রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা

আসিফ আহমেদ সকাল সকাল অফিসে এসেছেন। অফিসে এসেই বিজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান নূরুজ্জামান ও হিসাব বিভাগের প্রধান মনির হোসেনকে নিয়ে বৈঠকে বসেছেন। ঈদের আগে তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শুরুতেই আসিফ আহমেদ বললেন, আমি কয়েকটি পয়েন্ট বলছি। সেগুলো মাথায় রাখ। প্রথমত, করোনার কারণে এবার যে অবস্থা হয়েছে তাতে বোনাস দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। দ্বিতীয়ত, পাওনাদারদের টাকা ঈদের আগে দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। আমাদের এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বেতন পরিশোধ করা। তিন মাসের বেতন পরিশোধ করতে না পারলে বিরাট ঝামেলায় পড়ব। ঈদের পর কেউ কোনো টাকা দেবে না। কারো টিকিটিও ছোঁয়া যাবে না। যা করার ঈদের আগেই করতে হবে। এখন মনির বল, তোমার অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে। এমডি সাহেব যে টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন সেটা কবে নাগাদ পেতে পার।
মনির হোসেন বলল, এমডি স্যার তিনটি চেকের মাধ্যমে ষাট লাখ টাকা দিয়েছেন। এই টাকাটা ব্যাংকে জমা হলে এক মাসের বেতন দেওয়া সম্ভব হবে।
আচ্ছা। সেই এক মাসেরটাই আগে দিয়ে দিও। বাকি দুই মাসের বেতন জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দেবে। দেরি করবে না। সবাই যখন এক সপ্তাহের মধ্যে তিন মাসের বেতন পাবে তখন সবাই খুশি থাকবে। বোনাস নিয়ে ওতো মাথা ঘামাবে না। বুঝতে পারছ?
জি স্যার।
আচ্ছা। তাহলে তোমার আর কত টাকা দরকার হবে?
মনির হোসেন বলল, ঈদের আগে বাকি দুই মাসের বেতন দিতে হলে প্রায় দুই কোটি টাকা প্রয়োজন। পাওনাদারদের বলেকয়ে না হয় ঈদের পরে দিলাম। দুই কোটি টাকার এক টাকা কম হলেও আমরা কিন্তু বেতন শেষ করতে পারব না। আর পোস্ট ডেটেড চেক এলেও হবে না। ওগুলো জমা হতে হতে ঈদের পর চলে যাবে। ঈদের আগে আমাদের হাতে আর দশ দিন সময় আছে। এরমধ্যে দুই শুক্রবার বন্ধ। দুই শনিবারও বেশির ভাগ বন্ধ থাকে। কাজেই হিসাব করলে সময় কিন্তু আছে ছয় দিন। এই ছয় দিনের মধ্যেই বিজ্ঞাপন বিভাগকে যা করার করতে হবে।

নূরুজ্জামান ঢাকার চার অঞ্চলের চার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে জানাল, আমরা আশা করি ঈদের আগে বেতনের টাকাটা জোগাড় করতে পারব।
ধন্যবাদ। দেখ ঝামেলায় ফেল না ভাই। আমি কিন্তু ভয়ঙ্কর দুশ্চিন্তায় আছি।
ঠিক আছে স্যার। আপনি চিন্তা করবেন না।
দেখ আমার যদি আরও কোথাও বলতে হয় বলে দিই। তারপরও ঈদের আগে বেতনের ঝামেলা আমি শেষ করতে চাই।
জি স্যার। সেটা আমি বলব। তবে আশা করি আর বলতে হবে না। আপনি তো বেশ কয়েক জায়গায় বলে চেক এনেছেন।
তা এনেছি। সেটা কোনো সমস্যা না। এটা একটা টিম ওয়ার্ক। সবাই মিলে আমাদের কাজ করতে হবে। সংকটের সময় টিমওয়ার্কটা আরও বেশি প্রয়োজন। তোমরা দেখ। আরও যদি কোথাও বলতে হয় বলব। যেতে হলে যাব। কোনো অসুবিধা নেই। গ্রামীণ দিয়েছে?
আজ দেওয়ার কথা স্যার।
শোন, গ্রামীণের সিইও কিন্তু আমার খুব ঘনিষ্ঠ। যদি কোনো সমস্যা হয় আমার কথা বোলো।
স্যার, আপনাকে বেঁচেই তো খাচ্ছি।

নূরুজ্জামানের কথা শুনে আসিফ আহমেদ হেসে উঠল। মনির হোসেনও হেসে দিয়ে বলল, হ স্যার। কথাডা মন্দ কয় নাই।
যেভাবেই হোক টাকা আনুক। আমার কোনো অসুবিধা নেই। রবি, বাংলালিংক তারপর ইউনিলিভার, প্রাণ-আরএফএলসহ বড় কোম্পানিগুলোকে ভালো করে ধর। এদের কাছেই তো আমার বেশির ভাগ টাকা পড়ে আছে। আসিফ আহমেদ বললেন।
জি স্যার। আমি এখন তাহলে যাই। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই জোগাড় করতে হবে। শেষ দিনের আশায় থাকা যাবে না। শেষ দিন যা পাই সেটা জমা থাকুক। ঈদের কাজে লাগবে।
মনির হোসেন বলল, সেটা হলে তো আলহামদুলিল্লাহ। ঈদের পর পাওনাদাররা হুমড়ি খেয়ে পড়বে। তাদের টাকাটা জোগাড় করে যেতে পারলে বিরাট কাজ হবে।
এ কথা শুনে আসিফ আহমেদ ভীষণ খুশি। তিনি নূরুজ্জামানকে উদ্দেশ করে বললেন, তুমি যদি আগামী তিন দিনের মধ্যে বেতনের টাকা আনতে পার তাহলে বিশেষ বকশিস তুমি আমার কাছ থেকে পাবে।
নূরুজ্জামান বলল, ধন্যবাদ স্যার। দেখি কী করা যায়।
নূরুজ্জামান চলে যায়। মনির হোসেনও বিদায় নেয়। এর পরপরই সম্পাদকের কক্ষে আসে চিফ রিপোর্টার ও মফস্বল সম্পাদক। চিফ রিপোর্টার কথা বলতে গিয়ে মুখে আটকে গেল। ঠিক বোঝা গেল না কি বলেছে সে। আসিফ আহমেদ জানতে চাইলেন, তোমার কথাটা আমি বুঝতে পারিনি। কী বলতে চেয়েছ বল তো!
আ-আ-আমি আজ বাজার নিয়ে যেতে না পারলে ঘরেই ঢুকতে পারব না। ব-ব-বউ খুবই রেগে আছে। তিন দিন ধরে বা-বা-বাজারের কথা বলে। কিন্তু আমি এড়িয়ে যাই। তার কথা শুনেও না শোনার ভান করি। সকালে গাড়ি স্টার্ট দিতে গিয়ে দেখি স্টার্ট নেয় না। ঘটনা কী! দেখা গেল তেল নেই। ছেলের কাছ থেকে একশ’ টাকা নিয়ে তেল ভরলাম। তারপর অফিসে এলাম।
হুম। বুঝতে পারছি। আসিফ আহমেদ বললেন।

চিফ রিপোর্টার আবার বলল, জামিল ভাইয়ের কাছ থেকে দু দফায় টাকা ধার নিয়েছি। এখন ধার চাইতেও লজ্জা লাগে। সময় মতো পরিশোধ না করলে কেন দেবে বার বার? আসিফ ভাই, বেতন কি আজকে হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে?
দেখি। এমডি সাহেব কিছু টাকা দিয়েছে। ওই টাকা জমা হলে হয়তো আজকেও হয়ে যেতে পারে।
বেতনটা হলে যে কী বাঁচা বাঁচি!
মফস্বল সম্পাদক বলল, আমার ওয়াইফ বলল তুমি তো ঠিক মতো বেতনটেতন পাচ্ছ না; আমরা বরং গ্রামে চলে যাই। কিছুদিন গ্রামে থেকে আসি। গ্রামে পাঠাতেও তো টাকা দরকার। সেই টাকাও পকেটে নেই। তিন মাস পর বেতন পেলে কি চলা সম্ভব? যে টাকা বেতন পাই তা সবই খরচ হয়ে যায়। জমা থাকে না। ধার করে কতদিন চলা যায়!

আসিফ আহমেদ দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বললেন, আমি অফিসে এসেই বিজ্ঞাপন ও হিসাব বিভাগের সঙ্গে বসছিলাম। ওরাও চেষ্টা করছে। আজ না হলেও কাল এক মাসের বেতন পেয়ে যাবে।
চিফ রিপোর্টার সম্পাদককে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, আপনার চেষ্টাটা আমাদের সবারই চোখে পড়ছে। যাকগে, আমরা তাহলে মিটিংটা শেষ করি।
কী কী আছে আজকে? দিনের ঘটনা, বিশেষ রিপোর্ট? সম্পাদক জানতে চাইলেন।
চিফ রিপোর্টার বললেন, করোনার দিনের ঘটনা থাকবে। এ ছাড়া করোনায় খাতওয়ারি ক্ষতির রিপোর্ট আজ হাতে পাব। কয়েকজন রিপোর্টার এটা নিয়ে কাজ করছে।
মফস্বল থেকেও আসবে। এ ছাড়া জেলাগুলোতে করোনার টেস্ট ও চিকিৎসা অবকাঠামো কী আছে সে বিষয়ে রিপোর্ট পাব। মফস্বল সম্পাদক যোগ করল।
ভাই, চিকিৎসক, পুলিশ ও জেলা প্রশাসন কিন্তু খুব ভালো ভূমিকা রাখছে। এদের বিষয়ে একটা ইতিবাচক রিপোর্ট কিন্তু করা যায়। চিফ রিপোর্টার বলল।
আসিফ আহমেদ বললেন, কেন নয়? অবশ্যই করাও। মানুষের বিপদে যারা পাশে দাঁড়াবে তাদের নিয়ে অবশ্যই রিপোর্ট করতে হবে। তাহলেই মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে।
জি জি। আর বিকেলের মিটিংটা আমরা অনলাইনে সেরে ফেলতে পারি। এখন তো একসঙ্গে বসাটা একটু সমস্যা! আপনার বোধহয় আরেকটা মিটিং আছে! চিফ রিপোর্টার বলল।
হুম। ঠিক আছে। কোনো অসুবিধা নেই। আমি আছি।
এ সময় আসিফ আহমেদের ফোনের রিং বাজে। ফোন ধরতে ধরতে চিফ রিপোর্টার ও মফস্বল সম্পাদককে বিদায় জানায়। ওরা চলে যাওয়ার পর তিনি ফোনে কথা বলা শুরু করেন।

পত্রিকা অফিসে সাধারণত ঈদের ছুটি তিন দিন। ঈদ একদিন পেছালে ছুটি একদিন বাড়ে। এবার আগেভাগেই চার দিন ছুটি ঘোষণা করেছে সংবাদপত্র মালিক সমিতি। ঈদের ছুটি ঘোষণার আগেই তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেন আসিফ আহমেদ। এক সপ্তাহের মধ্যে তিন মাসের বেতন পেয়ে সাংবাদিক-কর্মীরা মহা খুশি। তারা একে একে সম্পাদকের দপ্তরে এসে তাকে ধন্যবাদ জানায়। অনেকে বলে, ব্যাপারটা সত্যিই বিস্ময়কর।
সম্পাদককে ধন্যবাদ জানিয়ে মামুন রশিদ বলল, এটা কী করে সম্ভব হলো? এক সপ্তাহের মধ্যে তিন মাসের বেতন! সত্যিই কী পেরেসানিতেই না পড়েছিলাম! আপনি সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন।
আসিফ আহমেদ বললেন, আমরা ভাবছিলাম হয়তো দুই মাসের বেতন হলেও হতে পারে। তিন মাসের বেতন একসঙ্গে পাব একটা ভাবিনি। আমার যে কী আনন্দ লাগছে তা আর কী বলব!
রিশিত খান বলল, কেউ কেউ তো বলা শুরু করেছিল, আপনি পারছেন না। আর এখন তাদের বোল পাল্টে গেছে। এখন কি বলছে জানেন?
আসিফ আহমেদ বললেন, কী বলছে?
এখন বলছে, আপনার কোনো তুলনা হয় না। আপনি সত্যিই ক্যারিসম্যাটিক লিডার। রিশিত খান বলল।
মামুন রশিদ রিশিত খানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলল, আমার কানেও এসব কথা এসেছে। আমি বলতে চাইনি। আসলে সব অফিসেই বোধহয় কিছু লোক থাকে। তারা সব সময় দোষ খুঁজে বেড়ায়। সেটা যখন আবার মিথ্যা প্রমাণিত হয় তখন তারা বোল পাল্টে ফেলে।

এ সময় নূরুজ্জামান সম্পাদকের কক্ষে এসে বলল, স্যার আপনার দিক-নির্দেশনার কারণেই আমরা সফল হয়েছি। হিসাব বিভাগের মনির সাহেবকেও ওই দিন শক্তভাবে না বললে সে উল্টাপাল্টা কাজ করত। পরিবহনের টাকাটা আগে দিয়ে দিত। ওদের টাকা আগে দিলে আর বেতন দিতে হতো না। পরিবহনের কাছ থেকে ওরা কোনো কমিশন পায় কি না!
আসিফ আহমেদ তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, বাদ দাও তো ওসব কথা! শোন, তোমাকে বলেছিলাম না, ঈদের আগে তিন মাসের বকেয়া পরিশোধ করতে পারলে তোমাকে বকশিস দেব! এই নাও। এটা রাখো।
নূরুজ্জামান ভীষণ খুশি। সে সম্পাদকের পায়ে সালাম করে বলল, স্যার আপনার কোনো তুলনা নেই। আপনি যা করলেন!
ধন্যবাদ। আমি শুধু গাইড করেছি। তোমরা চেষ্টা না করলে তো কিছুই হতো না। আমি বিধাতার কাছে শুকরিয়া জানাই। আমি যা চেয়েছিলাম তাই হয়েছে। সত্যিই আমার ঈদটা স্বস্তিতে কাটবে।
নূরুজ্জামান বলল, আপনার ওপর বাপ-মায়ের দোয়া আছে স্যার। আপনি অনেক বড় হবেন। সত্যিই অনেক বড় হবেন।
উপস্থিত সবাই নূরুজ্জামানের কথায় সায় দিল।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

 

Header Ad
Header Ad

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিন্ধুর উপনদী ঝিলামে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এর ফলেই হঠাৎ করেই মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো মানুষ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে নদীর পানি হু হু করে বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দুনিয়া নিউজ’ জানায়, ভারত কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়েই শনিবার সকাল থেকে বাড়িয়ে দেয় পানির প্রবাহ। এতে করে অনন্তনাগ অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পানি চাকোঠি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। মসজিদের মাইকে সতর্কতা প্রচার করা হয়, স্থানীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ভারত এ হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রতিক্রিয়ায় একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি।

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদী থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা একে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে বিবেচনা করবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতারাও। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।”

এদিকে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী জানালেন, পানির প্রবাহ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ড্রেজিং করে পানির গতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

নিশ্বাস বন্ধ করে দেওয়া এক ফাইনাল, যেখানে নাটক, উত্তেজনা, এবং আবেগ সবই একসঙ্গে ঠাঁই পেয়েছে। কোপা দেল রে’র এবারের ফাইনালে বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ উপহার দিয়েছে পাঁচ গোলের রোমাঞ্চ। আর শেষ হাসি হেসেছে কাতালানরা—১১৬তম মিনিটে জুলস কুন্দের দুর্দান্ত গোলে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালকে শিরোপা জিতে নেয় বার্সেলোনা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) ভোরে সেভিয়ার এস্তাদিও দে লা কার্তুইয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এই ঐতিহাসিক ম্যাচ। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ম্যাচের ১২ মিনিটে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে বার্সাকে এগিয়ে দেন পেদ্রি। প্রথমার্ধে রিয়াল খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি খেলোয়াড়দের নিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় আনচেলত্তির দল।

৭০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান। এরপর কর্নার থেকে চুয়ামেনির হেডে রিয়াল নেয় লিড। কিন্তু সেই আনন্দ টিকল না বেশি সময়। ৮৪ মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে ফেরান তোরেস গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। গোলরক্ষক কর্তোয়া ও রুডিগারের ভুলের সুযোগ কাজে লাগান তরেস।

৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে বার্সা আবার ফিরে পায় নিয়ন্ত্রণ। একাধিক সুযোগ তৈরি করে তারা। শেষ পর্যন্ত ১১৬ মিনিটে লুকা মদ্রিচের পাস কেটে নিয়ে দূর থেকে নিচু শটে গোল করে নায়ক হয়ে ওঠেন ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে। বার্সার জার্সিতে এটাই ছিল তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোল।

রিয়াল যদিও শেষ দিকে আবার পেনাল্টির দাবি তোলে, কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়। উত্তেজনায় ফেটে পড়ে রিয়ালের বেঞ্চ, যার ফল হিসেবে দুই বদলি খেলোয়াড় রুডিগার ও লুকাস ভাজকেজ দেখেন লাল কার্ড।

এই জয়ে চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার দ্বিতীয় শিরোপা এল ঘরে। এর আগে স্প্যানিশ সুপার কাপেও তারা হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে। কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এটি বার্সার ৩২তম শিরোপা—যা সর্বোচ্চ।

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি