মিয়ানমারের বেসামরিক লোকজনের কাছে মানবিক করিডর (হিউম্যান পেসেজ) দেওয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের শেখ বাজার এলাকায় গণসংযোগকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গাজায় এখন যুদ্ধ চলছে। সেখানে যাওয়া যায় না। কিন্তু জাতিসংঘ থেকে সেখানে খাবার, ওষুধ পাঠাতে হলে জর্ডান থেকে অথবা মিসর থেকে রাস্তা তৈরি করে, ওদিক দিয়ে গাজায় পাঠানো হচ্ছে। ভালো কথা, মানবিকতার দরকার আছে। আমার কথা হচ্ছে আজকে বাংলাদেশকে ওই জায়গায় পৌঁছাতে হলো যে, বাংলাদেশকে একটা হিউম্যান পেসেজ (মানবিক করিডর) দিতে হচ্ছে। এটা অনেক বড় সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা জড়িত আছে। সরকারের উচিত ছিল এ বিষয়টা নিয়ে সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলা। তারা এটা না করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে হিউম্যান পেসেজ (মানবিক করিডর) দিচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, জাতিগতভাবে মানুষকে সাহায্য করার ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এটা হতে হবে সব মানুষের সমর্থনে। আমরা আরেকটা গাজায় পরিণত হতে চাই না। আমরা যুদ্ধের মধ্যে জড়াতে চাই না। একে তো রোহিঙ্গাকে নিয়ে আমরা সমস্যায় আছি। আবার মানবিক করিডর দিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হোক তা চাই না। সেগুলো আলোচনা করে করিডর দেওয়া উচিত ছিল বলে আমরা মনে করি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ১৫ বছর আমরা কথা বলারও সুযোগ পাইনি। মিটিং-মিছিল করতে পারিনি। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পুরেছে, নির্যাতন চালানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। এখন সেই অধিকার ফেরত আনতে আমরা আন্দোলন করছি। সরকার যদি সত্যিই নির্বাচনের ইচ্ছা রাখে, স্পষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে।
তিনি বলেন, এই ১৫ বছরে আমাদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমাদের ভাইয়ের হাত পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়েছে। বহুবার আমাদের লোকজনকে কারাবরণ করতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে, গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করেছে।
অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ, জগন্নাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, নার্গুন ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান পয়গাম আলীসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।