয়ে মোহিনীর টেবিলের সামনে দাঁড়াল। মোহিনী বললেন, আলী আকবর, গ্রাম: আজিমপুর, ডাকঘর: লতা, উপজেলা: মেহেন্দিগঞ্জ, জেলা: বরিশাল। তুমি আমার ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে প্রতি মাসে এই ঠিকানায় দশ হাজার করে টাকা পাঠাবে। বুঝতে পারছ? পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পাঠাতেই থাকবে। প্রতি মাসে আমাকে যেন বলতে না হয়। পাঠিয়ে আমাকে জানাবে।
জি ম্যাম।
যাও। চলতি মাসেরটা এখনই পাঠিয়ে আমাকে জানাও।
শাহনাজ বেগম চলে গেল। মোহিনী অফিসের কাজে মনোযোগ দিতে গিয়েও পারছিলেন না। একের পর এক টেলিফোন আসার কারণে তিনি কিছুটা বিরক্তও হচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি বললেন, কী ব্যাপার! করোনায় সবাইকে কর্মবিমুখ করে দিয়েছে নাকি! কাজ না থাকলে মানুষ এসব কাজে সময় নষ্ট করে। আর এটা যদি অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায় তাহলেই সর্বনাশ!

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad
Header Ad

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিন্ধুর উপনদী ঝিলামে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এর ফলেই হঠাৎ করেই মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো মানুষ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে নদীর পানি হু হু করে বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দুনিয়া নিউজ’ জানায়, ভারত কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়েই শনিবার সকাল থেকে বাড়িয়ে দেয় পানির প্রবাহ। এতে করে অনন্তনাগ অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পানি চাকোঠি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। মসজিদের মাইকে সতর্কতা প্রচার করা হয়, স্থানীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ভারত এ হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রতিক্রিয়ায় একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি।

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদী থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা একে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে বিবেচনা করবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতারাও। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।”

এদিকে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী জানালেন, পানির প্রবাহ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ড্রেজিং করে পানির গতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

নিশ্বাস বন্ধ করে দেওয়া এক ফাইনাল, যেখানে নাটক, উত্তেজনা, এবং আবেগ সবই একসঙ্গে ঠাঁই পেয়েছে। কোপা দেল রে’র এবারের ফাইনালে বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ উপহার দিয়েছে পাঁচ গোলের রোমাঞ্চ। আর শেষ হাসি হেসেছে কাতালানরা—১১৬তম মিনিটে জুলস কুন্দের দুর্দান্ত গোলে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালকে শিরোপা জিতে নেয় বার্সেলোনা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) ভোরে সেভিয়ার এস্তাদিও দে লা কার্তুইয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এই ঐতিহাসিক ম্যাচ। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ম্যাচের ১২ মিনিটে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে বার্সাকে এগিয়ে দেন পেদ্রি। প্রথমার্ধে রিয়াল খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি খেলোয়াড়দের নিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় আনচেলত্তির দল।

৭০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান। এরপর কর্নার থেকে চুয়ামেনির হেডে রিয়াল নেয় লিড। কিন্তু সেই আনন্দ টিকল না বেশি সময়। ৮৪ মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে ফেরান তোরেস গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। গোলরক্ষক কর্তোয়া ও রুডিগারের ভুলের সুযোগ কাজে লাগান তরেস।

৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে বার্সা আবার ফিরে পায় নিয়ন্ত্রণ। একাধিক সুযোগ তৈরি করে তারা। শেষ পর্যন্ত ১১৬ মিনিটে লুকা মদ্রিচের পাস কেটে নিয়ে দূর থেকে নিচু শটে গোল করে নায়ক হয়ে ওঠেন ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে। বার্সার জার্সিতে এটাই ছিল তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোল।

রিয়াল যদিও শেষ দিকে আবার পেনাল্টির দাবি তোলে, কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়। উত্তেজনায় ফেটে পড়ে রিয়ালের বেঞ্চ, যার ফল হিসেবে দুই বদলি খেলোয়াড় রুডিগার ও লুকাস ভাজকেজ দেখেন লাল কার্ড।

এই জয়ে চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার দ্বিতীয় শিরোপা এল ঘরে। এর আগে স্প্যানিশ সুপার কাপেও তারা হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে। কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এটি বার্সার ৩২তম শিরোপা—যা সর্বোচ্চ।

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি