রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

খেলারাম দাতার কোঠা

খেলারাম দাতার কোঠা

ঢাকার কাছাকাছি যতগুলি প্রত্নতত্ত্ব ভবনের দেখা মিলে, তাদের মধ্যে একইসঙ্গে দৃষ্টিনন্দন, চমকপ্রদ ও কৌতুহল উদ্দীপক স্থাপনা বলতে গেলে নবাবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত খেলারাম দাতার কোঠার কথা মাথায় আসে। দ্বিতল ভবনটি আনুমানিক ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বা বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কয়েক বছর আগে এটিকে সংস্কার করেছে। তবে এতে পরিচিতিমূলক কোনো তথ্য না থাকায় এর সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানতে পারেন না দর্শনার্থীরা।

দুর্গ, মন্দির, বাসভবন... একেকজনের একেক মত

ভবনটি কী মন্দির নাকি আখড়া? নাকি আবাসিক ভবন? এ নিয়ে যেমন মতবিরোধ রয়েছে, তেমনই মতবিরোধ রয়েছে ভবনটির নির্মাতা খেলারামের পুরো নাম নিয়ে। আবার সেই একই রকমের মতবিরোধ রয়েছে তার পরিচয় ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে।

কে ছিলেন খেলারাম?
বাংলাপিডিয়ার মতে তার নাম ছিল খেলারাম দত্ত বা খেলারাম দাদা। তিনি ছিলেন জমিদার। কিন্তু বিভিন্ন গবেষকের বিভিন্ন বইতে বাংলার জমিদারদের যত নামের তালিকা পাওয়া যায়, তার কোনো তালিকাতেই খেলারামের নাম নেই।

কয়েক বছর আগে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটি সংস্কার করেছে

স্থানীয় লোকজনের মতে তার নাম ছিল খেলারাম দাতা। উইকিপিডিয়া বা নবাবগঞ্জ উপজেলার সরকারি ওয়েবসাইটেও তার নাম খেলারাম দাতা হিসেবেই বলা হয়েছে। তাকে যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, বলা যায় তিনি ছিলেন বাংলার রবিন হুড।

উইকিপিডিয়ায় বলা হয়, তিনি ছিলেন দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার। তবে ডাকাতি করে পাওয়া ধন সম্পদ নিজে ভোগ না করে দরিদ্রদের মাঝেই বিলিয়ে দিতেন। এই কারণেই স্থানীয়ভাবে তিনি দাতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন বেশি। শেষ বয়সে তিনি ধর্মকর্মে আসক্ত হয়ে পড়েন। তখন এই মন্দির নির্মাণ করেন। কিন্তু সরকারি ওয়েবসাইটে যা তথ্য দেওয়া আছে, তাকে সময়ের বিচারে এবং ভবনটির কাঠামোর সঙ্গে মেলানো প্রায় অসম্ভব।

সরকারি ওয়েবসাইটে বলা হয়, ওড়িশা (তৎকালীন উড়িষ্যা) থেকে আনুমানিক ৫০০ বছর আগে তিনি এখানে এসে বসবাস শুরু করেছিলেন। এলাকা পরিষ্কার করে জনবসতি গড়ে তুলেছিলেন। তাদের মতে এটি একটি দূর্গ। কিন্তু বাড়ির নির্মাণকৌশল ও কাঠামো অনুযায়ী বাড়িটি ১০০-১৫০ বছরের বেশি পুরোনো হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ ছাড়া দূর্গের কোনো কাঠামোতেও এ বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

ভবনের বাইরের দেয়ালে ডিজাইন ডিটেইল

বাড়ির কাঠামো:
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কয়েক বছর আগে বাড়িটি সংস্কার করেছে। উইকিপিডিয়ার মতে এটি ছিল বিগ্রহ মন্দির। এর প্রথম তলায় দেখার মতো খুব বেশি কিছু নেই। ফাঁকা ঘরগুলির অনেকাংশই মাটির নিচে দেবে থাকার ফলে প্রায় সব বন্ধই থাকে। দোতলায় রয়েছে মাঝখানে একটি বড় অষ্টভূজাকৃতির ঘর। এর চারিদিকে রয়েছে ৮টি ছোট ঘর। আকারে সবগুলি ঘর সমান হলেও চার ধারের ঘরগুলির চাইতে চার কোণার ঘরগুলি তুলনামূলক ভাবে উচ্চতায় খানিকটা নিচু। প্রতিটির ছাদ চতুর্ভূজাকার হলেও সরু হয়ে উপরে এক বিন্দুতে মিলেছে।

মাঝখানের ঘরের ছাদটি অষ্টভূজাকৃতির, ঘরের ভেতরে চারিদিকে রয়েছে বেশ নিখুঁত দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ। পুরো ছাদটির গোড়ার অংশ ঘুরে রয়েছে সিমেন্টে খোদাই করা একটি সারি। দরজার উপরিভাগ থেকে এই সারির সামান্য নিচ পর্যন্ত চার ধারে রয়েছে চতুর্ভূজাকার নকশা আর চার কোণে রয়েছে খিলান আকারের নকশা। চতুর্ভূজাকার নকশাগুলির মধ্যে কিছুটা মিল থাকলেও খিলানাকৃতির নকশাগুলি একেকটি অন্যটি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সংস্কারের সময় এই নকশাগুলি ঠিক রাখার প্রয়াসটি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। তবে এগুলিকে রঙ করতে গিয়ে কিছু কিছু জায়গায় রং কিছুটা ছড়িয়ে গেছে। আরেকটু সচেতন হলে ভালো হতো। তবে বিস্মিত হয়েছি বেড়াতে আসা কিছু অসচেতন মানুষের কাণ্ড দেখে। রঙ করা দেয়ালে এত উঁচুতে উঠে কীভাবে যে মানুষ তাদের নাম লিখতে পারে, ভেবেই পাইনি!

দ্বিতল ভবনটির প্রতিটি ঘরই একেবারে ফাঁকা

একটি ছিল স্নানঘর, যাতে রয়েছে একটি চৌবাচ্চা। এটি নিয়ে গল্প আছে, যা পরে বলছি। নিচ তলার ঘরের একটিতে রয়েছে একটি সিঁড়ি, আরও নিচে নামবার জন্য। এখন সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এই সিঁড়িটির কারণেও বেশ কিছু গল্প শোনা যায়। একটি মত হলো, এটি ছিল একটি সুড়ঙ্গ, যে পথে খেলারাম পার্শ্ববর্তী ইছামতি নদীর ঘাট পর্যন্ত চলে যেতে পারতেন। তার ডাকাতির মাল নৌকা থেকে সরাসরি এই পথেই নিয়ে আসতে পারতেন। আবার কোনো বিপদ হলে এই পথেই তিনি পালিয়ে যেতে পারতেন নৌকায়। এই মতটি যে খুব অমূলক, তা বলা যাবে না। লালবাগ কেল্লাতেও এমন একটি সুড়ঙ্গ ছিল নদী পর্যন্ত যাবার। নরসিংদীর ইদ্রাকপুর দূর্গতেও ছিল এমন একটি সুড়ঙ্গ।

অন্য মতটি হয়তোবা গল্পই! কেউ কেউ বিশ্বাস করেন এটি ছিল একটি তিনতলা (কেউ বলেন পাঁচ তলা) বাড়ি, যার নিচের তলাগুলি মাটির নিচে দেবে গেছে। নিচতলার ঘরগুলি ছিল খেলারামের ধনসম্পদ লুকিয়ে রাখার গুদাম। এই সিঁড়ি ছিল সেই ঘরগুলিতে যাওয়ার জন্য।

মূল ভবনটির পাশে একটি অত্যন্ত নিখুঁত কারুকার্যখচিত দ্বিতল গোলাকার ছোট অবকাঠামো রয়েছে। উপরের তলা চারিদিকে খোলা। অনেকটুকু দেয়াল আবার চিনি-টিকরিতে মোড়া। স্থানীয়দের মতে, এটি ছিল খেলারামের ওয়াচ-টাওয়ার।

তবে গল্প যাই হোক, এটি মোঘল স্থাপত্য ও ইউরোপীয় স্থাপত্যের একটি চমৎকার সংমিশ্রণে নির্মাণ করা ভবন। একদিকে যেমন চুন-সুড়কির মিশ্রণে প্লাস্টারের কাজ করা হয়েছে, আবার লোহার বিমে ঢালাইয়ের কাজও রয়েছে। যে কারণেই এটিকে খুব বেশি পুরাতন ভাববার অবকাশ নেই। ৫০০ বছর তো নয়ই!

