রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

যেসব কারণে এবারের জাতিসংঘ সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ গ্রাফিক্স

জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উক্ত অধিবেশনে বক্তব্যও দেবেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা এমন সময় জাতিসংঘের এই অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন যার মাত্র দেড় মাস আগে বাংলাদেশে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের শাসন ক্ষমতাকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হটিয়ে এখন দেশটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনা করছে। ফলে এবারের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য একটা ভিন্ন পরিস্থিতিতে হচ্ছে।

বাংলাদেশের জন্য এবারের সম্মেলন কেন গুরুত্বপূর্ণ

বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া এবং ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছে।

এর আগে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ইস্যুতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা অনেক দেশের সাথে বাংলাদেশের একপ্রকার টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশের পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা করে আসছিল। ফলে এই সম্মেলনকে বাংলাদেশের জন্য ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি প্রেক্ষাপট হিসাবে বিশ্লেষকদের অনেকেই দেখছেন।

এমন মনোভাব পরিষ্কার হয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের বক্তব্যেও। তিনি বলেছেন, ‘এবারের অধিবেশন দেশের জন্য বিশ্বসভায় নতুন পদচারণা এবং বিশ্ব দরবারে নতুনভাবে বাংলাদেশকে তুলে ধরার বিশাল সুযোগ। বাংলাদেশে জাতিসংঘের সদস্যপদ প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্ণ হওয়ায় এবারের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বাংলাদেশ একটি উচ্চ পর্যায়ের রিসেপশন আয়োজন করেছে যেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান, জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা, কিছু সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নেবেন।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ূন কবির ধারণা দিয়েছেন, এবারের অধিবেশনে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপট, এই মুহূর্তে কী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছেন, ভবিষ্যতে তারা কী করতে চান, এ বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা এবং তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আহ্বান জানানো হতে পারে। ড. ইউনূসের মতো ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া এবং বাংলাদেশের হয়ে কথা বলাটা একটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের জায়গা, বিভিন্ন সংস্কারের কৌশলগত বা টেকনিক্যাল দিকে সাপোর্ট, বিদেশে টাকা পাচার, অত্যাচার-নির্যাতন নিয়ে চলমান তদন্ত, এসব বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতার পথ সুগম হবে।’

আরেক সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহমুদ হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনীতির যে সংকটের মধ্য র্য়ে যাচ্ছে, সেখানে বৈদেশিক সাহায্য ও বিনিয়োগ আনতেও এবারের সম্মেলনটিকে কাজে লাগানো হতে পারে। আমাদের তো দরকার এখন আর্থিক সহায়তা এবং সহযোগিতা। ফলে ক্ষয়ক্ষতি থেকে উত্তরণে এবং একটা টেকসই আর্থিক উন্নয়নে ড. ইউনূস বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর কাছে সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল সাইডলাইনে আলোচনা করবেন আমার ধারণা।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফেরদৌস মনে করেন, উন্নয়ন, ঋণ বা আর্থিক সহায়তার মতো বিষয়গুলো কমিটি পর্যায়ের আলোচনায় আসবে এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল সেখানে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে তার ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের জন্য এবারের পরিষদ কতদূর ফলপ্রসূ হবে।

গত বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ইস্যু জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অন্যতম উদ্বেগর জায়গা ছিল। সেখানেও বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কর্মকর্তারা পরিবর্তিত চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহমুদ হাসান মনে করেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, মানবাধিকার এমন বিষয়গুলোও তাদের আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব সহকারে আসবে। বর্তমানে যে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে, সেটা তারা তুলে ধরতে চাইবেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার পর আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে শুভেচ্ছা পেয়েছেন। বিশ্বপরিসরে খ্যাতির কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশের জন্য একটা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারবেন বলে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন।

সাবেক কূটনীতিবিদ নাসিম ফেরদৌস মনে করেন, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক পরিচিতি এবং একরকম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জায়গা থাকায় তাঁর বক্তব্য একটা বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে শোনা হবে।

অর্থনীতির বাইরে প্রযুক্তিগত দিক, তরুণ প্রজন্মের অংশিদারিত্ব, রাজনৈতিক সহযোগিতা পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সদিচ্ছার মতো দিক নিয়ে আলোচনাও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের যেসব অগ্রাধিকারের যেসব জায়গা রয়েছে সেগুলো বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, তাদের প্রতিনিধিদল সেসব ইস্যু সংক্রান্ত ইভেন্টে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে। এবারের অধিবেশন বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে বিস্তৃত ও সুদৃঢ় করবে বলে আশাবাদও জানিয়েছেন তিনি।

২৭ তারিখ বক্তব্যে যে বিষয়গুলো উঠে আসবে তার একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে।

সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের বিবরণ, জনগণকেন্দ্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু ইস্যু, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবস্থান, উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদ পাচার প্রতিরোধ, নিরাপদ অভিবাসন, প্রযুক্তির টেকসই হস্তান্তর, ফিলিস্তিন–এমন বিভিন্ন বিষয় আসতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

ভারত প্রসঙ্গ

এমন অধিবেশনে সভার বাইরে নেতাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক একটা বড় গুরুত্ব বহন করে। সেক্ষেত্রে প্রতিবেশি ভারত বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বের জায়গা। তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নিউইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেখা হচ্ছে না বলে এর মধ্যেই জানানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে সময় মিলছে বলে জানানো হচ্ছে।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে যে এক ধরনের টানাপোড়েন চলছে সেটা স্বীকার করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও। তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে বলে জানানো হয়েছে।

সমস্যার সমাধান করতে হলে সমস্যার অস্তিত্ব অস্বীকার করলে চলবে না এবং টানাপোড়েন দূর করার চেষ্টা করা হবে এবং একটা ওয়ার্কিং রিলেশন (কাজের সম্পর্ক) রাখার চেষ্টা করা হবে বলে জানান মো. তোহিদ হোসেন। তবে সম্পর্কটা মর্যাদা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে হতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রতিবেশি যেহেতু পরিবর্তন হয় না অনেক দ্বিপাক্ষিক বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা হতেই হবে, ভারতেরও কোনও অপশন নেই, আমাদেরও কোনও অপশন নেই, উল্লেখ করেন তিনি।

পারস্পরিক নির্ভরশীলতা এবং বেশ অনেক জায়গায় দুইদিকের স্বার্থের বিষয় রয়েছে, যেসব কারণেই ভারতের সাথে একটা ভালো সম্পর্কের জায়গা ধরে রাখতে আলাপ আলোচনা করতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষক হুমায়ূন কবির।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ

১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ গঠন করা হয়েছিল ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে। জাতিসংঘের প্রধান নীতিনির্ধারণী অংশ এই পরিষদ।

প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সারা বিশ্বের জাতিসংঘের সদস্য সব দেশের নেতারা বৈঠকে বসেন এবং বিভিন্ন বৈশ্বিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশগুলির মাঝে ভোটাভুটিও হয়।

যেমন এবারের অধিবেশনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ফিলিস্তিন। জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য না হয়েও এবারে অধিবেশনে অংশ নিয়েছে ফিলিস্তিন মিশন। এ বছর মে মাসে সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে পূর্নাঙ্গ সদস্য করতে পক্ষে ভোট দিয়েছিল ১৪৩ টি দেশ।

এবারের অধিবেশনে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের যুদ্ধ এবং দখলদারিত্ব বন্ধ নিয়েও ভোট হয়েছে। সেখানে ১৯৩ টি দেশের মধ্যে ১২৪ টি দেশ পক্ষে, ১৪ টি বিপক্ষে ভোট দিয়েছে, ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল ৪৩ টি দেশ।

এই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মধ্য দিয়ে আগামী এক বছরের মধ্যে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বেআইনি দখলদারিত্ব বন্ধে প্রস্তাব পাস হয়েছে।

পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমে বিশ্বের সার্বিক উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা জাতিসংঘের মূল লক্ষ্য। এমন উদ্দেশ্য নিয়ে পরিচালিত হয় বার্ষিক অধিবেশন।

এবারের অধিবেশন শুরু হয়ে গেছে ১০ই সেপ্টেম্বরে। এ অধিবেশনে সংঘাত নিরসন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্য করাসহ ভবিষ্যৎ-কেন্দ্রিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সংস্থাটির একমাত্র শাখা যেখানে ১৯৩টি সদস্য দেশের সবাই প্রতিনিধিত্ব করার এবং সভায় বক্তব্য রাখার সুযোগ পায়। সভার বাইরে নেতাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক সাধারণত বেশি গুরুত্ব বহন করে।

-বিবিসি।

Header Ad
Header Ad

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহিদ রাজিতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। আহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে হরমুজগান প্রদেশের রাজধানী বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত এই বন্দরে ঘটে বিপর্যয়টি।

ইরানের জরুরি সেবাবিভাগের মুখপাত্র বাবাক ইয়াকতেপেরেস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বার্তাসংস্থা আইএলএনএ-কে জানান, একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকেই এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তবে সেগুলোতে কান না দিয়ে সরকারি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।”

সরকারি বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ছোট পরিসরে আগুন লাগার পর তা দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম এবং পরিবেশে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের তীব্রতা দ্রুত বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই প্রবল ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনারগুলোর মধ্যে সালফারজাতীয় রাসায়নিক থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও কনটেইনারগুলোর সুনির্দিষ্ট উপাদান এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, শহিদ রাজি বন্দরটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দরগুলোর একটি। এটি হরমুজ প্রণালির উত্তরে, বন্দর আব্বাস থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এই প্রণালি দিয়েই বিশ্বের মোট উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়, ফলে এ বন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি

জুলাই আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়ার (১৭) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেকের ৬নং রোডের ভাড়া বাসা থেকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই কলেজছাত্রীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকিতে। তিনি গত ১৮ মার্চ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।

‎প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। শনিবার মার্কেট থেকে কিছু কাপড়ও কিনেছেন। রাত আটটায় নিহতের মা ছোট মেয়েকে বাসার পাশেই মাদরাসায় দিয়ে আসতে যান। সেই সুযোগে রাত নয়টার দিকে রুমের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন লামিয়া।

এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান।

‎নিহতের মামা সাইফুল ইসলাম জানান, আমি দোকানে বসা ছিলাম। হঠাৎ ফোনে জানতে পারি, আমার ভাগনি মারা গেছে। আমি দৌঁড়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগনির মরদেহ হাসপাতালে পড়ে আছে। জুলাই আন্দোলনে আমার বোন স্বামীহারা হলো। এখন মেয়েকে হারিয়েছে। এখন আমার ভাগনি চলে গেছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইব। কে বিচার করবে আমাদের।

নিহত কলেজছাত্রীর চাচা বলেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে তার ভাতিজির আত্মহত্যার খবর পান তিনি। এরপর তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান।

আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল চন্দ্র ধর বলেন, শেখেরটেকের একটি বাসা থেকে ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তার মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা জানিয়েছিলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে তার স্বামী গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার শহীদ স্বামীকে দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

ভুক্তভোগীর মা বলেন, ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তার কলেজ শিক্ষার্থী মেয়ে। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী তার মা ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ২০ মার্চ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। সন্ধ্যায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু হয়।

মামলার এজাহারে উপজেলার একটি ইউনিয়নের দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা হওয়ার দিন রাতে এজাহারভুক্ত ১৭ বছর বয়সী কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ২১ মার্চ অন্য আসামিকে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদের যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।

জানা যায়, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শহিদ জসীম উদ্দিনের মেয়ে তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে যাচ্ছিলেন। পথে নলদোয়ানী থেকে অভিযুক্তরা পিছু নেয়। হঠাৎ পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী জলিল মুন্সির বাগানে নিয়ে যায় সাকিব ও সিফাত। একপর্যায়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এমনকি তার নগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।

Header Ad
Header Ad

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিন্ধুর উপনদী ঝিলামে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এর ফলেই হঠাৎ করেই মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো মানুষ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে নদীর পানি হু হু করে বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দুনিয়া নিউজ’ জানায়, ভারত কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়েই শনিবার সকাল থেকে বাড়িয়ে দেয় পানির প্রবাহ। এতে করে অনন্তনাগ অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পানি চাকোঠি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। মসজিদের মাইকে সতর্কতা প্রচার করা হয়, স্থানীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ভারত এ হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রতিক্রিয়ায় একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি।

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদী থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা একে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে বিবেচনা করবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতারাও। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।”

এদিকে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী জানালেন, পানির প্রবাহ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ড্রেজিং করে পানির গতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা