খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বেনাপোল দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। ফলে ভারত থেকে চাল আনতে আসা ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।
সরকার গত বছরের ১৭ নভেম্বর মোট ৯২ জন আমদানিকারককে সেদ্ধ চাল ২ লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিক টন এবং আতপ চাল ১ লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন আমদানির অনুমোদন দেয়। বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী আমদানি কার্যক্রম শুরুর পর পাঁচ মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে মোট ২১ হাজার ৩৬০ মেট্রিক টন চাল দেশে প্রবেশ করে। সর্বশেষ গত রবিবার, ১৩ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ২০০ মেট্রিক টন চাল দেশে আসে।
প্রথমে অনুমতির মেয়াদ ছিল ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত, তবে আশানুরূপ আমদানি না হওয়ায় চার ধাপে মেয়াদ বাড়ানো হয়। শেষ পর্যন্ত চতুর্থ মেয়াদের সময়সীমা ছিল ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা আরো ১৫ দিনের সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।
চাল আমদানিকারক আলাউদ্দিন জানান, সরকারের চুক্তি অনুযায়ী ১৫ এপ্রিল ছিল চাল আমদানির শেষ সময়। অথচ এখনো ভারতীয় সীমান্তে তার এক হাজার মেট্রিক টন চাল দেশের প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
আরেক আমদানিকারক মো. মোশাররফ হোসেন জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা মোটা চাল পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ৫৩ টাকায় এবং চিকন চাল ৬৫ থেকে ৭২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মোটা চালের মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ৩৯০ থেকে ৪০০ মার্কিন ডলার এবং চিকন চালের মূল্য ৪৫০ থেকে ৪৭০ মার্কিন ডলারের মধ্যে ছিল। এসব চাল আমদানির ক্ষেত্রে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) শামীম হোসেন জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে মঙ্গলবার থেকে ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, "চাল আমদানির চতুর্থ ও সর্বশেষ বর্ধিত মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৫ এপ্রিল। এই সময়সীমার মধ্যে ২১ হাজার ৩৬০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।"
চাল আমদানির অনিশ্চয়তা এবং সময়মতো সিদ্ধান্ত না আসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমদানিকারকরা। ব্যবসায়ীরা দ্রুত নতুন নির্দেশনার আশায় রয়েছেন, যাতে করে সীমান্তে আটকে থাকা চাল দেশে প্রবেশ করানো যায় এবং বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়।