ভবনের পেছনের দেয়াল

ভবনটির অদূরেই রয়েছে একটি বড় পুকুর। কথিত আছে, খেলারাম এই পুকুরটি কাটিয়েছিলেন এলাকার মানুষের পানির জোগান দেওয়ার জন্য।

খেলারামের উপাখ্যান:
স্থাপনাটি দূর্গ, মন্দির, বিগ্রহ মন্দির, আখড়া বা আবাসিক ভবন যেটিই হোক না কেন, খেলারাম যে ডাকাতি করতেন এবং প্রাপ্ত সম্পদ দরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দাতা হিসেবে সম্মানিত ছিলেন, এই স্বীকৃতি প্রায় সব তথ্যেই মেলে। তবে এর চাইতে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না। এবার আসি স্থানীয়দের গল্পে। তাদের মতে ঘটনাটি প্রায় ২০০ বছর আগেকার।

খেলারাম দাতার ভবনটির কাছেই রয়েছে একটি পুকুর। এই পুকুরে সাধারণ মানুষ এসে কিছু চাইলে তা নাকি পূরণ হতো। স্নান করতে গিয়ে ডুব দিলেই হাতে উঠে আসতো মূল্যবান কিছু। তা হতে পারে স্বর্ণ, রৌপ্য বা হীরে-জহরত। কিন্তু দিনে যতবারই ডুব দিক না কেন, একবারের বেশি কেউ কিছু পেত না। যে কারণে পুকুরটিতে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হতো।

চিনি-টিকরির কাজে সজ্জিত ওয়াচ টাওয়ার

খেলারাম যত দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দারই হয়ে থাকুন না কেন, তিনি ছিলের ভীষণ রকমের মাতৃভক্ত। মা যা কিছু চাইতেন, বা যা কিছু আদেশ করতেন, অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন খেলারাম। তার মা প্রায়ই চাইতেন সবার সঙ্গে পুকুরে গিয়ে স্নান করতে। কিন্তু মায়ের এই একটি মাত্র বিষয়ে খেলারামের ঘোর আপত্তি ছিল। খেলারাম চাইতেন না সবার মাঝখানে তার মা পুকুরে নামুন আর ভেজা কাপড়ে বাসায় ফিরুন। এজন্য উপরের একটি ঘরে একটি চৌবাচ্চা বানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এই পুকুর থেকেই লোক দিয়ে কলস বা হাঁড়িতে করে প্রতিদিন নতুন করে পানি আনা হতো মায়ের স্নানের জন্য। মা এতে ভেসে ভেসে স্নান করতে পারতেন।

একদিন নাকি মা বলেছিলেন একটু বেশি করে দুধ আর পাকা কলা নিয়ে আসার জন্য। খেলারাম দুধ এনে স্নানঘরের চৌবাচ্চা ভরে ফেলেছিলেন। পাশে রেখে দিয়েছিলেন এক কাঁদি পাকা কলা, যেন মা দুধে ভেসে ভেসে স্নান করতে করতে কলা খেতে পারেন।

অষ্টভূজাকৃতি ছাদের একপাশে নকশা

মা একদিন টের পেলেন খেলারাম এলাকায় নতুন আসা এক ধনী লোকের বাসায় ডাকাতি করার পরিকল্পনা করেছেন। মা চাইলেন না প্রতিবেশীর বাড়িতে ছেলে ডাকাতি করুক। নিষেধ করে দিলেন তিনি এই ব্যাপারে। কিন্তু খেলারামের তর সইল না। ডাকাতি করতে গেলেন এক রাতে। বাড়ির লোকজন টের পেয়ে চেঁচামেচি আরম্ভ করায় একজনকে আঘাত করেন খেলারাম। সঙ্গে সঙ্গে ওই লোক মারা যান। সকালে ঘুম থেকে উঠে খবর পেয়ে যান মা। খেলারামকে ডেকে ভীষণ বকাঝকা করেন। খেলারাম কথা দেন সমস্ত ডাকাতি করা মাল ফিরিয়ে দিয়ে আসবেন। কিন্তু যে লোকের প্রাণ গেল, তার পরিবারের কী হবে? খেলারাম বললেন তাদের অনেক ধন সম্পদ দিয়ে দেবেন। কিন্তু মা জানালেন, ধন সম্পদ দিলেও লোকটির প্রাণ তো ফেরানো যাবে না। অবাধ্য ছেলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান, পুকুরে যাবেন বলে। এই যে পুকুরে নেমে ডুব দিলেন, আর উঠে আসলেন না।

খেলারাম খবর পেয়ে দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপ দিলেন পুকুরে। সমস্ত লোক লাগিয়ে দিলেন। ডুব দিয়ে, জাল ফেলেও মাকে পাওয়া গেল না।

শত চেষ্টা স্বত্ত্বেও বিফল হয়ে খেলারাম যখন বাড়ি ফিরছেন, তাকিয়ে দেখলেন বাড়িটি ধীরে ধীরে দেবে যাচ্ছে মাটির নিচে। উল্টোমুখে ঘুরে দৌড় দিলেন খেলারাম। আর তাকে কোনোদিন কেউ ফিরতে দেখেনি।

দোতলায় ঘরগুলো একটি থেকে অন্যটি একেবারেই পৃথকভাবে নির্মিত

কেউ কেউ বিশ্বাস করে খেলারাম মায়ের মতোই পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে ডুবে গেছেন। কেউ কেউ বিশ্বাস করে বাড়ির ভেতরের নিচের কোনো তলায় চাপা পড়ে গেছেন তিনি। এরপর বেশ কিছুদিন খালি পড়ে ছিল বাড়িটি। তারপর স্থানীয় লোকজন এসে লুটপাট করে বাড়ি খালি করে ফেলে।

এই গল্পটি স্থানীয়দের মুখে মুখেই শোনা যায়। বিশ্বাস করবেন? সরকারি ওয়েবসাইটেই যখন ৫০০ বছরের গপ্পো জুড়ে দেওয়া আছে, না হয় স্থানীয়দের গল্পটিই বিশ্বাস করুন!

কীভাবে যাবেন:
গুলিস্তান থেকে বাস পাওয়া যায় নবাবগঞ্জের। বাসস্ট্যান্ডে নেমে যেতে হবে কলাকোপার পথে। পথেই পড়বে। সিএনজি অটোরিকশা বা রিকশাতেও যাওয়া যায়।

এসএন

Header Ad
Header Ad

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিন্ধুর উপনদী ঝিলামে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এর ফলেই হঠাৎ করেই মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো মানুষ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে নদীর পানি হু হু করে বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দুনিয়া নিউজ’ জানায়, ভারত কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়েই শনিবার সকাল থেকে বাড়িয়ে দেয় পানির প্রবাহ। এতে করে অনন্তনাগ অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পানি চাকোঠি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। মসজিদের মাইকে সতর্কতা প্রচার করা হয়, স্থানীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ভারত এ হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রতিক্রিয়ায় একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি।

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদী থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা একে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে বিবেচনা করবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতারাও। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।”

এদিকে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী জানালেন, পানির প্রবাহ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ড্রেজিং করে পানির গতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

নিশ্বাস বন্ধ করে দেওয়া এক ফাইনাল, যেখানে নাটক, উত্তেজনা, এবং আবেগ সবই একসঙ্গে ঠাঁই পেয়েছে। কোপা দেল রে’র এবারের ফাইনালে বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ উপহার দিয়েছে পাঁচ গোলের রোমাঞ্চ। আর শেষ হাসি হেসেছে কাতালানরা—১১৬তম মিনিটে জুলস কুন্দের দুর্দান্ত গোলে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালকে শিরোপা জিতে নেয় বার্সেলোনা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) ভোরে সেভিয়ার এস্তাদিও দে লা কার্তুইয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এই ঐতিহাসিক ম্যাচ। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ম্যাচের ১২ মিনিটে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে বার্সাকে এগিয়ে দেন পেদ্রি। প্রথমার্ধে রিয়াল খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি খেলোয়াড়দের নিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় আনচেলত্তির দল।

৭০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান। এরপর কর্নার থেকে চুয়ামেনির হেডে রিয়াল নেয় লিড। কিন্তু সেই আনন্দ টিকল না বেশি সময়। ৮৪ মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে ফেরান তোরেস গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। গোলরক্ষক কর্তোয়া ও রুডিগারের ভুলের সুযোগ কাজে লাগান তরেস।

৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে বার্সা আবার ফিরে পায় নিয়ন্ত্রণ। একাধিক সুযোগ তৈরি করে তারা। শেষ পর্যন্ত ১১৬ মিনিটে লুকা মদ্রিচের পাস কেটে নিয়ে দূর থেকে নিচু শটে গোল করে নায়ক হয়ে ওঠেন ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে। বার্সার জার্সিতে এটাই ছিল তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোল।

রিয়াল যদিও শেষ দিকে আবার পেনাল্টির দাবি তোলে, কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়। উত্তেজনায় ফেটে পড়ে রিয়ালের বেঞ্চ, যার ফল হিসেবে দুই বদলি খেলোয়াড় রুডিগার ও লুকাস ভাজকেজ দেখেন লাল কার্ড।

এই জয়ে চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার দ্বিতীয় শিরোপা এল ঘরে। এর আগে স্প্যানিশ সুপার কাপেও তারা হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে। কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এটি বার্সার ৩২তম শিরোপা—যা সর্বোচ্চ।

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি