রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন: লাভ-ক্ষতির রাজনীতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলসমূহ

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন, বিশেষত সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের বিষয়টি ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক আলোচনায় উঠে এসেছে। আনুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে ইসলামী দলসহ বিভিন্ন ছোট-বড় রাজনৈতিক দল থাকলেও বিএনপি এর বিরোধিতায় অটল রয়েছে। এ বিষয়ে দলগুলোর ভিন্নমত থাকার পাশাপাশি তাদের নিজ নিজ ভোটের কৌশল ও লাভ-ক্ষতির হিসাব কষছেন অনেকে। প্রশ্ন হলো, নতুন এই পদ্ধতিতে কোন দল লাভবান হবে আর কোন দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে?

আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি কী?
বর্তমানে বাংলাদেশে ৩০০ আসনের জন্য ভোটাররা সরাসরি প্রার্থী নির্বাচন করেন। কিন্তু সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে একটি দল মোট ভোটের অনুপাতে আসন পাবে। অর্থাৎ, জনগণের সরাসরি ভোটে কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হবেন না। যদি একটি দল ৪০ শতাংশ ভোট পায়, তবে তারা সংসদে ৩০০ আসনের মধ্যে ৪০ শতাংশ আসন পাবে। অনেকের মতে, এটি গণতন্ত্রের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটাবে, কিন্তু তাতে বিজয়ী দলের আসন সংখ্যা কমে আসবে এবং ছোট দলগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি আসন পাবে।

আওয়ামী লীগ-বিএনপির সম্ভাব্য ক্ষতি: পাশ্চাত্যের উদাহরণে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন বড় দলগুলোর আসন সংখ্যা কমায়। বাংলাদেশের বড় দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রচলিত নির্বাচনী পদ্ধতিতে ভোটের তুলনায় বেশি আসন পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০১ সালে বিএনপি ৪০.৮৬ শতাংশ ভোট পেয়ে সংসদে ১৯৩টি আসন পেয়েছিল। কিন্তু সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে তাদের আসন সংখ্যা ১২৩-এ নেমে আসত, এবং আওয়ামী লীগ প্রায় সমান আসন পেত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তন বড় দলগুলোর জন্য এককভাবে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কঠিন করে তুলবে।

জামায়াত ও ইসলামি দলগুলোর আশা: সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির সবচেয়ে জোরালো সমর্থন এসেছে জামায়াতে ইসলামী থেকে। দলটির আমির ড. শফিকুর রহমান বলেন, "সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন দেশের জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে। এটি কোনো নির্দিষ্ট দলের জন্য নয় বরং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।" অনেকে মনে করছেন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামি দলগুলোর ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে, যা তাদের রাজনৈতিক অবস্থান সুদৃঢ় করতে পারে।

ছোট দলগুলোর চ্যালেঞ্জ ও সুবিধা: অনেক ছোট দল, যেমন সিপিবি, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি এবং গণঅধিকার পরিষদ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের সমর্থন দিচ্ছে। ছোট দলগুলোর আঞ্চলিক প্রভাব থাকলেও জাতীয় পর্যায়ে ভোট কম হওয়ায় বর্তমান পদ্ধতিতে তাদের সফলতা কম। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, “সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। এতে সরকার এককভাবে কর্তৃত্বপরায়ণ হতে পারবে না।”

বিএনপির বিরোধিতার কারণ: বিএনপি বলছে, বাংলাদেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি নেই। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চালু করতে হলে পুরো রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন যে, এর মাধ্যমে দেশের শাসনক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া জটিল হয়ে উঠতে পারে এবং উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ এবং অন্যান্য দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি: আওয়ামী লীগ তাদের ভোট ব্যাংক নিয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকলেও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে অংশ নিলে লাভ-ক্ষতির হিসাব মেলাতে হবে। গণ অধিকার পরিষদ এবং জামায়াতের মতানুসারে, আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাই উত্তম। তারা মনে করেন, দেশের বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক সমাধান হতে পারে।

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ স্পষ্ট। নতুন নির্বাচন পদ্ধতি চালু হলে ছোট দলগুলো সুবিধা পাবে বলে ধারণা করা হলেও বিএনপির মতো দল এর বিরোধিতা করছে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে মতভেদ থাকা সত্ত্বেও জনগণের প্রকৃত ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের পক্ষের দাবি বেশ শক্তিশালী। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ প্রস্তাব বাস্তবায়নে কতটা আগ্রহী, সেটি এখনও নিশ্চিত নয়। সূত্র: বিবিসি বাংলা

Header Ad
Header Ad

দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু

মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও তুহিন ফারাবি। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে দুদকের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, “দুই উপদেষ্টার এপিএস ও পিও- যাদের বিষয়ে আপনারা জানতে চেয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।”

এর আগে সকালে ‘যুব অধিকার পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন এই দুই কর্মকর্তার দুর্নীতির তদন্ত দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে মিছিল করে দুদক কার্যালয়ে যায়। পরে তারা একটি স্মারকলিপি জমা দেয়।

দুদক মহাপরিচালক আরও জানান, বিষয়টি ইতোমধ্যেই দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের নজরে এসেছে এবং এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি আশ্বাস দেন, “শিগগিরই তদন্তের অগ্রগতি জানতে পারবেন।”

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যদিও উপদেষ্টা ৮ এপ্রিলই তাকে অব্যাহতির নির্দেশ দেন। তার আগে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের পিও ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবিকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

 

Header Ad
Header Ad

নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত

জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। ছবি: সংগৃহীত

আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ লক্ষ্যে বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সহযোগিতা চেয়েছে দলটি।

রোববার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এ তথ্য জানান জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তাহের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে প্রধান উপদেষ্টার নির্ধারিত টাইমলাইনের ওপরই জামায়াত আস্থা রাখবে।’ তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পরিদর্শক দল পাঠানোর অনুরোধও করেছে জামায়াত।

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আমরা তাদের জানিয়েছি, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে প্রচুর গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়। এ শিল্পের প্রসারের জন্য নির্দিষ্ট একটি এলাকা নির্ধারণ করে সেখানে আরও বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছি।’

নারীদের অধিকার ও জঙ্গিবাদ দমনে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা ইইউ প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেছি। নারীদের অংশগ্রহণের দিক থেকে জামায়াতে ৪৩ শতাংশ নারী সদস্য রয়েছে, যা অন্য যেকোনো দলের তুলনায় বেশি।’

তিনি নারী সংস্কার কমিশনের পতিতাদের শ্রমিক স্বীকৃতির বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, ‘এটি নারীদের জন্য চরম অপমানজনক।’

Header Ad
Header Ad

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মো. জাফর আলম। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মো. জাফর আলমকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি জানান, বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে ধানমণ্ডি এলাকা থেকে মো. জাফর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে ঠিক কী অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু
নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত
কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ
উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত
ছেলে খুঁজে পাচ্ছি না, একজন জীবনসঙ্গী দরকার: মিলা
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধে ভারতের ১.১৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির শঙ্কা
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
উত্তাল ইউআইইউ ক্যাম্পাস, ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ
এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬০৮
ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছে: আলী রীয়াজ
মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান: ‍শেহবাজ শরীফ
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২