সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ৯০৭ কোটি টাকার কারসাজি !

ছবি: সংগৃহীত

ভবঘুরেদের জন্য সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র বাড়াতে ভবন নির্মাণের নামে ৯০৭ কোটি টাকার প্রকল্প নিতে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে। জানা যায়, জনবলের অভাবে ভবঘুরেদের জন্য সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে যথাযথ সেবা দিতে না পারলেও ভবন নির্মাণে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। খবর প্রথম আলোর ।

মন্ত্রনালয়ের নজর এড়াতে ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রের নতুন ভবন নির্মাণে ৯০৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজকে ৮১টি ভাগে ভাগ করে অনুমোদন করাতে ‘তদবির’ করছে দপ্তরটি। যাতে এই প্রকল্পের কেনাকাটায় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন না লাগে। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ’ শীর্ষক নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্মাণ ও পূর্ত কাজে ১০০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে যেকোনো কেনাকাটার প্রস্তাব সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করতে হবে। এই কমিটির সভাপতি অর্থমন্ত্রী। এতে মোট ১৩ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী থাকেন। সচিব থাকেন ৯ জন।

সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা বলছে, সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, অনিয়ম রোধ করা, স্বজনপ্রীতি ঠেকানোসহ নজরদারি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করাই সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাজ। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র বলছে, মন্ত্রিসভা কমিটিকে এড়াতেই প্রকল্পটির কেনাকাটার ৮১টি প্যাকেজ করা হয়েছে।

সরকারি ক্রয়বিধির (পিপিআর) ১৭ নম্বর ধারায় বলা আছে, ‘ক্রয়কারী উহার ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় কোনো নির্দিষ্ট ক্রয় পদ্ধতি বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা পরিহারের উদ্দেশে সাধারণত একটি প্রকল্প বা কর্মসূচির কোনো অংশ নিম্নতর মূল্যমানের একাধিক প্যাকেজে বিভক্ত করিবে না।’

অবশ্য ভৌগোলিক অবস্থা বিবেচনায় বাস্তবায়নের সুবিধার জন্য একাধিক প্যাকেজ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে ক্রয়বিধিতে। তবে সরকারি ক্রয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাঁচটি এলাকার ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য ৮১টি প্যাকেজ করা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।

সমাজসেবার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ঘেঁটে দেখা যায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পে ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে কাজের ধরন প্রায় এক হলেও সেসব কাজ ছোট ছোট ৮১টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। কোনোটি ১০ কোটি, কোনোটি ২০ কোটি টাকার প্যাকেজ। সর্বোচ্চ একটি প্যাকেজে ধরা হয়েছে প্রায় ৫৮ কোটি টাকা।

নথিপত্র বলছে, ৭৪টি প্যাকেজ ‘ক্রয় অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে প্রকল্প পরিচালককে রাখা হয়েছে। ছয়টি হোস্টেল ভবন নির্মাণসহ বাকি সাতটি প্যাকেজ অনুমোদনকারী হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে রাখা হয়েছে।

নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের আসবাব কিনতে প্রায় তিন কোটি টাকা ও পুবাইলের জন্য প্রায় সাড়ে চার কোটি, ময়মনসিংহের জন্য তিন কোটি, নারায়ণগঞ্জের জন্য প্রায় চার কোটি, মিরপুরের জন্য দুই কোটি এবং মানিকগঞ্জের জন্য দুই কোটি টাকা আলাদা করে ব্যয় ধরা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণপূর্ত অধিদপ্তরের একজন নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, চাইলে আসবাব কেনার কাজ একসঙ্গে করা যেত।

একইভাবে বিছানাপত্র, ক্রীড়াসামগ্রী, যন্ত্রপাতি, বিদ্যুতের উপকেন্দ্র (সাবস্টেশন) নির্মাণ, লিফট, অস্থায়ী ছাউনি নির্মাণ ও একাডেমিক ব্লক স্থাপনে আলাদা করে প্যাকেজ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পে ছোট ছোট প্যাকেজে কাজ করার কৌশল বিষয়ে জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল বলেন, বিষয়টি তিনি খোঁজ নেবেন। এ ধরনের কিছু হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেবেন।

সমাজসেবার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে কাজ করাতেই নির্মাণকাজ গণপূর্ত অধিদপ্তরকে না দিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তর ছোট ছোট ভাগে আগেও প্রকল্প নিয়েছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের নামে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিকে (একনেক) এড়িয়ে নেওয়া এসব প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গত বছরের আগস্টে ছয়টি প্রকল্পে সংবাদ মাধ্যম প্রথম আলোর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম হয়েছে। আর কাজ পেয়েছে সরকারের প্রভাবশালীদের ‘খাতিরের’ ব্যক্তিদের সংস্থা। ওই সব প্রকল্প তখন ‘খাতিরের প্রকল্প’ নামে পরিচিতি পায়।

এদিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, আশ্রয়কেন্দ্রে নতুন ভবন করা দরকার। তবে প্রকল্প নিতে হবে স্বচ্ছভাবে।

সাধারণত সরকারি ভবন নির্মাণের মতো পূর্তকাজ করে থাকে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তাদের সে বিষয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু সমাজসেবা ভবন নির্মাণ করাতে চাইছে তৃতীয় পক্ষ, অর্থাৎ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে। তারা কেন গণপূর্তকে বাদ দিয়ে ভবন নির্মাণের প্রকল্প নিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

সমাজসেবার প্রকল্পটি এখন পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। কমিশন সূত্র বলছে, তদবির থাকলেও কমিশনের কোনো কোনো কর্মকর্তা এভাবে প্রকল্পটির অনুমোদন দিতে অনীহা দেখাচ্ছেন।

সরকারি কেনাকাটার প্রস্তাব মূল্যায়নকারী সংস্থা সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) সাবেক মহাপরিচালক ফজলুল করীম বলেন, একই ধরনের কাজে আলাদা আলাদা প্যাকেজ করার অর্থ এখানে কোনো দুরভিসন্ধি আছে। পছন্দের কাউকে কাজ পাইয়ে দিতে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনা থেকে সরে আসা উচিত।

৯০৭ কোটি টাকার প্রকল্প

ভবঘুরে ও ভিক্ষায় নিয়োজিত মানুষদের সরকারি তত্ত্বাবধানে রেখে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য উপায়ে সমাজে পুনর্বাসিত করার চেষ্টাটি পুরোনো। এ জন্য ১৯৪৩ সালে করা হয় ভবঘুরে আইন। নতুন করে ২০১১ সালে সরকার ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন করে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীন গাজীপুরে দুটি এবং নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও রাজধানীর মিরপুরে একটি করে দেশে মোট ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে চারটি নির্মাণ করা হয় ১৯৭৭ সালে। দুটি আরও আগে, ১৯৬১ সালে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ভবঘুরে, ছিন্নমূল মানুষ ও ভিক্ষুকদের আশ্রয় দেওয়া হয়। তবে ভবনগুলো জরাজীর্ণ।

এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ভবন নির্মাণে ‘বিদ্যমান ছয়টি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রথম পাঠানো হয় গত বছরের জুনে। তার পর থেকে প্রকল্পটি নিয়ে প্রক্রিয়াগত কাজ চলছে।

সেবা নেই আশ্রয়কেন্দ্রে

সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে ১ হাজার ৯০০টি আসন রয়েছে। এসব কেন্দ্রে আছেন ৯০৯ নিবাসী। মানে হলো, এখন যত আসন আছে, সেখানেই লোক থাকে না। পাশাপাশি জনবলের সংকট প্রকট।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল বলেন, জনবলের সংকটের বিষয়টি তিনি জানেন। সেই কারণে নতুন প্রকল্প নেওয়ার পাশাপাশি জনবল নিয়োগের ওপর জোর দিচ্ছেন তাঁরা। তিনি আরও বলেন, মনে রাখতে হবে রাজস্ব খাতে জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়াটা বেশ দীর্ঘ। ৪৫৮ জনবল নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা আছে, ভবঘুরে ব্যক্তিদের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা প্রদান, ভরণপোষণ, শিক্ষা, বৃত্তিমূলক ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান, শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানবিক উৎকর্ষ সাধন, কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে মানসিকতার সংশোধন ও উন্নয়ন; স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, সমাজে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা—এসব তাদের লক্ষ্য।

এসব কাজ কেমন চলছে, তা জানতে ৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুর-১ নম্বরে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, একটি ভবনের নিচতলায় চার বছরের একটি শিশুকে আশ্রয়কেন্দ্রের নিবাসী আরেক শিশু (৯) দুপুরের খাবার খাওয়াচ্ছে। যদিও শিশু দুটির মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। একটি শিশু বাক্‌প্রতিবন্ধী। তার পরিচর্যায় কোনো পরিচর্যাকর্মী দেখা গেল না।

জানা গেল, ৩ ফেব্রুয়ারি মা-বাবার সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে চার বছরের শিশুটি রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে হারিয়ে যায়। পুলিশ খোঁজাখুঁজি করে অভিভাবককে না পেয়ে তাকে মিরপুরে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুটিকে আজিমপুরে ছোটমণি নিবাসে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

৫ ফেব্রুয়ারি আশ্রয়কেন্দ্রের তৃতীয় তলায় গিয়ে দেখা গেল, সেখানে বিভিন্ন বয়সী প্রায় ৩০ জন একসঙ্গে খাবার খাচ্ছেন। সেখানে কোনো পরিচর্যাকর্মী নেই। একজনের শরীরে মারধরের চিহ্ন দেখা গেল। তাঁকে চিকিৎসক দেখানো হয়নি। সেখানে ভবঘুরেদের দেখাশোনায় ১০টি প্রহরীর পদ থাকলেও কোনো প্রহরী কর্মরত নেই। একজন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেটি খালি। প্রশিক্ষণ, কাউন্সেলিং—এসব দূরের কথা।

মিরপুরের আশ্রয়কেন্দ্রটিতে আসন আছে ২০০টি। নিবাসী রয়েছেন ৫৬ জন। কেন্দ্রের তথ্যমতে, ওই কেন্দ্রে অনুমোদিত পদ ৩০টি। এখন কর্মরত আছেন ১২ জন। তাই তাঁরা সেবা দিতে পারছেন না।

মিরপুর সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক, পরিচর্যাকারী না থাকায় নিবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়। ১০ জন পরিচর্যাকারী চাওয়া হয়েছে। এখনো পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, শুধু মিরপুর নয়, সব সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রেই বেশির ভাগ পদ শূন্য।

‘ভাগ-বাঁটোয়ারার নকশা’

দেশের কিছু কিছু সরকারি সংস্থার তৈরি করা ভবন নির্মাণের পর ফেলে রাখা হয়েছে। কারণ, সেগুলো জনবল ও অন্যান্য কারণে ব্যবহার হচ্ছে না। যেমন মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের প্রশিক্ষণের জন্য গত ছয় বছরে দেশের ১৪ জেলায় ১৫টি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) ভবন নির্মাণ করেছে সরকার। কিন্তু প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় ভবনগুলো খালি পড়ে আছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভবন করলে কর্মকর্তারা লাভবান হন। পণ্য ও উপকরণ কেনাকাটায় নানা ধরনের কমিশন বাণিজ্য হয়। ঠিকাদারের ব্যবসা হয়। সে কারণে ভবন নির্মাণেই আগ্রহ বেশি। সমাজসেবা ভবন নির্মাণের আগ্রহই শুধু দেখাচ্ছে না, প্রকল্প নিচ্ছে কৌশল করে।

সমাজসেবার নতুন প্রকল্পটির বিষয়ে জানিয়ে মতামত জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটা স্পষ্ট যে প্রভাবশালী ব্যক্তি পারস্পরিক যোগসাজশ করে ভাগ-বাঁটোয়ারার নকশা করছে। দুর্নীতিপরায়ণরা নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছেন। তিনি বলেন, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতির কথা বলছে। কর্তৃপক্ষকে সমাজসেবার প্রকল্পটি নিয়ে খতিয়ে দেখতে হবে।

 

সংবাদ সূত্র: প্রথম আলো

 

Header Ad
Header Ad

বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন—জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল—আগামী ৯ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে বিভাগীয় পর্যায়ে সেমিনার ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না।

তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় তিন সংগঠন সম্মিলিতভাবে ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে ৪টি বৃহত্তর অঞ্চলে ভাগ করে এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। উদ্দেশ্য হলো—তরুণদের ক্ষমতায়ন, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং একটি আধুনিক, মানবিক বাংলাদেশ নির্মাণে তরুণ প্রজন্মের মতামত ও চিন্তা সংগ্রহ করা।

প্রথম দিন: "তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ" শীর্ষক সেমিনার।
দ্বিতীয় দিন: "তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ"।

সেমিনারে তরুণ প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, চিন্তাবিদ ও উদ্যোক্তারা কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রযুক্তি, পরিবেশ ও রাজনৈতিক অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন। এ কর্মসূচি বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা ও তারেক রহমানের রাজনৈতিক দর্শনের আলোকে পরিচালিত হবে।

চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগ:
▪ ৯ মে — কর্মসংস্থান ও শিল্পায়ন নিয়ে সেমিনার
▪ ১০ মে — তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

খুলনা ও বরিশাল বিভাগ:
▪ ১৬ মে — শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে সেমিনার
▪ ১৭ মে — তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ:
▪ ২৩ মে — কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে সেমিনার
▪ ২৪ মে — তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ:
▪ ২৭ মে — তরুণদের অর্থনৈতিক মুক্তি ও রাজনৈতিক ভাবনা নিয়ে সেমিনার
▪ ২৮ মে — তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

মোনায়েম মুন্না বলেন, এই কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে তরুণদের প্রত্যাশা, মতামত ও ভাবনাকে রাজনৈতিক নীতিতে যুক্ত করে একটি জনমুখী, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনের পথ তৈরি করবে বিএনপি।

Header Ad
Header Ad

পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

দেশের পাঁচটি জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার ও সোমবার (২৭ ও ২৮ এপ্রিল) দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় চারজন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে তিনজন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও মদনে দুজন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন এবং চাঁদপুরের কচুয়ায় একজন প্রাণ হারিয়েছেন।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া এলাকায় ধান কাটতে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বজ্রপাতে দুজন কৃষক নিহত হন। নিহতরা হলেন নিখিল দেবনাথ (৫৮) ও জুয়েল ভূঁইয়া (৩০)।

একই জেলার বরুড়া উপজেলার খোসবাস উত্তর ইউনিয়নের পয়েলগচ্ছ গ্রামে দুপুর ১২টার দিকে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় বজ্রপাতে মারা যায় দুই কিশোর—মোহাম্মদ জিহাদ (১৪) ও মো. ফাহাদ (১৩)। এ সময় আবু সুফিয়ান (সাড়ে ৭) নামের একটি শিশু আহত হয় এবং তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে খয়েরপুর আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের হাওরে ধান কাটার সময় সকালে বজ্রপাতে প্রাণ হারান দুই কৃষক—ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৫)। একই সময়ে মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে ধানের খড় শুকাতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন ফুলেছা বেগম (৬৫) নামের এক নারী।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধনুন্দ গ্রামে রবিবার রাত ১০টার দিকে বজ্রপাতে আহত হয়ে পরে হাসপাতালে মারা যান দিদারুল ইসলাম (২৮)। তিনি একটি ইফতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন।
আজ সকাল ৭টার দিকে মদন উপজেলার তিয়োশ্রী গ্রামে মাদ্রাসাগামী শিশু মো. আরাফাত (১০) বজ্রপাতে মারা যায়।

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান রিমন তালুকদার। তিনি শাল্লা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার নাহারা গ্রামে সকালে বজ্রপাতের বিকট শব্দে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান বিশাখা রানী (৩৫)। তিনি কৃষক হরিপদ সরকারের স্ত্রী। চিকিৎসক জানান, বজ্রপাতের সরাসরি আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না, শব্দের প্রভাবে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

 

Header Ad
Header Ad

জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম

মডেল মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন মডেল মেঘনা আলম।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুরের আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার অভিযোগপত্র পর্যালোচনা এবং মেঘনা আলমের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।

এর আগে গত ১০ এপ্রিল মডেল মেঘনা আলমকে ডিটেনশন আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে আটক করে আদালতে হাজির করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর আদালতে তাকে আটক রাখার আবেদন করলে সেটি মঞ্জুর হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, মেঘনা আলম ও দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জন মিলে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। এই চক্রটি বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের ব্যবহার করে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিক ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনে উৎসাহিত করত। এরপর এসব সম্পর্কের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে ভিকটিমদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হতো।

 

মডেল মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি দেওয়ান সমির 'কাওয়ালি গ্রুপ' নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং 'সানজানা ইন্টারন্যাশনাল' নামে একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক। এর আগে তার 'মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড' নামের একটি প্রতিষ্ঠান ছিল।

চক্রটি 'ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর' নিয়োগের নামে সুন্দরী ও আকর্ষণীয় মেয়েদের ব্যবহার করে সহজে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছে যাতায়াতের সুযোগ তৈরি করত। উদ্দেশ্য ছিল ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বড় অঙ্কের চাঁদা আদায় এবং দেওয়ান সমিরের ব্যক্তিগত ব্যবসাকে লাভজনক করা।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার