হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ এবং প্রতিরোধে যেসব করণীয়

ছবি: সংগৃহীত
হার্ট অ্যাটাক (মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন) একটি মারাত্মক মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি, যা দ্রুত শনাক্ত করা এবং তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণ:
১. বুকের ব্যথা বা অস্বস্তি – এটি সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ, বুকের মাঝখানে চাপ বা জ্বালা অনুভূত হতে পারে, যা কিছু মিনিট স্থায়ী হতে পারে বা আস্তে আস্তে বাড়তে পারে।
২. শ্বাসকষ্ট – হালকা বা তীব্র শ্বাসকষ্ট হতে পারে, বিশেষ করে বিশ্রাম নেওয়ার সময় বা সামান্য পরিশ্রমে।
৩. ঘাম হওয়া – অকারণে ঠান্ডা ঘাম হতে পারে, যা একটি চিহ্ন হতে পারে।
৪. ক্লান্তি বা দুর্বলতা – কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ অবসাদ বা ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে।
৫. বমি বা বমি ভাব – কিছু ক্ষেত্রে বুকে ব্যথার সঙ্গে বমি ভাব হতে পারে বা বমি হয়ে যেতে পারে।
৬. ঘাড়, চোয়াল, পিঠ বা বাহুতে ব্যথা – বিশেষ করে বাম হাত, ঘাড় বা পিঠে ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
৭. হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা – বুক ধড়ফড় বা অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন অনুভূত হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের সময় কী করবেন?
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত নিচের পদক্ষেপগুলো নিতে হবে:
১. অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা নিন: দ্রুত ৯৯৯ বা নিকটস্থ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি নম্বরে কল করুন এবং রোগীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যান।
২. বিশ্রাম নিন ও নড়াচড়া কম করুন: রোগীকে শান্ত রাখতে সাহায্য করুন এবং তাকে শুয়ে বা বসে থাকতে বলুন। হাঁটাহাঁটি বা দৌড়াদৌড়ি থেকে বিরত থাকুন, এতে হৃদপিণ্ডের ওপর চাপ বাড়তে পারে।
৩. অ্যাসপিরিন গ্রহণ করুন (ডাক্তার অনুমোদিত হলে): যদি রোগীকে আগে থেকেই অ্যাসপিরিন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, তবে ৩০০ মিগ্রা অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খেতে দিন। এটি রক্তের প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
৪. অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করুন: রোগী যদি শ্বাসকষ্টে ভোগে, তাকে একটি বায়ু চলাচল সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে যান এবং যদি সম্ভব হয়, অক্সিজেন সাপোর্ট দিন।
৫. সিপিআর (CPR) প্রয়োগ করুন (প্রয়োজনে): যদি রোগী অজ্ঞান হয়ে যায় এবং শ্বাস নিতে না পারে, তবে যে কেউ CPR জানেন, তাকে দ্রুত প্রয়োগ করুন।
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে করণীয়:
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুন: কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং শাকসবজি ও ফলমূলের পরিমাণ বাড়ান।
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলা করুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং রক্তচাপ, সুগার ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা করান।
স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন ও পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিহ্নিত করলে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিলে তার ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। তাই সচেতন থাকুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন!
