মেঘনা আলমের মুক্তির দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে ২৭ বিশিষ্ট নারীর স্মারকলিপি

মডেল ও সমাজকর্মী মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত
মডেল ও সমাজকর্মী মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্ট ২৭ জন নারী। রোববার (২০ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বরাবর পাঠানো এক স্মারকলিপিতে তারা মেঘনার নিঃশর্ত মুক্তি, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং সংশ্লিষ্টদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে স্বাক্ষরকারী নারীরা দেশের বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিত্ব করছেন—তাদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সংস্কৃতিকর্মী, লেখক ও সংগীতশিল্পীরা। তারা মনে করেন, মেঘনাকে যেভাবে আটক করা হয়েছে, তা একজন নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৯ এপ্রিল কোনো পরোয়ানা ছাড়াই রাজধানীর নিজ বাসা থেকে মেঘনা আলমকে আটক করা হয়। এ সময় প্রায় ৩০ জন পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তার সমন্বয়ে অভিযানে অংশ নেওয়া হয়, যখন মেঘনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারে (লাইভ) ছিলেন। আটক হওয়ার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর তাকে আদালতে হাজির করে ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’, ‘কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করা’ এবং ‘অর্থনৈতিক ক্ষতির ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
স্মারকলিপিতে প্রশ্ন তোলা হয়—একজন নারী নাগরিককে গ্রেপ্তারে এত বড় পরিসরে পুলিশি তৎপরতা কেন প্রয়োজন হলো? কে এই গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন? কোন প্রক্রিয়ায় তাকে “জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি” হিসেবে চিহ্নিত করা হলো? তারা আরও বলেন, "যখন দেশজুড়ে সাধারণ নাগরিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, তখন একটি বাসা থেকে একজন নারীকে গ্রেপ্তারে এতসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা কতটা যৌক্তিক?"
স্মারকলিপিতে সইকারী বিশিষ্ট নারীদের মধ্যে রয়েছেন—আইনজীবী ইশরাত জাহান ও তাবাসসুম মেহেনাজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মীর্জা তাসলিমা সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, নৃবিজ্ঞানী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসরিন সিরাজ, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, আলোকচিত্রী পদ্মিনী চাকমা, লেখক ও গবেষক পারসা সানজানা, সমাজকর্মী রাবেয়া হক, প্রাবন্ধিক তুলি রহমানসহ আরও অনেকে।

তারা মেঘনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ঘটনার পেছনে থাকা কারণগুলো পরিষ্কার করতে সরকারের কাছে জবাবদিহিতা দাবি করেন। একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় শক্তির এমন ব্যবহারে নারীদের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।
