রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

মারুফুল ইসলাম

একগুচ্ছ কবিতা

অগ্নিশপথ

আজ আমার মন ভালো নেই
আজ আমি কারো মুখ দেখব না
আজ আমি কাউকে মুখ দেখাব না
অন্ধকার ঘরে বসে থাকব একা

আজ আমাকে কেউ ডাকতে এসো না
আমি অস্তিত্বে আগুন জ্বেলেছি
আজ আমাকে কেউ প্রবোধ দিও না
আমি অগ্নিমুখ তৃতীয় নয়ন মেলেছি

আমার যে মেয়েটা ছোটবেলায় গরম চা খেতে দিয়ে
ঠোঁটে আর জিভে ছ্যাঁকা খেয়েছিল বলে
আমার সারাটা বুক সাহারা মরুভূমি হয়ে গিয়েছিল
সেই মেয়েটাকে আজ ওরা জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে
অসহ্য অনলে দগ্ধ হয়ে গেছে সূর্য

এ সমাজ আজ জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড
এ সময় লেলিহান নরক

হা জীবন
হা পৃথিবী
হা মহাশূন্য
ও তো ঠিকমতো জানতেই পারল না
বৈশাখি ঝড়ে কৈশোর কতটা উচ্ছ্বল
মুহুরী নদীর জোয়ারে যৌবন কতটা চঞ্চল
থেমে থাকা রাতে থমকে থাকা চাঁদের আলোয়
বেঁচে থাকা কত যে মধুর

না, কোনো অভিযোগ নেই
অভিশাপ নয়
প্রতিটি পোড়ানো প্রাণ বাতাসে মিশিয়ে দিচ্ছে অগ্নিগর্ভ দীর্ঘশ্বাস
ওরা প্রতিশোধ চায়
ওরা প্রতিরোধ চায়
মহাজীবনের অগ্নিশপথ চায়

বিষয়টি রাজনৈতিক

বিষয়টি রাজনৈতিক, বন্ধুগণ
সঙ্গত কারণেই সমাজতাত্ত্বিক
মনস্তাত্ত্বিক
এবং অর্থনৈতিক
বিষয়টি আমাদের আবহমান অন্ধকার দিক
চলুন, এবার এক ঝলক আলো ফেলে দেখা যাক

সোনার বাংলার সুবর্ণচরের
চৌদ্দ বছরের মেয়েটি রাতের আকাশ বাতাস চিরে
চিৎকার করে কাঁদছিল
হ্যাঁ, জানি, ওর মুখ বাঁধা ছিল
চোখ বাঁধা ছিল
হাত বাঁধা ছিল
পা বাঁধা ছিল
শরীর বাঁধা ছিল
প্রাণ জিম্মি ছিল
জীবন বন্দি ছিল
তবু, বন্ধুগণ, আমি নিশ্চিত
ও সর্বোচ্চ আর্ত চিৎকারে কাঁদছিল
কেননা, ওর মন ছিল মুক্ত

ওর মাকে তখন উঠোনে ঠুকরে চলছিল
নয়টা শকুন
ওর মাকে তখন উঠোনে খুবলে যাচ্ছিল
নয়টা জানোয়ার
ওর মাকে তখন উঠোনে দুমড়ে মুচড়ে ফেলছিল নয়টা পিশাচ

নারীটি ধানের শীষ নয়
অমানুষগুলো নৌকা নয়

কিন্তু বিষয়টি রাজনৈতিক
সঙ্গত কারণেই সমাজতাত্ত্বিক
মনস্তাত্ত্বিক
অর্থনৈতিক
এবং বিষয়টি আমাদের আবহমান এক অন্ধকার দিক
আসুন, বন্ধুগণ, অন্তত একটিবার
আমরা নিজেদের ভেতর আলো ফেলে
অনুসন্ধান করি আমাদের আত্মপরিচয়

আমাদের সোনার বাংলায়
আর যেন কখনোই
আর যেন কিছুতেই
সুবর্ণচরের সেই কালরাত নেমে না আসে

নতুন করে পাব বলে : গণহত্যা ১৯৭১

সেই রাত ভেসে যায়নি তবু বুড়িগঙ্গার জলে
নরকের নাভি থেকে অতর্কিত ঘাতক বাতাস এসে
কালান্তক ফুৎকারে নিভিয়ে দিয়েছিল
অগণন অপ্রস্তুত মানব-প্রদীপ
ইতিহাস সাক্ষী
এমন গণহত্যা কোথাও কখনো দেখেনি
জীবনগন্ধী এই গন্ধম-গ্রহ

সংখ্যাতীত চাঁদনি রাতে প্লাবিত প্রাণস্পন্দিত প্রিয় প্রাচীন পৃথিবী
সে-রাতে অসহ্য অবিশ্বাস্যতায় প্রত্যক্ষ করেছিল
পাকিস্তানী হানাদারের হা-মুখ হাবিয়া

ধ্বংসযজ্ঞ আর হত্যাকাণ্ডের তাণ্ডবে বিস্ফোরিত হয়েছিল
প্রেম আর পার্বণের এ-শহর
স্বপ্ন আর সঙ্গীতের এই বিস্তীর্ণ জনপদ-গ্রাম-লোকালয়
প্রজ্ঞা ও মনীষার পীঠস্থান বিশ্ববিদ্যালয়
জ্ঞান আর সংস্কৃতির লীলাকেন্দ্র জগন্নাথ-ইকবাল-এস এম হল
সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী পিলখানা
আইনের ঝাণ্ডাধারী পুলিশলাইন

ছাত্রাবাস-ছাউনি-ব্যারাক-রাজপথ-নিমগ্ন নিবাস
হয়ে উঠেছিল
প্রাগৈতিহাসিক অগ্নিগিরির বিদীর্ণ বক্ষ

জ্বালামুখে কত জ্বলন
লাভাস্রোতে কত যন্ত্রণাদগ্ধ মৃত্যুর দহন
কালের প্রগাঢ় চশমার ভেতর থেকে শূন্যপাপ শিশুচোখে
তাকিয়ে আছেন আজো সেইসব শহীদ সন্ত
ওঁদের গুলিবিদ্ধ হৃদপিণ্ডে কত রক্ত
ওঁদের অপাপবিদ্ধ হৃদয়ে কত প্রেম

আগুন আর রক্তের রঙ কত লাল হতে পারে
মৃত্যু আর কষ্টের রঙ কত নীল হতে পারে
বিভীষিকার রঙ কত কালো হতে পারে
না না করে ওঠে ব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত রঙের খনি

হন্তারক পিশাচ-শোষক
বুলেটে ও বেয়োনেটে ঠেকাতে চেয়েছিল
আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম
বুটের তলায় আর ট্যাংকের চাকায়
নিশ্চিহ্নে পিষে ফেলতে চেয়েছিল
বাঙালি জাতিসত্তা
আর মানবতা
কিন্তু মাথার ওপরে অন্তরীক্ষে অদম্য তর্জনি উদ্যত করে
ধরিত্রীর বিপুল বিস্তারে পর্বতপ্রমাণ দাঁড়িয়েছিলেন
সময়ের অবিসংবাদিত সেই সূর্যসন্তান
আর সাড়ে সাত কোটি অসাম্প্রদায়িক বুকের পাঁজরে আমরা রচনা করেছি
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল জোড়া এই বিজয়-দুর্গ

সেই রাতে পরাজয় মানেনি এই দুর্দম দুর্জয়
বাংলার মাটি, বাংলার জল

নতুন করে পাব বলে : এসো, হে বৈশাখ

সোনার পালঙ্কে শুয়ে আছে ঠাকুরমার ঝুলির কন্যা
বাঁধভাঙা চুলে তার কী বাহার
ঢেউ তোলে রূপকাহিনির উপচানো বন্যা
মেঘের ঘোড়ায় চড়ে আসবে কি ডালিম কুমার
কালবোশেখের উড়ন্ত কেশরে
তীরহারা স্বপ্নের দুরন্ত পারাপার
বেদেনির দীঘল কড়ির জাদুমন্ত্রবলে
গাঙের বাতাস হারিয়েছে পথ
বল পান্থ, কোন দিগন্তে ঠিকানা লিখেছে তােমার
অবিশ্রান্ত দিব্যরথ

এই মৃত্তিকার রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রেম তার
বুনেছে জীবন-বীজ
বাহুবন্ধে অলঙ্কার বিশ্বাসের প্রাচীন তাবিজ
তাকে আমি পাঠ দিই প্রথম ভালোবাসার
ধনধান্যপুষ্পভরা আমাদের সোনার বাংলার

এখানে চাঁদের বুড়ি থুত্থুড়ি চরকায় সুতো কেটে যায়
জ্যোৎস্নার সাগর ফুলে-ফেঁপে ওঠে
উঠোনে উঠোনে মাদুরের বিছানায়
শীতলপাটির কারুকার্যে বর্ণময় নিয়মিত নিদ্রার আবেশ
অজস্র প্রাণের স্পর্শে রঙধনু হয়ে
জেগে থাকে এই বাংলাদেশ

নদীর ভেতরে নদী
তার আকাশে আকাশে পালতোলা পাখি
নৌকার গলুই ঢেউয়ে ঢেউয়ে বেঁধে রাখে রাখি
কাকে বলে প্রেম আর কার নাম প্রীতি
এস হে বিশ্ববাসী, নিয়মনীতি পাশে রেখে
দেখে যাও সোঁদাগন্ধময় রীতি

নিমেষে আর্য-অনার্য ভুলে
বাউল বাদাম তুলে
নিজেকেই ছেড়ে দাও নিজে
একতারার একাকী তারে দেখে নাও
কী করে প্রাচীন পংক্তিমালা বৃষ্টিজলে ভিজে
আমি তার নিরুদ্বিগ্ন আঁচলের প্রান্ত ছুঁয়ে যাই
ইতিহাসের উদ্বিগ্ন আড়ালে হারাই
আহা এই চিরচেনা আকুল আখড়ায়
সকলেই কী আশ্চর্য ঠাকুরের সঙ্গীত শোনায়

কে কবে শুনেছে বল ষড়ঋতু মুছে গেছে
নিসর্গের নির্লিপ্ত নয়নে
কে কবে দেখেছে বল জাফলং হারিয়েছে
শূন্যপ্রাণ পাথরের বনে
জল তার বেহালার আনন্দ ও বেদনার
সুর খোঁজে প্রতিটি পার্বনে
কালের তুলি বর্ণালি জীবনের ছবি আঁকে
অপরূপ রূপের অঙ্গনে

এদেশের নামে প্রেম, রঙে প্রেম, প্রাণে প্রেম, মনে প্রেম
মানচিত্রে প্রেমপূর্ণ ছবি
কাহ্নপা চণ্ডীদাস মধুসূদন লালন হাছন
রবীন্দ্রনাথ নজরুল জীবনানন্দ জসীম করিম
এ-মাটির প্রেমমগ্ন কবি

ঘুম ভেঙে শুনি সেই চিরপ্রেমময় ডাক
এসো, এসো, এসো, হে বৈশাখ

১০

একুশে ফেব্রুয়ারির পুঁথি

 

শোনো শোনো সবাই
শোনো শোনো সবাই মনেপ্রাণে শোনো হৃদয় দিয়ে
বলছি কথা বাংলাদেশ আর বাংলা ভাষা নিয়ে

আজকে একুশ তারিখ
আজকে একুশ তারিখ ফেব্রুয়ারির নিশ্চয় মনে আছে
চেয়ে দেখো কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে গাছে

আছে শিমুল পলাশ
আছে শিমুল পলাশ চারদিকে ওই বাহারে বিস্তারে
সবুজ রঙের মাঝে লালের রঙ যে নজর কাড়ে

তারও আগে বলি
তারও আগে বলি বঙ্গভূমির পথে পথে চলি
সূর্যসন্তানগণের নামে দেই শ্রদ্ধাঞ্জলি

বাংলা মায়ের ছেলে
বাংলা মায়ের ছেলে মায়ের ভাষার অধিকারের তরে
উনিশশো বায়ান্ন সনটা দেখো মনে করে

আহা সালাম জব্বার
আহা সালাম জব্বার রফিক বরকত থোকা থোকা নামে
চেয়ে দেখো ছুঁয়ে দেখো বুকটা কেমন কাঁপে

ওরা চেয়েছিল
ওরা চেয়েছিল মাতৃভাষাই হবে রাষ্ট্রভাষা
ধারাজলে মেটাক চাতক আজন্ম পিপাসা

কিন্তু পাকিস্তানি
কিন্তু পাকিস্তানি দুষ্ট শাসক বাংলা ভাষার বৈরী
তাতে কি ভাই আমরা সবাই জীবন দিতে তৈরি

মায়ের ভাষার জন্য
মায়ের ভাষার জন্য বাঙালিরা জীবন দিয়ে ধন্য
একুশে ফেব্রুয়ারি তাই আজও জনারণ্য

দেখো নয়ন মেলে
দেখো নয়ন মেলে দিকে দিকে বাংলা ভাষার নামে
লালসবুজের চিঠি আসে বাংলাদেশের খামে

আজকে বিশ্বব্যাপী
আজকে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিনে
আটশো কোটি মানুষ বন্দি ভাষার রক্তঋণে

দেখো আপন মনে
দেখো আপন মনে গৃহকোণে সোনাপাখির কাছে
বাংলা মায়ের বাংলা বোলে কত মধু আছে

আমরা জগতজুড়ে
আমরা জগতজুড়ে বেড়াই ঘুরে বাংলা ভাষা নিয়ে
এই ভাষাটা পেয়েছি এই বুকের রক্ত দিয়ে

তাইতো ভালোবাসি
তাইতো ভালোবাসি প্রাণের চেয়ে বাংলা ভাষা ভাইরে
এমন মধুর মুখের বুলি ভূভারতে নাইরে

মাগো তোমার বুকে
মাগো তোমার বুকে আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি
মায়ের ভাষায় তাই গেয়ে যাই অন্তরা সঞ্চারী

বাজাই জাদুর বাঁশি
বাজাই জাদুর বাঁশি সবাই মিলে সোনার বাংলাদেশে
এই মাটিতেই জীবন মরণ বাংলা ভালোবেসে

আমার ভাইয়ের রক্তে
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
আমি কি ভুলিতে পারি

 

Header Ad
Header Ad

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহিদ রাজিতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। আহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে হরমুজগান প্রদেশের রাজধানী বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত এই বন্দরে ঘটে বিপর্যয়টি।

ইরানের জরুরি সেবাবিভাগের মুখপাত্র বাবাক ইয়াকতেপেরেস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বার্তাসংস্থা আইএলএনএ-কে জানান, একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকেই এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তবে সেগুলোতে কান না দিয়ে সরকারি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।”

সরকারি বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ছোট পরিসরে আগুন লাগার পর তা দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম এবং পরিবেশে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের তীব্রতা দ্রুত বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই প্রবল ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনারগুলোর মধ্যে সালফারজাতীয় রাসায়নিক থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও কনটেইনারগুলোর সুনির্দিষ্ট উপাদান এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, শহিদ রাজি বন্দরটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দরগুলোর একটি। এটি হরমুজ প্রণালির উত্তরে, বন্দর আব্বাস থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এই প্রণালি দিয়েই বিশ্বের মোট উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়, ফলে এ বন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি

জুলাই আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়ার (১৭) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেকের ৬নং রোডের ভাড়া বাসা থেকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই কলেজছাত্রীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকিতে। তিনি গত ১৮ মার্চ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।

‎প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। শনিবার মার্কেট থেকে কিছু কাপড়ও কিনেছেন। রাত আটটায় নিহতের মা ছোট মেয়েকে বাসার পাশেই মাদরাসায় দিয়ে আসতে যান। সেই সুযোগে রাত নয়টার দিকে রুমের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন লামিয়া।

এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান।

‎নিহতের মামা সাইফুল ইসলাম জানান, আমি দোকানে বসা ছিলাম। হঠাৎ ফোনে জানতে পারি, আমার ভাগনি মারা গেছে। আমি দৌঁড়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগনির মরদেহ হাসপাতালে পড়ে আছে। জুলাই আন্দোলনে আমার বোন স্বামীহারা হলো। এখন মেয়েকে হারিয়েছে। এখন আমার ভাগনি চলে গেছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইব। কে বিচার করবে আমাদের।

নিহত কলেজছাত্রীর চাচা বলেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে তার ভাতিজির আত্মহত্যার খবর পান তিনি। এরপর তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান।

আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল চন্দ্র ধর বলেন, শেখেরটেকের একটি বাসা থেকে ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তার মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা জানিয়েছিলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে তার স্বামী গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার শহীদ স্বামীকে দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

ভুক্তভোগীর মা বলেন, ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তার কলেজ শিক্ষার্থী মেয়ে। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী তার মা ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ২০ মার্চ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। সন্ধ্যায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু হয়।

মামলার এজাহারে উপজেলার একটি ইউনিয়নের দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা হওয়ার দিন রাতে এজাহারভুক্ত ১৭ বছর বয়সী কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ২১ মার্চ অন্য আসামিকে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদের যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।

জানা যায়, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শহিদ জসীম উদ্দিনের মেয়ে তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে যাচ্ছিলেন। পথে নলদোয়ানী থেকে অভিযুক্তরা পিছু নেয়। হঠাৎ পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী জলিল মুন্সির বাগানে নিয়ে যায় সাকিব ও সিফাত। একপর্যায়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এমনকি তার নগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।

Header Ad
Header Ad

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিন্ধুর উপনদী ঝিলামে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এর ফলেই হঠাৎ করেই মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো মানুষ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে নদীর পানি হু হু করে বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দুনিয়া নিউজ’ জানায়, ভারত কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়েই শনিবার সকাল থেকে বাড়িয়ে দেয় পানির প্রবাহ। এতে করে অনন্তনাগ অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পানি চাকোঠি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। মসজিদের মাইকে সতর্কতা প্রচার করা হয়, স্থানীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ভারত এ হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রতিক্রিয়ায় একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি।

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদী থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা একে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে বিবেচনা করবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতারাও। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।”

এদিকে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী জানালেন, পানির প্রবাহ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ড্রেজিং করে পানির গতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা