প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত

জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ইংরেজি ও টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ছুরিকাঘাতে জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৩) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তিনি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের ছাত্র এবং ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা ছিলেন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৪টার পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে। বনানী থানার ওসি রাসেল সারোয়ার জানান, সংঘর্ষের সময় ইংরেজি বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর ছুরিকাঘাতে পারভেজ গুরুতর আহত হন। তাকে দ্রুত কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং সহপাঠীদের দাবি, ঘটনার শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি দোকানে। সেখানে বন্ধুদের সঙ্গে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন পারভেজ। তাদের পাশেই ছিলেন ইংরেজি ও ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সদ্য ভর্তি দুই ছাত্রী, যারা পরে অভিযোগ করেন পারভেজ তাদের উত্যক্ত করেছেন।
বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দপ্তরে জানানো হলে পারভেজকে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি দাবি করেন, কাউকে উত্যক্ত করেননি, বরং বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের আলাপেই হাসাহাসি করছিলেন। প্রক্টরের অনুরোধে তিনি ক্ষমাও চান।
তবে এই ঘটনার পরপরই উত্তেজনা বাড়ে। অভিযোগ আছে, ইংরেজি বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী পারভেজকে হুমকি দেন এবং ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে কয়েকজন বহিরাগত এনে তাকে আক্রমণ করেন। একপর্যায়ে তার বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ছুরিকাঘাতের পর রক্তাক্ত পারভেজ একটি চেয়ারে বসে আছেন এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী তার অবস্থা বোঝার চেষ্টা করছেন। পরে সহপাঠীরা তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু পথেই তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোশাররফ হোসেন বলেন, "এটা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।" ঘটনার সময় তিনি বনানী থানায় উপস্থিত ছিলেন, তবে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
রাত ১১টার দিকে পারভেজের মরদেহ কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাতেই বনানী ক্যাম্পাসের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করেন। সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশের একটি পোস্টে ঘটনাটিকে 'সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে উল্লেখ করে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। পোস্টে নিহত পারভেজের ছবিও শেয়ার করা হয়।
