শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

এডিটর’স টক

‘সরকারপ্রধান যদি চান তাহলে সবকিছু সম্ভব’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) এসেছিলেন ঢাকাপ্রকাশ-এ। ‘এডিটর’স টক’-এ ঢাকাপ্রকাশ-এর প্রধান সম্পাদক মোস্তফা কামালের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে। সেখানে তিনি জাতীয় পার্টির বর্তমান অবস্থা, কাউন্সিল, পার্টির সংসদীয় দলের নেতা রওশন এরশাদ ইস্যু, জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের প্রধান হুইপকে দলের সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, ইভিএম, বেকারত্ব, দুর্নীতি, অর্থপাচার, মন্দা, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্যসহ নানান বিষয়ে কথা বলেছেন। তার সেই কথোপকথনের চুম্বক অংশ ঢাকাপ্রকাশ-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি যদি আপনার এবং জাতীয় পার্টির অবস্থাটা আমাদের পাঠক দর্শকদের বলতেন।

জিএম কাদের: আমার ধারণা জাতীয় পার্টি খুব ভালো অবস্থানে আছে। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে একটা নতুন চোখে দেখছে। মোটমুটি যেটা আগে একেবারেই...আমাদের নেতা হোসেনই মোহাম্মদ এরশাদ সাহেবের সময়ে যেভাবে জাতীয় পার্টি সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ এবং ভক্তি-ভালোবাসা ছিল, এটা মাঝখানে একটু ভাটা পড়েছিল। এখন আবার এটি উঠতির দিকে। আমরা খুবই আশাবাদী জাতীয় পার্টি শুধু তার পুরনো গৌরবই ফিরে পাবে না, সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করি এবং আমরা দেশের জনগণের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।

ঢাকাপ্রকাশ: জাতীয় পার্টি নিয়ে জনগণের মধ্যে নানান কৌতুহল। আপনার সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়েও নানান কথা হচ্ছে। একদিকে জাতীয় পার্টি সরকারের সঙ্গে আছে। আবার বিরোধী দলেও আছে। তো এভাবে আসলে সরকারের ভিতরে থেকে কতটা সরকার বিরোধী হওয়া সম্ভব?

জিএম কাদের: না, আমরা সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই নেই। এই কথাটা কেন মানুষের মধ্যে ঢুকে গেছে সেটা আমি কিছুটা আঁচ করতে পারি। আমাদের কিছু কিছু বক্তব্য সংসদে সংসদ নেতার মাধ্যমে যেটা সংসদ সদস্যরা দিয়েছে সেটা খুব অল্প-মুষ্ঠিমেয় কয়েকজনের বক্তব্য। এটার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এই ভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে সত্যিকার অর্থে আমরা কোনো মহাজোট করে নির্বাচন করিনি। আমরা ১৪ দলের সঙ্গে একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং করেছিলাম। আমরা কিছু সিটে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিলাম। আর কিছু সিটে আওয়ামী লীগ আমাদের সমর্থন দিয়েছিল।

ঢাকাপ্রকাশ: সম্প্রতি আপনার দল থেকে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন আপনাকে বিরোধী দলীয় নেতা করার জন্য। এটা কীভাবে...

জিএম কাদের: এটায় আমি পড়ে আসছি। আমরা যখন সংসদে বিরোধী দল হয়েছি তখন থেকে আমরা বিরোধী দল হিসেবে কথা বলেছি। সরকারের যেখানে যেখানে সমালোচনা করা দরকার, সংশোধন করা দরকার, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি, আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। সংসদের বাইরেও আমরা বিভিন্ন প্রোগ্রাম করেছি। মানববন্ধন করেছি, সমাবেশ করেছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিক্ষোভ মিছিল করেছি। তবে আমাদের মধ্যে একটা বিষয় ছিল, দীর্ঘ দিন আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম, আওয়ামী লীগের সঙ্গে অনেক হৃদ্যতা ছিল। সুখে-দুঃখে আমরা তাদের পাশে ছিলাম। মহাজোটের মন্ত্রীও ছিলাম। কাজেই পারস্পারিক একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তো ছিলই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে যে একটা সম্পর্ক, একটা হিংসাত্মক এবং সহিংসতাপূর্ণ সম্পর্ক, আমাদের মধ্যে এরকম সহিংস কোনো সম্পর্ক ছিল না।

এখন আসি স্পিকারকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে। আমাদের দলের ভেতরের কিছু মানুষ যাদেরকে আমরা জয়গা মতো অবস্থান দিতে পারিনি বা যারা অনেক আগে দল ছেড়ে চলে গেছেন বা বিভিন্ন কারণে দলের সঙ্গে নেই দীর্ঘদিন। তারা হঠাৎ করে...আমার শ্রদ্ধেয় ভাবীকে (রওশন এরশাদ)…। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম উনি জাতীয় পার্টির সম্মেলন করার জন্য একটা চিঠি পাঠিয়েছেন। যেটা আমরা তিন বছর পর পর করি। যেটা আমরা করেছি। যেটাতে আমাকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত আমাদের মেয়াদ আছে। কিন্তু হঠাৎ করেই ২৬ নভেম্বর সম্মেলন কল করে চিঠি দিয়েছেন। এরপর পরই পার্টির পক্ষ থেকে উনাকে একটা সময় বেঁধে দেওয়া হয় তার সম্মেলনের প্রস্তাব প্রত্যাহার করার জন্য। না হলে আমরা ধরে নেব যে আপনি এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন এবং আপনার বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, তিনি সংসদের একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছেন।

এই অবস্থায় দলের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আসলে দলের এমপিরা বসে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, উনাকে বিরোধী দলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া দলের জন্য মঙ্গলজনক। আমি বলেছি সবাই মিলে যেটা সিদ্ধান্ত নেবেন আমি সেটাতে এতমত হব। সবাই শতভাগ এগ্রি করল যে উনাকে সসম্মানে এই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত। আমাকে বলল, নেক্সট ম্যান হিসেবে আপনি দায়িত্ব নেন। ওইভাবে একটা রেজুলেশন হলো এবং সেটা স্পিকারকে দেওয়া হলো।

ঢাকাপ্রকাশ: কিছুদিন আগে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে দল থেকে বাদ দিয়েছিলেন। এটার বিশেষ কোনো কারণ আছে কি?

জিএম কাদের: বিশেষ কারণ তো বটেই। খুবই ইন্টারেস্টি...। সে কিন্তু বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ হিসেবে নিজেই মুজিবুর রহমান চুন্নুসহ সবাইকে নিয়েই চিঠিটা দিয়েছে। কিন্তু দুই তিন দিন পর সে বলতে শুরু করে, এটা দেওয়া ঠিক হয়নি। আমরা সবাই রাজি ছিলাম না। অনেকে রাজি ছিল না। তখন সবাই বলল, হঠাৎ করে একটা লোক এরকম উল্টো কথা বলল। উনার মতো একটা লোককে এরকম একটা পজিশনে রাখা একটা সমস্যা। তখন সবার পরামর্শে সিদ্ধান্ত হল উনাকে দলের সব পদপদবি থেকে নিস্কৃতি দেওয়াটাই হবে আমাদের জন্য ভালো। সেটাই করা হয়েছে।

ঢাকাপ্রকাশ: বলছিলেন রংপুরে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন। এটা কি আপনার সাম্প্রতিক বিভিন্ন বক্তব্য, বিভিন্ন ইস্যু ধরে সরকারের সমালোচনা করা এটা জন্য হয়েছে?

জিএম কাদের: আমার ধারণা মানুষ আসলে সরকারের অনেক কাজকেই পছন্দ করছে না। কিন্তু যেকোনো কারণেই হোক একটা ভীতির পরিবেশ আছে দেশে। অনেকে কথাগুলো বলতে চাচ্ছেন না বা বলতে পারেন না। আমি সেই কথাগুলো বলছি।

ঢাকাপ্রকাশ: এই যে আপনি কথাগুলো বলছেন এই জন্য কি কোথাও থেকে আপনাকে কোনো ধরনের হুমকি...

জিএম কাদের:  না, এখন পর্যন্ত সে রকম কোনো ভয়ভীতি বা বাধার সৃষ্টি করা হয়নি।

ঢাকাপ্রকাশ: তাহলে কি আমরা এটা বলতে পারি যে রওশন এরশাদের নেতৃত্ব আলাদা কোনো জাতীয় পার্টি হচ্ছে না?

জিএম কাদের: না। জাতীয় পার্টি হওয়ার কোনো স্কুপ নেই। অন্য কোনো দল হওয়ারও কোনো স্কুপ নেই আমার মনে হয়।

ঢাকাপ্রকাশ: জাতীয় পার্টি কি আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিচ্ছে?

জিএম কাদের: হ্যাঁ, আমরা ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। দেখেন সামনের দিকে রাজনীতিটা বেশ অনিশ্চিত হয়ে আছে। সামনের দিকে একটা সুষ্টু নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটা দাবি আছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়েছে। স্বাভাবিক নির্বাচন হচ্ছে না। নির্বাচনে প্রশাসন সরকারের পক্ষে কাজ করছে। এটা একদম সত্য কথা। কিন্তু আমরা নির্বাচন বর্জন করিনি। আমরা সব নির্বাচনে যাচ্ছি। দেখতে চাচ্ছি যে সরকার শেষ পর্যন্ত কী করে। এখন যেটা হয়েছে যে, নির্বাচন ভালো হয়নি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার কি মনে হয় যে, সরকারি দলকে জেতানোর জন্য গোটা মাঠপ্রশাসনকে ওইভাবেই সাজানো হয়েছে বা আপনার সংশয়টা কেন?

জিএম কাদের: এটা খুব একটা ন্যাচারাল ব্যাপার হয়ে গেছে। আমরা করছি কি, আমাদের সমস্ত ক্ষমতা সরকারি দলের প্রধানের হাতে ন্যস্ত করেছি। রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষমতা, সকল বিভাগ,স্তম্ভ, যেটাকে আমি বলি, নির্বাহী বিভাগের প্রধান তো উনি বটেই, পার্লামেন্টেরও প্রধান এবং বিচার বিভাগেরও বেশির ভাগ জিনিস উনার প্রভাবের বাইরে নয়। অধস্তন আদালতের শতভাগ উনার দ্বারাই চলে, উনার মন্ত্রী দ্বারা চলে। তাদের পদোন্নতি, পদায়ন সবই উনার দ্বার চলে। সংবাধানের ১১৬ ধারায় এটা চলে। সংবিধানের ১০৯ ধারায় বলা আছে, এটা হাইকোর্টের আওতায় থাকবে।

উচ্চ আদালতেও রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেন। কিন্তু সবই করতে হয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে। দেখেন আমাদের এখানে সংসদীয় গণতন্ত্রের কথা বলা হয়। আসলে এটা কোনো গণতন্ত্র নয়। এটা আসলে একজনের শাসনব্যবস্থা। কারণ, সব ক্ষমতা ৭০ ধারা অনুযায়ি প্রধানমন্ত্রীর হাতে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ, ইলেকশন কমিশন সবই কিন্তু কন্ট্রোল একজনের হাতে। সেক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করা খুবই কঠিন। যদি উনি কিংবা উনার দল নির্বাচন করে। উনি যদি নির্বাচন না করেন তাহলে সেটা ভিন্ন কথা।

ঢাকাপ্রকাশ: নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে?

জিএম কাদের: নির্বাচনকালীন সরকার তো পরের কথা। যদি সরকার চায় তাহলে আমরা পার্টির ফোরামে বসে সিদ্ধান্ত নেব। একটা ফর্মুলা দেব। সরকার না চাইলে তো এগুলো অর্থহীন হয়ে যাবে। সরকার যদি না চায় তাহলে বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। তখন খুবই কঠিন হয়ে যাবে ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশন করা। কারণ, সকল ক্ষমতা একটা দলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সেভাবে নেই। যদিও আমাদের সংবিধানে আছে নির্বাচনের সময় সমস্ত নির্বাহী ক্ষমতা ইলেকশন কমিশনের হাতে থাকবে। কিন্তু তার কথা যদি কেউ না শুনে তাহলে কী হবে? আসলে আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা সত্যিকার অর্থেই একটা ভঙ্গুর ব্যবস্থা। বর্তমানে যে ব্যবস্থা আছে তাতে সরকার দলীয় প্রার্থীকে ফেল করানো প্রায় অসম্ভব।

ঢাকাপ্রকাশ: ইভিএম নিয়ে একটা জটিলা দেখা যাচ্ছে। সরকারের দিক থেকেও চাচ্ছে ইভিএম। নির্বাচন কমিশন থেকেও বলা হচ্ছে অন্তত অর্ধেক আসনে ইভিএম-এ নির্বাচন করতে। নিশ্চয়ই সবাই একটা ভালো নির্বাচন চায়। তাহলে সমাধানটা কি?

জিএম কাদের: সমাধান খুবই কঠিন। সবাই চাইলে লাভ হবে না। এটা সরকারকে চাইতে হবে, সরকার প্রধানকে চাইতে হবে। উনি যদি চান তাহলে সবকিছু সম্ভব।

ঢাকাপ্রকাশ: বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভুলগুলো আপনি জানেন। সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি বিশেষ কোনো পরিকল্পনা করতে পারে কি না যে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যাবে। এই হচ্ছে আমাদের পরিকল্পনা…

জিএম কাদের: আমি মনে করি, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আসা দরকার। একটা বেসিক পরিবর্তন দরকার। আমি সব সময় এগুলো বলছি। একইভাবে সবকিছুতে নিরপেক্ষতা আনা উচিত। নির্বাচন ফেয়ার হবে, বিজনেস ফেয়ার হবে, অ্যাপয়ন্টমেন্ট ফেয়ার হবে। প্রতিটি মানুষ যেন ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা মনে করে। মনে করে যেন ন্যায়বিচার পাচ্ছে। ধরেন একজন যদি ১০ হাজার টাকা বেতন পায়, আরেকজন যদি দশ গুণ বেশি পায় তাহলে তো ন্যায় বিচার হলো না। আমাদের কথা সর্বক্ষেত্রে ন্যায় বিচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। চাকরির ক্ষেত্রে মেধা, সততাকে দাম দিতে হবে। শুধু এই সরকারের আমলে নয়, এর আগেও দেখেছি আমরা। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালনের বদলে শিষ্টের দমন এখন আমাদের সমাজের রীতি হয়ে গেছে।

ঢাকাপ্রকাশ: এখান থেকে বের হওয়ার উপায় কী?

জিএম কাদের: আমরা যদি দুর্নীতিটাকে বন্ধ করতে পারি তাহলে এগুলো কিন্তু অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যাবে। সরকার যদি দুর্নীতি বিরোধী একটা অবস্থান নিতে পারে যে, দুর্নীতি করলে তার এমন শাস্তি হবে, যে শাস্তি মানুষ দেখে। দুর্নীতিটা যদি আমাদের সমাজ থেকে চলে যায় তাহলে দুবৃত্তায়নও চলে যাবে। তখন সাধারণভাবেই মানুষ সৎ হওয়ার চেষ্টা করবে। আর সৎ হলে সৎ মানুষের কদর বাড়বে।

ঢাকাপ্রকাশ: এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় সংকট কী বলে আপনি মনে করেন?

জিএম কাদের: দেশের সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে বেকারত্ব আর দুর্নীতি। মানুষের আয় প্রতিদিন কমে যাচ্ছে, দরিদ্রের সংখ্যা বাড়ছে। যদিও ফিগারে অনেক কিছু বলা হয়। আমি সেটা বলছি না। আমি ন্যাচারালভাবে দেখেছি। বেকারত্বটা দিনকে দিন বাড়ছে। এটা একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেভাবে অ্যাড্রেস করা হচ্ছে না। মহাজোট সরকার আসার সময় বলেছিল প্রতি ঘরে ঘরে একটা করে চাকরি দেওয়া হবে। এখন যেটা হচ্ছে প্রতি ঘরে ঘরে একটা করে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। বিদ্যুতের কারণে করখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বেকারের সংখ্যা বাড়ছে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি তো বিদ্যুতের কথা বলছেন। বিদ্যুৎ তো আমাদের এক সময় উদ্বৃত্ত থাকত…

জিএম কাদের: কথা হলো আমাদের দেশে বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি তৈরি করা হয়েছে ২০ হাজার মেগাওয়াটের মতো। আমাদের দরকার হলো ১৪ হাজার মেগাওয়াটের মতো। কিন্তু কোনোদিন যে আমাদের দেশ লোডশেডিং ছাড়া ছিল সেরকম একটা দিনও হয়নি। বিভিন্নভাবে বিদ্যুতের প্রোডাকশন করা হয়েছে অনেক বেশি। কিন্তু সেভাবে বিদ্যুৎ লাইনসহ সার্বিক ম্যানেজমেন্ট হয়নি।

ঢাকাপ্রকাশ: এই যে অনেক প্রকল্পে নানা বিশৃঙ্খলা। এটা কি অজ্ঞতা নাকি দুর্নীতির কারণে হয়েছে। আপনি কি মনে করেন?

জিএম কাদের: দেখেন আমার কাছে তো কোনো সাক্ষী প্রমাণ নেই। তবে যে সময়টায় মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেই সময়টায় গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি নামে একটা প্রতিষ্ঠান আছে, তারা কিন্তু খবর দিচ্ছে আমাদের দেশ থেকে প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। সেখানে আমাদের দেশি টাকায় সুইস ব্যাংকে চার লাখ কোটি টাকা থাকার কথা গ্লোবাল ইন্টিগ্রিটি ডিক্লেয়ার করেছে।

ঢাকাপ্রকাশ: সবাই বলছে আগামী বছরটা আমাদের জন্য তথা সারাবিশ্বের জন্য খারাপ সময়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সবাইকে মিতব্যয়ী হতে। আপনার কাছে কোনো আশার বাণী আছে কি?

জিএম কাদের: বিষয়টা হলো কি, সারা পৃথিবীতেই মন্দা হচ্ছে। সামনের দিকে মন্দা আরও বাড়বে। সারা পৃথিবী কিন্তু ওইটার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেকোনোভাবেই হোক তারা বিভিন্ন প্রোগ্রাম নিচ্ছেন। যেমন প্রধানমন্ত্রী মিতব্যয়ী হতে বলেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটার সঙ্গে একমত। কিন্তু বাস্তবে আমি এটার কোনো প্রতিফলন এখনো দেখিনি। আমার চোখে পড়েনি যে সরকার খুব বেশি মিতব্যয়ী হচ্ছে। দরিদ্র মানুষেরা বড় বেশি কষ্টে আছে। দৃব্যমূল্যের যে চাপ সেটার চাপ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের উপর দিয়ে। এটা সার্বিকভাবে একটা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে এবং বিশৃঙ্খলার কারণ হতে পারে। সেই কারণে আমি মনে করি, এসব বিষয়ে একটু দৃষ্টি দেওয়া উচিত।

ঢাকাপ্রকাশ: দীর্ঘ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

জিএম কাদের: আপনাকে এবং ঢাকাপ্রকাশ-কে ধন্যবাদ।


এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

বিভিন্ন স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্টেশন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার মেট্রোরেল চালু করা হবে বলে তারা আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।

Header Ad
Header Ad

গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পাথর বোঝাই ট্রাকে অভিযান চালিয়ে ২৬ কেজি গাঁজাসহ ট্রাকটি জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ সময় ওই ট্রাকের চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলার বিলকলমী সরকারপাড়া গ্রামের মৃত শহীদুল্লা সরকারের ছেলে ট্রাক চালক বিপুল সরকার (৩৫) ও হেলপার পাবনার সাথিয়া উপজেলার চিনানাড়ী গ্রামের আবু দাউদ আকাশ (২৫)।

শনিবার সকালে গাইবান্ধা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহ্-নেওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বুজরুক বোয়ালিয়া এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসময় কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা পাবনাগামী একটি পাথরবোঝাই ট্রাক থামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে ২৬ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়। পরে ট্রাকটিসহ গাঁজাগুলো জব্দ করা হয়। সেইসঙ্গে ট্রাকের চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করে হয়েছে বলেও জানান জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

Header Ad
Header Ad

আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার

আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার আদমদীঘিতে বিএনপি অফিসে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতা তোহাবিন আলম তোহা (২৫) গ্রেপ্তার হয়েছেন। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার কোমারপুর চারমাথা এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। পরদিন শনিবার (২৬ এপ্রিল) তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

তোহা আদমদীঘি উপজেলার কোমারপুর গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। তিনি ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ৪ আগস্ট আদমদীঘিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ককটেল, পেট্রোল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে বিএনপি অফিসের সামনে হামলা চালান। ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর পর তারা অফিসে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় একই বছরের ২৫ আগস্ট রাতে ১২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও প্রায় ২৫০ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দায়ের হয়।

আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তোহাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং মামলার আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি